সুনামগঞ্জ ১১:৩১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বোরো ধান সংগ্রহে মিলার ও খাদ‍্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা সুনামগঞ্জে বোরো সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্র বৃদ্ধির দাবি বিএনপির সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ তাহিরপুরে ট্রাক উল্টে প্রাণ গেল চালকের ঝড়ে উড়ে গেল ভূমিহীন পরিবারের ঘর, নেই মাথা গোঁজার ঠাঁই ট্রাইবেকারে জিতে থ্রি ব্রাদার্স স্পোর্টিং ক্লাব ফাইনালে শান্তিগঞ্জে যুবলীগ নেতা শহীদ মিয়া গ্রেফতার দোয়ারায় সুরমা ইউনিয়নে উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শন ফ্যাসিস্টের পতন হলেও বিএনপিকে নিয়ে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে : মিজান চৌধুরী তাহিরপুরে ইভটিজিংয়ের শিকার এসএসসি পরীক্ষার্থী মাথা ও হাতে আঘাত পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি

মিরাজ-আফিফের রেকর্ড জুটিতে বাংলাদেশের জয়

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:৩২:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২ ১৯৬ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আমার সুনামগঞ্জ ডেস্কঃ

টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে নতুন মহাকাব্য লিখলেন আফিফ হোসেন ও মেহেদী হাসান মিরাজ। বুক চিতিয়ে লড়ে রেকর্ড জুটি গড়ে রাখলেন বাংলাদেশের মান। ৪৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ যখন খাদের কিনারায়, তখন দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে শেষপর্যন্ত টিকে থেকে বাংলাদেশকে জয় এনে দেন আফিফ-মিরাজ। ওয়ানডে ইতিহাসে সপ্তম উইকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জুটিই এখন এই দুই ব্যাটারের। দুজনের অনবদ্য ১৭৪ রানের রেকর্ড জুটিতে শেষ পর্যন্ত ৪ উইকেটের অবিশ্বাস্য জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। আফিফ ৯৩ ও মেহেদী ৮১ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। এই জয়ে ৩ ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশ এগিয়ে গেল ১-০তে।

সপ্তম উইকেটে বাংলাদেশের আগের সেরা জুটি ছিল ইমরুল কায়েস-সাইফ উদ্দিনের ১৪০ রান। ২০১৮ সালে মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই জুটি গড়েছিলেন। আজ তাদের পেরিয়ে গেছেন আফিফ-মিরাজ। এ ছাড়া বিশ্বে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি। এর উপরে আছে একটি জুটি। জস বাটলার-আদিল রশিদ ১৭৭ রান করেছিলেন ২০১৫ সালে, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে।

আফগানিস্তানের দেওয়া ২১৬ রানের লক্ষ্যে শুরুতেই বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। প্রথম ওভারে ১২ রান আসলেও তৃতীয় ওভারের তৃতীয় ও পঞ্চম বলে দুই ওপেনারকে হারায় স্বাগতিকরা। প্রথমে ফজলহক ফারুকির তৃতীয় বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন লিটন দাস(১)। এক বল পরেই ফারুকি এলবির ফাঁদে ফেলেন তামিম ইকবালকে (৮)। নিজের পরের ওভারেই ফের ঝলক দেখান ফারুকি। এবার তিনি ৩ রান করা মুশফিকুর রহিমকে বিদায় করেন এলবির ফাঁদে ফেলে। আর একই ওভারের শেষ বলে অভিষিক্ত ইয়াসির আলী রাব্বিকে শূন্য রানে সরাসরি বোল্ড করেন। মাত্র ১৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ তখন দিশেহারা। একাই চার উইকেট নিয়েছেন ফারুকি!

 

দল যখন খাদের কিনারায়, তখন ক্রিজে আসেন সাকিব। তবে বাংলাদেশকে বিপদে ফেলে সাকিবও ধরলেন তামিম-লিটনদের পথ। অষ্টম ওভারের চতুর্থ বলে মুজিবের বলে বোল্ডই হয়ে গেলেন দেশসেরা এই অলরাউন্ডার।

বাংলাদেশের ভয় ছিল রশিদ খানকে নিয়ে, কিন্তু আফগান এই লেগি বোলিংয়ে আসার আগেই অর্ধেক ব্যাটসম্যান হারিয়েছে বাংলাদেশ। রশিদ খান উইকেট পেলেন তার প্রথম ওভারেই। মাহমুদউল্লাহকে (৮) স্লিপে ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে পাঠিয়েছেন রশিদই। বাংলাদেশ তাদের ষষ্ট উইকেট হারিয়েছে মাত্র ৪৫ রানে।

মাত্র ৪৫ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর মেহেদি হাসান মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে বড় জুটি গড়তে থাকেন আফিফ হোসেন। ২২তম ওভারে গুলবাদিন নাইবকে চার মেরে দলীয় স্কোর একশ পার করেন আফিফ। তাতেই এগোচ্ছে বাংলাদেশ। বিপদের মূহুর্তে দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে আফিফ তুলে নেন তার ক্যারিয়ারের ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। ৬৪ বলে তিনি দেখা পান ফিফটির। তার সঙ্গী মেহেদি হাসান মিরাজ। দুর্দান্ত জুটি গড়ে দলকে টেনে নিয়ে যাওয়ার পথে অর্ধশতক তুলে নেন মিরাজও। উইকেট কামড়ে ধরে ৭৯ বলে তুলে নেন দুর্দান্ত এক অর্ধশতক। দুজনের সপ্তম উইকেটের জুটিতে প্রতিরোধ গড়েছে স্বাগতিকরা।

এর আগে টস হেরে প্রথম ওভারেই মোস্তাফিজকে বোলিংয়ে আনেন তামিম। দ্বিতীয় বলেই গুরবাজের ব্যাটে চার হজম করেছেন। নিজের পরের ওভারেই সেই আফগান ওপেনার গুরবাজকে ফিরিয়েছেন কাটার মাস্টার। ১৪ বলে ৭ রানে তামিমের তালুবন্দি হয়ে ফেরেন তিনি।

 

গুরবাজকে হারানোর পর ইব্রাহিম জাদরান ও রহমত শাহ চাপ কাটিয়ে উঠতে থাকেন। এর মধ্যে তাসকিনের বলে ইব্রাহিমের ক্যাচ মিস করে সেই চাপ বাংলাদেশকে দেন মাহমুদউল্লাহ। ৩ রানে জীবন পাওয়া ইব্রাহিমকে ১৯ রানে ফেরান শরিফুল ইসলাম। এতে অনেকটাই চাপমুক্ত হয় তামিম ইকবালরা।

প্রথম স্পেলে না পেলেও দ্বিতীয় স্পেলে উইকেটের দেখা পান তাসকিন। স্পিডমাস্টারের বাড়তি বাউন্সে খেই খারিয়ে ফেললেন রহমত, বল  ব্যাটের কানায় লেগে গেল উইকেটের পেছনে মুশফিকের হাতে। ৬৯ বলে ৩৪ রান করে আউট হয়েছেন রহমত।

চার-ছক্কায় দ্রুত রান তুলছিলেন আফগান অধিনায়ক শহীদি। কিন্তু তাকে বেশিদূর যেতে দেয়নি মাহমুদউল্লাহ। তাসকিনের বদলে বোলিংয়ে এসেই আফগান অধিনায়ককে মাঠছাড়া করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। উইকেটের পেছনে মুশফিকের হাতে ধরা পড়ার আগে ৪৩ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ২৮ রান করে ফিরেছেন শহীদি।

৪ উইকেট হারিয়ে বড় সংগ্রহের পথে এগোচ্ছিল নাজিবুল্লাহ জাদরান-মোহাম্মদ নবী। দুজনে স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাটিং করে সচল রাখেন রানের চাকা। তৃতীয় স্পেলেনবীকে ফিরিয়ে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি দেন তাসকিন। উইকেটের পেছনে মুশফিকের হাতে তালুবন্দি হবার আগে ২৪ বলে ২ চারে ২০ রান করে ফেরেন নবী। তার বিদায়ে ভাঙে ৬৩ রানের বড় জুটি।

দলীয় ১৯৪ রানে আফগান শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন সাকিব। গুলবাদীনকে ফেরালেন এলবির ফাঁদে ফেলে, রশিদ খানকে ফেরান বোল্ড করে। ২১ বলে ১৭ রান করেন গুলবাদীন, অন্যদিকে খালি হাতেই সাজঘরে ফেরত গেছেন রশিদ খান। স্কোরকার্ডে ১ রান যোগ হতেই দুর্দান্ত স্লোয়ারে শান্তর ক্যাচ বানিয়ে মুজিবকে ফেরান মোস্তাফিজ। এদিকে দলকে একাই টানতে থাকা নাজিবুল্লাহ জাদরান ফিফটি পূর্ণ করার পর আউট হন ব্যক্তিগত ৬৭ রানে। আর শূন্যরানে অপরাজিত থাকেন ফজলেহক ফারুকি।

বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন মোস্তাফিজুর রহমান। এছাড়া দুটি করে উইকেট নেন তিনজন বোলার।

ওয়ানডে সিরিজের আগে ইয়াসির আলীর অভিষেকের একটা ইঙ্গিত মিলেছিল। হয়েছেও তাই। প্রথম ওয়ানডেতে অভিষেক হচ্ছে এই মিডল অর্ডার ব্যাটারের। এর আগে গত নভেম্বরে চট্টগ্রামেই টেস্ট অভিষেক হয়েছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে। একই মাঠে ওয়ানডে অভিষেক হলো আফগানিস্তানের বিপক্ষে। বাংলাদেশের দলের ১৩৭তম ক্রিকেটার হিসেবে একদিনের ক্রিকেটের ক্যাপ পরলেন রাব্বি।

রাব্বির অভিষেকে অপেক্ষা বাড়ল মাহমুদুল হাসান জয়ের। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী এই ব্যাটসম্যান ঘরের মাঠে পাকিস্তান সিরিজেই টেস্ট অভিষেকের স্বাদ পান। রাব্বির অভিষেকে এখনই ওয়ানডে ক্যাপ মাথায় তোলা হলো না জয়ের।

বাংলাদেশ একাদশ সাজিয়েছে তিন পেসার ও দুই স্পিনার নিয়ে। পেস আক্রমণে আছেন মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম। স্পিনের মেহেদি হাসান মিরাজ ও সাকিব আল হাসান। পার্ট টাইম বোলার হিসেবে হাত ঘোরাতে পারবেন আফিফ হোসেন ও মাহমুদউল্লাহ।

বাংলাদেশ একাদশ: 

লিটন দাস, তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম (উইকেটকিপার), ইয়াসির আলী, মাহমুদউল্লাহ, আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, শরিফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমান।

আফগানিস্তান একাদশ: 

রহমানুল্লাহ গুরবাজ, ইবরাহীম জাদরান, রহমত শাহ, হাসমতুল্লাহ শাহিদি, নাজিবুল্লাহ জাদরান, গুলবাদিন নাইব, মোহাম্মদ নবী, রশিদ খান, মুজিব উর রহমান, ইয়ামিন আহমদজাই ও ফজল হক ফারুকি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

মিরাজ-আফিফের রেকর্ড জুটিতে বাংলাদেশের জয়

আপডেট সময় : ০৪:৩২:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২

আমার সুনামগঞ্জ ডেস্কঃ

টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে নতুন মহাকাব্য লিখলেন আফিফ হোসেন ও মেহেদী হাসান মিরাজ। বুক চিতিয়ে লড়ে রেকর্ড জুটি গড়ে রাখলেন বাংলাদেশের মান। ৪৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ যখন খাদের কিনারায়, তখন দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে শেষপর্যন্ত টিকে থেকে বাংলাদেশকে জয় এনে দেন আফিফ-মিরাজ। ওয়ানডে ইতিহাসে সপ্তম উইকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জুটিই এখন এই দুই ব্যাটারের। দুজনের অনবদ্য ১৭৪ রানের রেকর্ড জুটিতে শেষ পর্যন্ত ৪ উইকেটের অবিশ্বাস্য জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। আফিফ ৯৩ ও মেহেদী ৮১ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। এই জয়ে ৩ ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশ এগিয়ে গেল ১-০তে।

সপ্তম উইকেটে বাংলাদেশের আগের সেরা জুটি ছিল ইমরুল কায়েস-সাইফ উদ্দিনের ১৪০ রান। ২০১৮ সালে মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই জুটি গড়েছিলেন। আজ তাদের পেরিয়ে গেছেন আফিফ-মিরাজ। এ ছাড়া বিশ্বে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি। এর উপরে আছে একটি জুটি। জস বাটলার-আদিল রশিদ ১৭৭ রান করেছিলেন ২০১৫ সালে, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে।

আফগানিস্তানের দেওয়া ২১৬ রানের লক্ষ্যে শুরুতেই বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। প্রথম ওভারে ১২ রান আসলেও তৃতীয় ওভারের তৃতীয় ও পঞ্চম বলে দুই ওপেনারকে হারায় স্বাগতিকরা। প্রথমে ফজলহক ফারুকির তৃতীয় বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন লিটন দাস(১)। এক বল পরেই ফারুকি এলবির ফাঁদে ফেলেন তামিম ইকবালকে (৮)। নিজের পরের ওভারেই ফের ঝলক দেখান ফারুকি। এবার তিনি ৩ রান করা মুশফিকুর রহিমকে বিদায় করেন এলবির ফাঁদে ফেলে। আর একই ওভারের শেষ বলে অভিষিক্ত ইয়াসির আলী রাব্বিকে শূন্য রানে সরাসরি বোল্ড করেন। মাত্র ১৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ তখন দিশেহারা। একাই চার উইকেট নিয়েছেন ফারুকি!

 

দল যখন খাদের কিনারায়, তখন ক্রিজে আসেন সাকিব। তবে বাংলাদেশকে বিপদে ফেলে সাকিবও ধরলেন তামিম-লিটনদের পথ। অষ্টম ওভারের চতুর্থ বলে মুজিবের বলে বোল্ডই হয়ে গেলেন দেশসেরা এই অলরাউন্ডার।

বাংলাদেশের ভয় ছিল রশিদ খানকে নিয়ে, কিন্তু আফগান এই লেগি বোলিংয়ে আসার আগেই অর্ধেক ব্যাটসম্যান হারিয়েছে বাংলাদেশ। রশিদ খান উইকেট পেলেন তার প্রথম ওভারেই। মাহমুদউল্লাহকে (৮) স্লিপে ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে পাঠিয়েছেন রশিদই। বাংলাদেশ তাদের ষষ্ট উইকেট হারিয়েছে মাত্র ৪৫ রানে।

মাত্র ৪৫ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর মেহেদি হাসান মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে বড় জুটি গড়তে থাকেন আফিফ হোসেন। ২২তম ওভারে গুলবাদিন নাইবকে চার মেরে দলীয় স্কোর একশ পার করেন আফিফ। তাতেই এগোচ্ছে বাংলাদেশ। বিপদের মূহুর্তে দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে আফিফ তুলে নেন তার ক্যারিয়ারের ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। ৬৪ বলে তিনি দেখা পান ফিফটির। তার সঙ্গী মেহেদি হাসান মিরাজ। দুর্দান্ত জুটি গড়ে দলকে টেনে নিয়ে যাওয়ার পথে অর্ধশতক তুলে নেন মিরাজও। উইকেট কামড়ে ধরে ৭৯ বলে তুলে নেন দুর্দান্ত এক অর্ধশতক। দুজনের সপ্তম উইকেটের জুটিতে প্রতিরোধ গড়েছে স্বাগতিকরা।

এর আগে টস হেরে প্রথম ওভারেই মোস্তাফিজকে বোলিংয়ে আনেন তামিম। দ্বিতীয় বলেই গুরবাজের ব্যাটে চার হজম করেছেন। নিজের পরের ওভারেই সেই আফগান ওপেনার গুরবাজকে ফিরিয়েছেন কাটার মাস্টার। ১৪ বলে ৭ রানে তামিমের তালুবন্দি হয়ে ফেরেন তিনি।

 

গুরবাজকে হারানোর পর ইব্রাহিম জাদরান ও রহমত শাহ চাপ কাটিয়ে উঠতে থাকেন। এর মধ্যে তাসকিনের বলে ইব্রাহিমের ক্যাচ মিস করে সেই চাপ বাংলাদেশকে দেন মাহমুদউল্লাহ। ৩ রানে জীবন পাওয়া ইব্রাহিমকে ১৯ রানে ফেরান শরিফুল ইসলাম। এতে অনেকটাই চাপমুক্ত হয় তামিম ইকবালরা।

প্রথম স্পেলে না পেলেও দ্বিতীয় স্পেলে উইকেটের দেখা পান তাসকিন। স্পিডমাস্টারের বাড়তি বাউন্সে খেই খারিয়ে ফেললেন রহমত, বল  ব্যাটের কানায় লেগে গেল উইকেটের পেছনে মুশফিকের হাতে। ৬৯ বলে ৩৪ রান করে আউট হয়েছেন রহমত।

চার-ছক্কায় দ্রুত রান তুলছিলেন আফগান অধিনায়ক শহীদি। কিন্তু তাকে বেশিদূর যেতে দেয়নি মাহমুদউল্লাহ। তাসকিনের বদলে বোলিংয়ে এসেই আফগান অধিনায়ককে মাঠছাড়া করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। উইকেটের পেছনে মুশফিকের হাতে ধরা পড়ার আগে ৪৩ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ২৮ রান করে ফিরেছেন শহীদি।

৪ উইকেট হারিয়ে বড় সংগ্রহের পথে এগোচ্ছিল নাজিবুল্লাহ জাদরান-মোহাম্মদ নবী। দুজনে স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাটিং করে সচল রাখেন রানের চাকা। তৃতীয় স্পেলেনবীকে ফিরিয়ে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি দেন তাসকিন। উইকেটের পেছনে মুশফিকের হাতে তালুবন্দি হবার আগে ২৪ বলে ২ চারে ২০ রান করে ফেরেন নবী। তার বিদায়ে ভাঙে ৬৩ রানের বড় জুটি।

দলীয় ১৯৪ রানে আফগান শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন সাকিব। গুলবাদীনকে ফেরালেন এলবির ফাঁদে ফেলে, রশিদ খানকে ফেরান বোল্ড করে। ২১ বলে ১৭ রান করেন গুলবাদীন, অন্যদিকে খালি হাতেই সাজঘরে ফেরত গেছেন রশিদ খান। স্কোরকার্ডে ১ রান যোগ হতেই দুর্দান্ত স্লোয়ারে শান্তর ক্যাচ বানিয়ে মুজিবকে ফেরান মোস্তাফিজ। এদিকে দলকে একাই টানতে থাকা নাজিবুল্লাহ জাদরান ফিফটি পূর্ণ করার পর আউট হন ব্যক্তিগত ৬৭ রানে। আর শূন্যরানে অপরাজিত থাকেন ফজলেহক ফারুকি।

বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন মোস্তাফিজুর রহমান। এছাড়া দুটি করে উইকেট নেন তিনজন বোলার।

ওয়ানডে সিরিজের আগে ইয়াসির আলীর অভিষেকের একটা ইঙ্গিত মিলেছিল। হয়েছেও তাই। প্রথম ওয়ানডেতে অভিষেক হচ্ছে এই মিডল অর্ডার ব্যাটারের। এর আগে গত নভেম্বরে চট্টগ্রামেই টেস্ট অভিষেক হয়েছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে। একই মাঠে ওয়ানডে অভিষেক হলো আফগানিস্তানের বিপক্ষে। বাংলাদেশের দলের ১৩৭তম ক্রিকেটার হিসেবে একদিনের ক্রিকেটের ক্যাপ পরলেন রাব্বি।

রাব্বির অভিষেকে অপেক্ষা বাড়ল মাহমুদুল হাসান জয়ের। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী এই ব্যাটসম্যান ঘরের মাঠে পাকিস্তান সিরিজেই টেস্ট অভিষেকের স্বাদ পান। রাব্বির অভিষেকে এখনই ওয়ানডে ক্যাপ মাথায় তোলা হলো না জয়ের।

বাংলাদেশ একাদশ সাজিয়েছে তিন পেসার ও দুই স্পিনার নিয়ে। পেস আক্রমণে আছেন মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম। স্পিনের মেহেদি হাসান মিরাজ ও সাকিব আল হাসান। পার্ট টাইম বোলার হিসেবে হাত ঘোরাতে পারবেন আফিফ হোসেন ও মাহমুদউল্লাহ।

বাংলাদেশ একাদশ: 

লিটন দাস, তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম (উইকেটকিপার), ইয়াসির আলী, মাহমুদউল্লাহ, আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, শরিফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমান।

আফগানিস্তান একাদশ: 

রহমানুল্লাহ গুরবাজ, ইবরাহীম জাদরান, রহমত শাহ, হাসমতুল্লাহ শাহিদি, নাজিবুল্লাহ জাদরান, গুলবাদিন নাইব, মোহাম্মদ নবী, রশিদ খান, মুজিব উর রহমান, ইয়ামিন আহমদজাই ও ফজল হক ফারুকি।