ঢাকা ০১:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সুনামগঞ্জ শিবিরের দারসুল কুরআন অনুষ্ঠিত সুনামগঞ্জ ১ আসনের জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত এমপির পথসভা জনসভায় পরিণত বিশ্বম্ভরপুরে তাহিয়া একাডেমির আয়োজনে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প সুনামগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন দৌড়: মাঠে সরব সম্ভাব্য প্রার্থীরা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে ইসলামী আন্দোলনের মানববন্ধন হাওরাঞ্চলে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে আমূল পরিবর্তন  করা হবে-   তোফায়েল আহমদ খান তাহিরপুরে ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশ এর প্রকল্প অবহিতকরণ সভা সম্পন্ন সুনামগঞ্জে নতুন সিম কেনার সময় অভিনব প্রতারণার ফাঁদ, সতর্ক থাকুন তাহিরপুরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানববন্ধন জামায়াত নির্বাচিত হলে ছাতক-দোয়ারায় মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করব:: দোয়ারাবাজারে মাও. সালাম মাদানি

উজির মিয়ার মৃত্যুঃ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:৪৮:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / 263
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

শান্তিগঞ্জ উপজেলার শত্রুমর্দন গ্রামের বাসিন্দা উজির মিয়ার (৪০) মৃত্যুর ঘটনায় সোমবার আদালতে একটি মামলা হয়েছে। উজির মিয়ার ছোট ভাই ডালিম মিয়া বাদী হয়ে সুনামগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ ওয়াহিদুজ্জামান শিকদারের আদালতে এই মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় শান্তিগঞ্জ থানার উপপরির্দশক (এসআই) দেবাশীষ সূত্রধর ও এসআই আলা উদ্দিনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতে সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) খায়রুল কবির। তিনি জানান, নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইন ২০১৩ এর ১৫(২) ধারায় মামলাটি হয়েছে। আদালত মামলার গ্রহণযোগ্যতার শুনানির জন্য বুধবার দিন ধার্য করে দিয়েছেন।

মামলার আরজিতে বাদী ডালিম মিয়া উল্লেখ করেছেন, ঘটনার তারিখের কিছুদিন আগে থেকে তাঁদের গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে প্রায় প্রতি রাতেই সিঁধেল চুরি ও গরু চুরি হচ্ছিল। উজির মিয়ার বাড়িতেও চুরি হয়। পরে উজির মিয়া গ্রামের অন্য ভুক্তভোগীদের সংগঠিত করে এলাকার সন্দেহভাজন চোর একই গ্রামের শামীম মিয়া, মনর মিয়া ও মন্নার মিয়ার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্থানীয় পশ্চিমপাগলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের কাছে গত ২০ জানুয়ারি লিখিত অভিযোগ দেন। পরবর্তীতে মামলার আসামি দুই পুলিশ কর্মকর্তা ও অন্যান্য আরও পুলিশ সদস্যরা এই তিনজনকে একটি গাড়িতে করে নিয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১২টার দিকে উজির মিয়ার বাড়িতে যান। এরপর কোনো কারণ ছাড়াই তাঁরা উজির মিয়াকে রশি দিয়ে বেঁধে নিয়ে যেতে থাকেন। এ সময় উজির মিয়ার মাথায় আসামির হাতে থাকা একটি টর্চ লাইট দিয়ে আঘাত করা হয়। পরে তাঁকে টেনেহিঁচরে গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তখন থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসআই আলা উদ্দিনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে উজির মিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে যোগযোগ করা হয়।

আলা উদ্দিন তখন জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য উজির মিয়াকে থানায় নেওয়া হচ্ছে। সকালে যেন তাঁরা থানা থেকে তাঁকে নিয়ে আসেন। কিন্তু সকালে থানায় গিয়ে পরিবারের লোকজন জানতে পারেন তাঁকে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। পরে হাসপাতালে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। এরপর তাঁরা জানতে পারেন, একটি চুরির মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এরপর আদালত থেকে ওইদিনই জামিন পান উজির মিয়া।

পরে উজির মিয়া তাঁদের জানান, থানায় নিয়ে তাঁকে চোখ, মুখ বেঁধে অমানবিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। তিনি স্বাভাবিকভাবে দাঁড়াতে পারছিলেন না। তাঁর পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। এরপর তাঁর অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ওইদিন রাতেই সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে ভর্তি করা হয়। সেখানে দুইদিন থাকার পর তাঁকে আবার বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এরপর ২১ ফেব্রুয়ারি তাঁর অবস্থার আবার অবনতি হলে তাঁকে এলাকার কৈতক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।ঘ

টনার পর অভিযুক্ত এসআই দেবাশীষ সূত্রধরকে শান্তিগঞ্জ থানা থেকে দিরাই থানায় বদলি করা হয়েছিল। রোববার তাকে সেখান থেকে সুনামগঞ্জ পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এসআই আলা উদ্দিন শান্তিগঞ্জ থানায় কর্মরত আছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস : আমার সুনামগঞ্জ | Amar Sunamganj

উজির মিয়ার মৃত্যুঃ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

আপডেট সময় : ০৭:৪৮:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

শান্তিগঞ্জ উপজেলার শত্রুমর্দন গ্রামের বাসিন্দা উজির মিয়ার (৪০) মৃত্যুর ঘটনায় সোমবার আদালতে একটি মামলা হয়েছে। উজির মিয়ার ছোট ভাই ডালিম মিয়া বাদী হয়ে সুনামগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ ওয়াহিদুজ্জামান শিকদারের আদালতে এই মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় শান্তিগঞ্জ থানার উপপরির্দশক (এসআই) দেবাশীষ সূত্রধর ও এসআই আলা উদ্দিনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতে সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) খায়রুল কবির। তিনি জানান, নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইন ২০১৩ এর ১৫(২) ধারায় মামলাটি হয়েছে। আদালত মামলার গ্রহণযোগ্যতার শুনানির জন্য বুধবার দিন ধার্য করে দিয়েছেন।

মামলার আরজিতে বাদী ডালিম মিয়া উল্লেখ করেছেন, ঘটনার তারিখের কিছুদিন আগে থেকে তাঁদের গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে প্রায় প্রতি রাতেই সিঁধেল চুরি ও গরু চুরি হচ্ছিল। উজির মিয়ার বাড়িতেও চুরি হয়। পরে উজির মিয়া গ্রামের অন্য ভুক্তভোগীদের সংগঠিত করে এলাকার সন্দেহভাজন চোর একই গ্রামের শামীম মিয়া, মনর মিয়া ও মন্নার মিয়ার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্থানীয় পশ্চিমপাগলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের কাছে গত ২০ জানুয়ারি লিখিত অভিযোগ দেন। পরবর্তীতে মামলার আসামি দুই পুলিশ কর্মকর্তা ও অন্যান্য আরও পুলিশ সদস্যরা এই তিনজনকে একটি গাড়িতে করে নিয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১২টার দিকে উজির মিয়ার বাড়িতে যান। এরপর কোনো কারণ ছাড়াই তাঁরা উজির মিয়াকে রশি দিয়ে বেঁধে নিয়ে যেতে থাকেন। এ সময় উজির মিয়ার মাথায় আসামির হাতে থাকা একটি টর্চ লাইট দিয়ে আঘাত করা হয়। পরে তাঁকে টেনেহিঁচরে গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তখন থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসআই আলা উদ্দিনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে উজির মিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে যোগযোগ করা হয়।

আলা উদ্দিন তখন জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য উজির মিয়াকে থানায় নেওয়া হচ্ছে। সকালে যেন তাঁরা থানা থেকে তাঁকে নিয়ে আসেন। কিন্তু সকালে থানায় গিয়ে পরিবারের লোকজন জানতে পারেন তাঁকে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। পরে হাসপাতালে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। এরপর তাঁরা জানতে পারেন, একটি চুরির মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এরপর আদালত থেকে ওইদিনই জামিন পান উজির মিয়া।

পরে উজির মিয়া তাঁদের জানান, থানায় নিয়ে তাঁকে চোখ, মুখ বেঁধে অমানবিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। তিনি স্বাভাবিকভাবে দাঁড়াতে পারছিলেন না। তাঁর পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। এরপর তাঁর অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ওইদিন রাতেই সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে ভর্তি করা হয়। সেখানে দুইদিন থাকার পর তাঁকে আবার বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এরপর ২১ ফেব্রুয়ারি তাঁর অবস্থার আবার অবনতি হলে তাঁকে এলাকার কৈতক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।ঘ

টনার পর অভিযুক্ত এসআই দেবাশীষ সূত্রধরকে শান্তিগঞ্জ থানা থেকে দিরাই থানায় বদলি করা হয়েছিল। রোববার তাকে সেখান থেকে সুনামগঞ্জ পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এসআই আলা উদ্দিন শান্তিগঞ্জ থানায় কর্মরত আছেন।