ঢাকা ০৪:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

দিরাইয়ে ৩০ বছর ধরে হিন্দু শিক্ষক পড়াচ্ছেন ইসলাম শিক্ষা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:২১:২১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৮ এপ্রিল ২০২২
  • / 196
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আমির হোসাইন, দিরাই থেকে

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় ৩০ বছর ধরে স্কুলের মুসলিম শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা থেকে। পর্যাপ্ত মুসলিম শিক্ষক না থাকায় হিন্দু শিক্ষক দিয়ে চলছে মুসলিম ধর্ম শিক্ষার ক্লাস।

শিক্ষা বোর্ডগুলো সাধারণ পাঠ্য পুস্তকের পাশাপাশি সব ধর্মের শিক্ষার্থীদের জন্য ‘ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা’ নামে একটি বই সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করে।

কিন্তু উপজেলার শ্যামারচর(মক্তব) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনো মুসলিম শিক্ষক না থাকায় দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে হিন্দু শিক্ষক নিচ্ছেন ইসলাম শিক্ষার পাঠদান।উপজেলা শিক্ষা অফিসের উদাসীনতার কারণেই ধর্মীয় শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হওয়ার মূল কারণ বলে মনে করে সচেতন মহল।

শিক্ষার্থীদের সৎ, আদর্শ ও নৈতিকতাসম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য পুঁথিগত বিদ্যার পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষা একান্ত প্রয়োজন। কোনো ধর্মই মানুষকে খারাপ হতে বলেনি। শিক্ষার্থীরা ধর্মীয় শিক্ষা নিয়ে বেড়ে উঠলে তাদের মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত হয়।

মানবতার যথার্থ বিকাশের জন্য ধর্মীয় শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। মুসলিম শিক্ষক সংকট থাকায় বাধ্য হয়েই চলছে এ শিক্ষা কার্যক্রম। এই নিয়ে বিদ্যালয়ের অভিভাবকদের মাঝে রয়েছে চাপা ক্ষোভ।

এতে করে শিক্ষার্থীরা তাদের ধর্মীয় সঠিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন অভিভাবকরা। যার কারণে শিশু বয়সেই অনেক শিক্ষার্থী নৈতিকতা হারিয়ে অন্যায় অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে।

সমাজে বাড়ছে শিশু অপরাধ। নেশাজাতীয় দ্রব্যের সঙ্গেও আসক্ত হচ্ছে তারা। তাই প্রতিটি স্কুলের শিক্ষার্থীরা যেন নিজ নিজ ধর্মীয় শিক্ষা থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকে অচিরেই নজর দেবেন কর্তৃপক্ষ সেটাই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রত্যাশা।

সরেজমিনে স্কুলে গিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা হলে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে এই প্রতিষ্ঠান মুসলিম শিক্ষক নেই। তাই আমরা সর্বোচ্চ আন্তরিক হয়ে ইসলাম শিক্ষার ক্লাসগুলো নিয়ে থাকি।

হিন্দু ধর্মের শিক্ষকরা বাধ্য হয়ে ইসলাম ধর্ম বিষয়ের পাঠদান করানোর কারণে শিশু বয়সে ধর্মীয় বিষয়ের প্রকৃত শিক্ষাগ্রহণ থেকে ছাত্রছাত্রীরাও বঞ্চিত হচ্ছে মনে করেন অভিভাবকেরা।

এবিষয়ে অভিভাবক রুবল মিয়া বলেন ধর্মীয় ক্লাস স্ব স্ব ধর্মের শিক্ষকরা পড়াবেন এটাই স্বাভাবিক। এটা কাম্য নয় যে একজন হিন্দু ধর্মের শিক্ষ ইসমাল পড়াবেন। এখানে ঈমান আক্বিদার বিষয়ও জড়িত। দ্রুত একজন মুসলিম শিক্ষক নিয়োগ হোক এটাই আশা।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক চম্পা রানী দাস বলেন আমি ২০১৭ সালে এখানে এসেছি।মুসলিম শিক্ষক না থাকায় আমরা ইসলাম শিক্ষা আন্তরিকতার সাথে পড়াচ্ছি।

এবিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান দিরাই উপজেলায় একাধিক বিদ্যালয় রয়েছে যেখানে মুসলিম শিক্ষক সংকট।আমরা উপরে কথা বলছি কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস : আমার সুনামগঞ্জ | Amar Sunamganj

দিরাইয়ে ৩০ বছর ধরে হিন্দু শিক্ষক পড়াচ্ছেন ইসলাম শিক্ষা

আপডেট সময় : ১১:২১:২১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৮ এপ্রিল ২০২২

আমির হোসাইন, দিরাই থেকে

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় ৩০ বছর ধরে স্কুলের মুসলিম শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা থেকে। পর্যাপ্ত মুসলিম শিক্ষক না থাকায় হিন্দু শিক্ষক দিয়ে চলছে মুসলিম ধর্ম শিক্ষার ক্লাস।

শিক্ষা বোর্ডগুলো সাধারণ পাঠ্য পুস্তকের পাশাপাশি সব ধর্মের শিক্ষার্থীদের জন্য ‘ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা’ নামে একটি বই সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করে।

কিন্তু উপজেলার শ্যামারচর(মক্তব) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনো মুসলিম শিক্ষক না থাকায় দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে হিন্দু শিক্ষক নিচ্ছেন ইসলাম শিক্ষার পাঠদান।উপজেলা শিক্ষা অফিসের উদাসীনতার কারণেই ধর্মীয় শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হওয়ার মূল কারণ বলে মনে করে সচেতন মহল।

শিক্ষার্থীদের সৎ, আদর্শ ও নৈতিকতাসম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য পুঁথিগত বিদ্যার পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষা একান্ত প্রয়োজন। কোনো ধর্মই মানুষকে খারাপ হতে বলেনি। শিক্ষার্থীরা ধর্মীয় শিক্ষা নিয়ে বেড়ে উঠলে তাদের মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত হয়।

মানবতার যথার্থ বিকাশের জন্য ধর্মীয় শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। মুসলিম শিক্ষক সংকট থাকায় বাধ্য হয়েই চলছে এ শিক্ষা কার্যক্রম। এই নিয়ে বিদ্যালয়ের অভিভাবকদের মাঝে রয়েছে চাপা ক্ষোভ।

এতে করে শিক্ষার্থীরা তাদের ধর্মীয় সঠিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন অভিভাবকরা। যার কারণে শিশু বয়সেই অনেক শিক্ষার্থী নৈতিকতা হারিয়ে অন্যায় অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে।

সমাজে বাড়ছে শিশু অপরাধ। নেশাজাতীয় দ্রব্যের সঙ্গেও আসক্ত হচ্ছে তারা। তাই প্রতিটি স্কুলের শিক্ষার্থীরা যেন নিজ নিজ ধর্মীয় শিক্ষা থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকে অচিরেই নজর দেবেন কর্তৃপক্ষ সেটাই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রত্যাশা।

সরেজমিনে স্কুলে গিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা হলে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে এই প্রতিষ্ঠান মুসলিম শিক্ষক নেই। তাই আমরা সর্বোচ্চ আন্তরিক হয়ে ইসলাম শিক্ষার ক্লাসগুলো নিয়ে থাকি।

হিন্দু ধর্মের শিক্ষকরা বাধ্য হয়ে ইসলাম ধর্ম বিষয়ের পাঠদান করানোর কারণে শিশু বয়সে ধর্মীয় বিষয়ের প্রকৃত শিক্ষাগ্রহণ থেকে ছাত্রছাত্রীরাও বঞ্চিত হচ্ছে মনে করেন অভিভাবকেরা।

এবিষয়ে অভিভাবক রুবল মিয়া বলেন ধর্মীয় ক্লাস স্ব স্ব ধর্মের শিক্ষকরা পড়াবেন এটাই স্বাভাবিক। এটা কাম্য নয় যে একজন হিন্দু ধর্মের শিক্ষ ইসমাল পড়াবেন। এখানে ঈমান আক্বিদার বিষয়ও জড়িত। দ্রুত একজন মুসলিম শিক্ষক নিয়োগ হোক এটাই আশা।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক চম্পা রানী দাস বলেন আমি ২০১৭ সালে এখানে এসেছি।মুসলিম শিক্ষক না থাকায় আমরা ইসলাম শিক্ষা আন্তরিকতার সাথে পড়াচ্ছি।

এবিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান দিরাই উপজেলায় একাধিক বিদ্যালয় রয়েছে যেখানে মুসলিম শিক্ষক সংকট।আমরা উপরে কথা বলছি কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না।