মধ্যনগরে সাংবাদিকের ওপর হামলা

- আপডেট সময় : ০৯:১০:৩৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪ ১২৩ বার পড়া হয়েছে
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলায় কালের কণ্ঠ পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি আল আমিন আহমেদ সালমান (২৭) হামলা ও মারধরের শিকার হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে মধ্যনগর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বাপ্পী হাসান (৩২) ও উপজেলা যুবদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক রায়হান উদ্দিন (৪২) তাকে মারধর করেন।
জানা গেছে, উপজেলার মধ্যনগর মধ্যবাজারের একটি চায়ের স্টলের পেছনে থাকা একটি কক্ষে উপজেলা বিএনপির দু’জন জ্যেষ্ঠ নেতার সামনে এই ঘটনা ঘটে। আহত সাংবাদিক সালমান পাশের ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর দুইটার দিকে উপজেলার মধ্যনগর মধ্যবাজারের একটি চায়ের স্টলের পেছনের একটি কক্ষে মধ্যনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুল হামিদ তালুকদার, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাইয়ূম মজনু, কালের কণ্ঠ পত্রিকার মধ্যনগর উপজেলা প্রতিনিধি আল আমিন আহমেদ সালমান, দৈনিক সংবাদ দিগন্ত পত্রিকার মধ্যনগর উপজেলা প্রতিনিধি এম এ মান্নানসহ ৫/৬ জন সেখানে বসে চা খেতে খেতে আড্ডা দিচ্ছিলেন।
এ সময় উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বাপ্পী হাসান ও উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রায়হান উদ্দিন সেখানে যান। বাপ্পী সেখানে থাকা দু’জন সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, তোরা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কোনো নিউজ করতে পারবি না। নিউজ করলে প্যান্ট খুইলা বাইরাইয়াম।
সাংবাদিক আল আমিন এ নিয়ে প্রতিবাদ করে বলেন, ভাই আমরা সাংবাদিক পেশার প্রতি সম্মান দিয়ে ভদ্র ভাবে কথা বলেন। এই কথা বলা মাত্রই বিএনপির দু’জন জ্যেষ্ঠ নেতার সামনে বাপ্পী হাসান ও রায়হান উদ্দিন দু’জন মিলে আকস্মিকভাবে সাংবাদিক আল আমিন আহমেদ সালমানের মুখ, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও চর লাথি মারতে থাকেন। পরে সেখানে থাকা দু’জন বিএনপি নেতা তাদেরকে ধমক দিলে তারা সেখান থেকে সটকে পড়েন।
ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন সাংবাদিক আল আমিন আহমেদ সালমান জানান, আমি গত ৯ অক্টোবর কালের কণ্ঠ পত্রিকায় মধ্যনগরে বেপরোয়া চোরাচালান চক্রের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করি। পত্রিকায় খবরটি ছাপা হওয়ার পর থেকে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কতিপয় নেতাকর্মীরা আমার প্রতি ক্ষুব্ধ হন। আমাকে যে দু’জন মারধর করেছেন তাদের সঙ্গে আমার কোনো ধরনের বিরোধ ছিল না। পত্রিকায় নিউজটি ছাপা হওয়ার জের ধরেই আমি হামলা ও মারধরে শিকার হয়েছি। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করব।
হামলা ও মারধরের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে ছাত্রদল ও যুবদলের ওই দুজন নেতা বলেন, আমরা কাউকে হামলা ও মারধর করিনি। আমরা সাংবাদিকদের বলেছি জেনে বুঝে নিউজ করার জন্য। এ নিয়ে শুধু কথা কাটাকাটি হয়েছে।
মধ্যনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাইয়ূম মজনু বলেন, ওই সাংবাদিকের ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনাটি অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। আমরা এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাই। সংগঠনের কোনো নেতাকর্মীর অন্যায় বা অপরাধের দায়ভার দল নেবে না। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি।
জেলা যুবদলের সভাপতি আবুল মনসুর শওকত বলেন, আমি ঢাকাতে আছি।
মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সজীব রহমান বলেন, হামলা ও মারধরের ঘটনাটি শুনেছি। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে