সুনামগঞ্জ ০৭:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
জগন্নাথপুরে আওয়ামীলীগ নেতা সাজ্জাদ খান গ্রেফতার সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের যৌক্তিক সমাধানের জন্য শিবিরের স্মারকলিপি সুমেক শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার নিন্দা ও যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান শিবিরের নরসিংপুর সমাজ কল্যাণ সংস্থার ২০২৫ সেশনের কমিটি গঠন অধ্যক্ষ আলী নূরের সহধর্মিণীর মৃত্যু : বিভিন্ন মহলের শোক সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে সুজনের মানববন্ধন মধ্যনগরের বৌলাই নদীতে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার বিশ্বম্ভরপুরে গ্রাম উন্নয়ন ‘খাস কমিটি’র দুর্নীতি, প্রতিবাদে মানববন্ধন তাহিরপুর সীমান্তে পৌনে ৭ লক্ষ টাকার ভারতীয় ফুসকা জব্দ জগন্নাথপুর সাচায়ানী নন্দিরগাও গ্রামে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৮

শাবিপ্রবিতে শিবিরকে ফাঁসাতে অস্ত্র হাতে ছাত্রদলকর্মীর কাণ্ড, ব্যর্থ হয়ে চাইলেন ক্ষমা

আমার সুনামগঞ্জ ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:৫৫:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৫ ১১৪ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ছাত্রশিবিরের ইমেজ সংকট তৈরি ও ফাঁসাতে আক্রমণ করার ‘নাটক সাজিয়ে’ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে হুলুস্থূল কাণ্ড ঘটানোর অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রদলের এক কর্মীর বিরুদ্ধে।

রবিবার রাত সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরাণ হলের ৪৩৬ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

ছাত্রশিবিরকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ফাঁসানোর জন্য সংগঠনের পদপ্রত্যাশী এক নেতার নির্দেশে ওই ছাত্রদলকর্মী এ অপচেষ্টা করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

পরবর্তীতে ছাত্রশিবিরকে ‘খারাপভাবে’ উপস্থাপন করার জন্যই এ কাণ্ড ঘটনার কথাও স্বীকার করেছেন ওই ছাত্রদলকর্মী।

ঘটনাটি খতিয়ে দেখার জন্য তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

 

অভিযুক্ত ওই ছাত্রদলকর্মী শেখ ফাকাব্বির সিন শাবিপ্রবির সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সুরমা আবাসিক এলাকায় একটি মেসে থাকেন।

এ ছাড়া তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের পদপ্রত্যাশী নেতা ও পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাঈম সরকারের সমর্থক হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, আবাসিক শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীসূত্রে জানা যায়, হলের ওই কক্ষে আবাসিক শিক্ষার্থী হিসেবে সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের তিনজন শিক্ষার্থী থাকেন। রাত ১০টার দিকে হঠাৎ করেই ওই কক্ষে আসেন শেখ ফাকাব্বির সিন। তিনি কক্ষে আসলে পারস্পরিক কথাবার্তার পর তিনি চাকু দিয়ে ওই কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থীদের মারতে স্টেপ নেন।এক পর্যায়ে ওই কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থীরা বের হয়ে তাকে কক্ষে আটকিয়ে রাখেন।

রাত সাড়ে ১০টায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দিয়ে দাবি করেন যে, ‘আমি সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। হলে মেসের টাকা নিতে গেলে শিবিরের ছেলেপেলে আমাকে কুপিয়ে জখম করে রুমে আটকিয়ে রেখেছে।’
এই পরিস্থিতিতে হলের আবাসিক শিক্ষার্থী, প্রভোস্ট ও প্রক্টরিয়াল বডি গিয়ে তাকে কক্ষ থেকে বের করেন এবং ওই কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলকর্মীকে প্রক্টর কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। সেখানে উভয়পক্ষকে তিন ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ কর হয়।পরবর্তীতে রাত ২টা ৭ মিনিটে আরেক পোস্টে তিনি লিখেন, ‘রাত সাড়ে ১০টায় শিবিরকে জড়িয়ে আমি যে পোস্ট করেছি তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

এখানে ছাত্রশিবিরের সংশ্লিষ্টতা ছিল না এবং নির্যাতনও করা হয়নি। কিন্তু উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমি পোস্টটি করেছি। আমি এটা ছাত্রশিবিরকে সবার সামনে খারাপভাবে উপস্থাপন করার জন্য করেছি। অতএব আমার পোস্টটি আমি তুলে নিচ্ছি।’
এ বিষয়ে ৪৩৬ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী আমিরুল ইসলাম জানান, ‘গতকাল রাতে কেউ একজন নক না করে আমাদের রুমে প্রবেশ করে। প্রবেশের পর সে অভদ্র ভাষায় আমাদের সাথে কথা বলে। তার পরিচয় পেয়ে বুঝতে পারি সে আমাদের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের জুনিয়র। তাকে বলি কারোর রুমে প্রবেশ করলে ভদ্রভাবে কথা বলতে হয়। এ ছাড়া হাফ প্যান্ট পরে রুমে প্রবেশ করতে নিষেধ করি, উত্তরে তখন সে আমাকে গালি দিয়ে বলে ‘আমি এভাবেই কথা বলি তুই যা পারিস করিস।’তিনি বলেন, ‘এরপর তার সোয়েটারের ভেতরের পকেট থেকে ধারালো চাকু বের করে আমার গলায় ধরে এবং বলে তুই আমাকে চিনস আমি খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী। তখন নিজেকে রক্ষার জন্য তাকে ধাক্কা দেই এবং বের হয়ে বাইর থেকে রুম আটকিয়ে দিই। এরপর প্রক্টর স্যারকে জানালে গার্ডরা এসে বাকিদের উদ্ধার করেন।’

আমিরুল ইসলাম আরো জানান, ‘আমার রুমমেট সুষম শাহার কাছে তার মাদক সেবনের ভিডিও থাকায় এটি ডিলিট করতে মূলত সে হলে আসে।’

একই কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী আশিকুজ্জামান রাসেল বলেন, ‘আমিরুল নিজেকে বাঁচাতে বের হয়ে গেলে রুমে আমিসহ আরমান ও রাতিন আটকা পড়ে যাই। তখন ফাকাব্বির আমার গলার কাছে চাকু ধরে এবং ইউটিউব থেকে তার নিজের এলাকায় করা সন্ত্রাসী কার্যক্রমের ভিডিও দেখায়। এরপর সে নাঈম সরকার (ছাত্রদলনেতা) নামের একজনকে কল দেয় এবং বলে ভাই আমাকে শিবিবের পোলাপানরা ধরে আটকায় রাখছে।

আপনি না আসলে আমাকে বলেন, ‘আমি নিজের স্টাইলে তিনজনকে ফালায় দিয়ে বের হয়ে যাব।’ এরপর আমরা বের হয়ে গেলে সে নিজের উরুতে ছুরির আঁচড় দিয়ে আমাদের ওপর দোষ চাপিয়ে দেয় এবং ফেসবুকে পোস্ট করে। পরে স্যাররা এসে তাকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যায়।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি তারেক মনোয়ার বলেন, ‘গতকাল রাতে ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার জন্য মূলত কাজটি করা হয়েছে। ওই কক্ষে আমাদের কোনো কর্মীও নেই। আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার হলেও আমরা ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছি এবং সঠিক তদন্তের বিষয়ে প্রশাসনকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি। যে ছেলে পোস্টটি করেছেন তার পূর্বের ফেসবুক পোস্টগুলো দেখে বোঝা যায় সে ছাত্রদলকর্মী। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্তের আশা করি।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রদলের পদপ্রত্যাশী নেতা নাঈম সরকার বলেন, ‘ছেলেটা আমার পূর্ব পরিচিত। সে আমাকে কল দিয়ে বলছে ভাই শিবিরের পোলাপান আমাকে মারছে ও আটকিয়ে রাখছে। উত্তরে আমি বললাম, আমিতো সিলেট নেই ঢাকা চলে আসছি। যেহেতু আটকিয়ে রাখছে তোকে উদ্ধার করার প্রয়োজন। তার বন্ধুরা যাতে দেখতে পারে এজন্য তাকে ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দিতে বলি। তা ছাড়া আর কিছুই না।’

এ বিষয়ে ছাত্রদলকর্মী শেখ ফাকাব্বির সিনের সঙ্গে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করি এবং প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসি। ছাত্রশিবিরের জড়িতের বিষয়ে ছেলেটি যে অভিযোগ করেছে, সেই অভিযোগ সে তুলে নিয়েছে। পাশাপাশি ঘটনার তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠনের কাজ চলছে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

শাবিপ্রবিতে শিবিরকে ফাঁসাতে অস্ত্র হাতে ছাত্রদলকর্মীর কাণ্ড, ব্যর্থ হয়ে চাইলেন ক্ষমা

আপডেট সময় : ১২:৫৫:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৫

ছাত্রশিবিরের ইমেজ সংকট তৈরি ও ফাঁসাতে আক্রমণ করার ‘নাটক সাজিয়ে’ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে হুলুস্থূল কাণ্ড ঘটানোর অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রদলের এক কর্মীর বিরুদ্ধে।

রবিবার রাত সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরাণ হলের ৪৩৬ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

ছাত্রশিবিরকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ফাঁসানোর জন্য সংগঠনের পদপ্রত্যাশী এক নেতার নির্দেশে ওই ছাত্রদলকর্মী এ অপচেষ্টা করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

পরবর্তীতে ছাত্রশিবিরকে ‘খারাপভাবে’ উপস্থাপন করার জন্যই এ কাণ্ড ঘটনার কথাও স্বীকার করেছেন ওই ছাত্রদলকর্মী।

ঘটনাটি খতিয়ে দেখার জন্য তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

 

অভিযুক্ত ওই ছাত্রদলকর্মী শেখ ফাকাব্বির সিন শাবিপ্রবির সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সুরমা আবাসিক এলাকায় একটি মেসে থাকেন।

এ ছাড়া তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের পদপ্রত্যাশী নেতা ও পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাঈম সরকারের সমর্থক হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, আবাসিক শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীসূত্রে জানা যায়, হলের ওই কক্ষে আবাসিক শিক্ষার্থী হিসেবে সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের তিনজন শিক্ষার্থী থাকেন। রাত ১০টার দিকে হঠাৎ করেই ওই কক্ষে আসেন শেখ ফাকাব্বির সিন। তিনি কক্ষে আসলে পারস্পরিক কথাবার্তার পর তিনি চাকু দিয়ে ওই কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থীদের মারতে স্টেপ নেন।এক পর্যায়ে ওই কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থীরা বের হয়ে তাকে কক্ষে আটকিয়ে রাখেন।

রাত সাড়ে ১০টায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দিয়ে দাবি করেন যে, ‘আমি সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। হলে মেসের টাকা নিতে গেলে শিবিরের ছেলেপেলে আমাকে কুপিয়ে জখম করে রুমে আটকিয়ে রেখেছে।’
এই পরিস্থিতিতে হলের আবাসিক শিক্ষার্থী, প্রভোস্ট ও প্রক্টরিয়াল বডি গিয়ে তাকে কক্ষ থেকে বের করেন এবং ওই কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলকর্মীকে প্রক্টর কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। সেখানে উভয়পক্ষকে তিন ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ কর হয়।পরবর্তীতে রাত ২টা ৭ মিনিটে আরেক পোস্টে তিনি লিখেন, ‘রাত সাড়ে ১০টায় শিবিরকে জড়িয়ে আমি যে পোস্ট করেছি তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

এখানে ছাত্রশিবিরের সংশ্লিষ্টতা ছিল না এবং নির্যাতনও করা হয়নি। কিন্তু উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমি পোস্টটি করেছি। আমি এটা ছাত্রশিবিরকে সবার সামনে খারাপভাবে উপস্থাপন করার জন্য করেছি। অতএব আমার পোস্টটি আমি তুলে নিচ্ছি।’
এ বিষয়ে ৪৩৬ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী আমিরুল ইসলাম জানান, ‘গতকাল রাতে কেউ একজন নক না করে আমাদের রুমে প্রবেশ করে। প্রবেশের পর সে অভদ্র ভাষায় আমাদের সাথে কথা বলে। তার পরিচয় পেয়ে বুঝতে পারি সে আমাদের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের জুনিয়র। তাকে বলি কারোর রুমে প্রবেশ করলে ভদ্রভাবে কথা বলতে হয়। এ ছাড়া হাফ প্যান্ট পরে রুমে প্রবেশ করতে নিষেধ করি, উত্তরে তখন সে আমাকে গালি দিয়ে বলে ‘আমি এভাবেই কথা বলি তুই যা পারিস করিস।’তিনি বলেন, ‘এরপর তার সোয়েটারের ভেতরের পকেট থেকে ধারালো চাকু বের করে আমার গলায় ধরে এবং বলে তুই আমাকে চিনস আমি খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী। তখন নিজেকে রক্ষার জন্য তাকে ধাক্কা দেই এবং বের হয়ে বাইর থেকে রুম আটকিয়ে দিই। এরপর প্রক্টর স্যারকে জানালে গার্ডরা এসে বাকিদের উদ্ধার করেন।’

আমিরুল ইসলাম আরো জানান, ‘আমার রুমমেট সুষম শাহার কাছে তার মাদক সেবনের ভিডিও থাকায় এটি ডিলিট করতে মূলত সে হলে আসে।’

একই কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী আশিকুজ্জামান রাসেল বলেন, ‘আমিরুল নিজেকে বাঁচাতে বের হয়ে গেলে রুমে আমিসহ আরমান ও রাতিন আটকা পড়ে যাই। তখন ফাকাব্বির আমার গলার কাছে চাকু ধরে এবং ইউটিউব থেকে তার নিজের এলাকায় করা সন্ত্রাসী কার্যক্রমের ভিডিও দেখায়। এরপর সে নাঈম সরকার (ছাত্রদলনেতা) নামের একজনকে কল দেয় এবং বলে ভাই আমাকে শিবিবের পোলাপানরা ধরে আটকায় রাখছে।

আপনি না আসলে আমাকে বলেন, ‘আমি নিজের স্টাইলে তিনজনকে ফালায় দিয়ে বের হয়ে যাব।’ এরপর আমরা বের হয়ে গেলে সে নিজের উরুতে ছুরির আঁচড় দিয়ে আমাদের ওপর দোষ চাপিয়ে দেয় এবং ফেসবুকে পোস্ট করে। পরে স্যাররা এসে তাকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যায়।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি তারেক মনোয়ার বলেন, ‘গতকাল রাতে ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার জন্য মূলত কাজটি করা হয়েছে। ওই কক্ষে আমাদের কোনো কর্মীও নেই। আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার হলেও আমরা ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছি এবং সঠিক তদন্তের বিষয়ে প্রশাসনকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি। যে ছেলে পোস্টটি করেছেন তার পূর্বের ফেসবুক পোস্টগুলো দেখে বোঝা যায় সে ছাত্রদলকর্মী। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্তের আশা করি।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রদলের পদপ্রত্যাশী নেতা নাঈম সরকার বলেন, ‘ছেলেটা আমার পূর্ব পরিচিত। সে আমাকে কল দিয়ে বলছে ভাই শিবিরের পোলাপান আমাকে মারছে ও আটকিয়ে রাখছে। উত্তরে আমি বললাম, আমিতো সিলেট নেই ঢাকা চলে আসছি। যেহেতু আটকিয়ে রাখছে তোকে উদ্ধার করার প্রয়োজন। তার বন্ধুরা যাতে দেখতে পারে এজন্য তাকে ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দিতে বলি। তা ছাড়া আর কিছুই না।’

এ বিষয়ে ছাত্রদলকর্মী শেখ ফাকাব্বির সিনের সঙ্গে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করি এবং প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসি। ছাত্রশিবিরের জড়িতের বিষয়ে ছেলেটি যে অভিযোগ করেছে, সেই অভিযোগ সে তুলে নিয়েছে। পাশাপাশি ঘটনার তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠনের কাজ চলছে।