ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় ইনাওগারেশন: যুক্তরাষ্ট্রে নতুন অধ্যায়ের সূচনা

- আপডেট সময় : ০১:০০:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫ ৬৮ বার পড়া হয়েছে
ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় ইনাওগারেশন: যুক্তরাষ্ট্রে নতুন অধ্যায়ের সূচনা
২০ জানুয়ারি, ২০২৫ – যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো আজ। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ তার দ্বিতীয় ইনাওগারেশন উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন। এ ইনাওগারেশন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাজার হাজার মার্কিন নাগরিক, রাজনৈতিক নেতা, সেনাবাহিনীর সদস্য এবং অন্যান্য অতিথি।
প্রথমবার ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর, ট্রাম্প আবারও নির্বাচিত হওয়ার পর তার দ্বিতীয় ইনাওগারেশনটি মার্কিন রাজনীতির জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। যদিও তার শাসনামলে অনেক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, তবুও তিনি তার সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন।
ইনাওগারেশন অনুষ্ঠান: এক নজরে
আজকের ইনাওগারেশন অনুষ্ঠানটি ওয়াশিংটন ডিসির জাতীয় এলিপসের সামনে অনুষ্ঠিত হয়। বিপুল সংখ্যক সমর্থক, তার পরিবার এবং রাজনৈতিক দলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের আগে, কিছু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের পর, মার্কিন পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়, যা পুরো অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলের জন্য একটি আবেগপূর্ণ মুহূর্ত ছিল।
ট্রাম্প তার বক্তৃতায় জাতির প্রতি একতা এবং পুনর্গঠন নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, “আজকের দিনটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঐক্য পুনর্গঠনের প্রতীক। আমরা আবারও আমাদের দেশে শক্তিশালী, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ সমাজ গড়ে তুলব।” তিনি আমেরিকান কর্মসংস্থান, নিরাপত্তা, এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিয়ে তার সরকারের পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
এছাড়াও, ট্রাম্প অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিভাজন কমানোর এবং একজাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য তার শাসনামলে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা উল্লেখ করেন। তার ভাষণে ছিল বিদেশি শক্তির বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণের প্রতিশ্রুতি, বিশেষ করে চীনের সাথে বাণিজ্য সম্পর্ক এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী অবস্থান।
অবশ্যই বিতর্কিত প্রথম প্রেসিডেন্ট
ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রথম ইনাওগারেশন থেকে শুরু করে নানা ধরনের বিতর্কের মধ্যে পড়েছেন। তার শাসনামলে অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতি ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। একদিকে, তিনি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কম কর এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য প্রশংসিত হয়েছেন, তবে অন্যদিকে, তার কঠোর অভিবাসন নীতি, জাতিগত বৈষম্য এবং অনেক সময় বিতর্কিত মন্তব্য তাকে ব্যাপক সমালোচনার মুখে ফেলেছে।
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে, তার সমর্থকরা আশা করছেন যে, তিনি আরও শক্তিশালী পদক্ষেপ নেবেন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হতে। বিশেষত, তার দ্বিতীয় মেয়াদে অনেকেই মনে করছেন যে, তিনি আগের তুলনায় আরও অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলোর সমাধানে মনোযোগ দেবেন।
বিপরীতে বিরোধী পক্ষের প্রতিক্রিয়া
ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের পর, বিরোধী দলের নেতা ও সমর্থকরা কিছুটা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ডেমোক্রেটিক পার্টির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা ট্রাম্পের শাসনামলে নাগরিক স্বাধীনতা, গণতন্ত্র এবং পরিবেশের ওপর আক্রমণের বিষয়ে সতর্ক থাকবে। কিছু রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন, ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে আবারও যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক বিভাজন আরও তীব্র হতে পারে।
বিরোধী দলের সমালোচনা সত্ত্বেও, ট্রাম্পের সমর্থকরা আশা করছেন যে, তিনি জনগণের জন্য কাজ করবেন এবং দেশকে সংকটমুক্ত একটি শক্তিশালী জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবেন।
দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্পের চ্যালেঞ্জ
ট্রাম্পের দ্বিতীয় শাসনামল শুরু হয়েছে, কিন্তু সামনে রয়েছে একাধিক চ্যালেঞ্জ। তার প্রথম মেয়াদে যেসব অভ্যন্তরীণ এবং বৈশ্বিক সমস্যার সমাধান তিনি করতে পারেননি, তা পুনরায় তার সামনে আসতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি, করোনা মহামারির পরবর্তী সময় এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মধ্যে নতুন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে পারে।
তবে ট্রাম্পের রাজনৈতিক দক্ষতা এবং শক্তিশালী সমর্থকদের প্রভাব থেকে বোঝা যায় যে, তিনি যেকোনো পরিস্থিতিতে তার অবস্থান ধরে রাখার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আজকের ইনাওগারেশন মার্কিন রাজনীতির জন্য এক নতুন দিগন্তের সূচনা, যা আগামী চার বছরে কিভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে পরিচালিত করবে তা দেখার জন্য দেশের জনগণ এবং বিশ্ববাসী মুখিয়ে থাকবে।
আজকের দিনটি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে একটি বিশেষ দিন হিসেবে চিহ্নিত হবে। ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার শপথ নিয়ে শাসনভার গ্রহণ করেছেন, আর তার নেতৃত্বে দেশ কীভাবে এগিয়ে যাবে তা নিয়ে নানা আশাবাদ এবং উদ্বেগ রয়েছে।