ঢাকা ০৮:২১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

জেলা জামায়াতের বিক্ষোভ সমাবেশে তোফায়েল আহমেদ খান

অবিলম্বে নিবন্ধন ফেরত ও এটিএম আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দিতে হবে

এস এম মিজানুর রহমান:
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৬:১৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / 208
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তি ও সংগঠনের নিবন্ধন ফিরে পেতে সারাদেশের ন্যায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে সুনামগঞ্জ জেলা জামায়াত।

মঙ্গলবার (১৮) ফেব্রুয়ারি বিকালে শহরের ঐতিহ্য যাদুঘর প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে ক্ট্রাফিক পয়েন্টে বিক্ষোভ সমাবেশে মিলিত হয়।

জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট নুরুল আলমের সঞ্চালনায় মিছিল পরবর্তী সমাবেশে সভাপতির বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের আমীর উপাধ্যক্ষ মাওলানা তোফায়েল আহমেদ খান।

সভাপতির বক্তব্যে তোফায়েল আহমেদ খান বলেন,  দেশবাসী আশা করেছিল, চরম জুলুম-নির্যাতনের শিকার এটিএম আজহারুল ইসলাম স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশে মুক্তিলাভ করবেন। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের ৬ মাস ১০ দিন অতিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও তাকে মুক্তি দেওয়া হয়নি। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলের বিচারিক কার্যক্রমসমূহ সারাবিশ্বে বিতর্কিত, প্রশ্নবিদ্ধ ও প্রত্যাখ্যাত।

তিনি বলেন, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার বিগত ২০১১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারের পর রিমান্ডে নিয়ে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে ন্যূনতম চিকিৎসা সেবাটুকুও দেয়া হয়নি।

উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২০১২ সালে তিনি জামিনে মুক্তি লাভ করার পর নিজ বাসায় অবস্থানকালে পুলিশ তাঁর বাড়ি ঘেরাও করে রাখে।

জেলা আমীর বলেন, আওয়ামী সরকার দলীয় লোকদের দ্বারা তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও সাজানো সাক্ষ্য প্রদান করে। একজন সাক্ষী আদালতে বলেছেন যে, তিনি ৬ কিলোমিটার দূর থেকে এবং অপর আরেক সাক্ষী বলেছেন যে, তিনি ৩ কিলোমিটার দূর থেকে ঘটনা দেখেছেন।

সাক্ষীদের এই বক্তব্য অবাস্তব ও হাস্যকর। আরেকজন সাক্ষী নিজেকে আজহারুল ইসলামের ক্লাসমেট দাবি করে আদালতে তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন যার জন্ম কয়েক বছর পরে।

আদালতে উপস্থাপিত ডকুমেন্ট অনুযায়ী আজহারুল ইসলাম ১৯৬৮ সালে কারমাইকেল কলেজ ত্যাগ করেন। আর কথিত সাক্ষী ১৯৭০ সালে কারমাইকেল কলেজে ভর্তি হন। অতএব, আজহারুল ইসলামকে ওই সাক্ষী তাঁর ক্লাসমেট হওয়ার যে দাবি করেছেন, তা সর্বৈব মিথ্যা। এ ধরনের মিথ্যা সাক্ষ্যের ভিত্তিতে এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।

ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে তাকে এখনো আটক রাখায় জাতি বিস্মিত ও হতবাক। দেশবাসী স্বৈরাচারের কবল থেকে পরিপূর্ণভাবে মুক্তি চায়। অবিলম্বে আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান বক্তারা।

তিনি বলেন, ৫ আগষ্টের পর বিএনপির অনেক নেতাকর্মীরা মুক্তি পেয়েছেন। ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার আসামি লুৎফুজ্জামান বাবর মুক্তি পেয়েছেন। কিন্তু এখনো জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম মুক্তি পাননি। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তার দ্রুত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি, অন্যথায় দেশব্যাপী আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর এড. মুহাম্মদ শামস উদ্দিন, বাংলাদেশ শ্রমিককল্যাণ ফেডারেশন সুনামগঞ্জ জেলা সভাপতি মোমতাজুল হাসান আবেদ, সদর উপজেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক মুহাম্মদ আলী, সুনামগঞ্জ পৌর জামায়াতের আমীর আব্দুস সাত্তার মোঃ মামুন, ছাত্রশিবির জেলা সভাপতি মেহেদি হাসান তুহিন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস : আমার সুনামগঞ্জ | Amar Sunamganj

জেলা জামায়াতের বিক্ষোভ সমাবেশে তোফায়েল আহমেদ খান

অবিলম্বে নিবন্ধন ফেরত ও এটিএম আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দিতে হবে

আপডেট সময় : ০৯:৫৬:১৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তি ও সংগঠনের নিবন্ধন ফিরে পেতে সারাদেশের ন্যায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে সুনামগঞ্জ জেলা জামায়াত।

মঙ্গলবার (১৮) ফেব্রুয়ারি বিকালে শহরের ঐতিহ্য যাদুঘর প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে ক্ট্রাফিক পয়েন্টে বিক্ষোভ সমাবেশে মিলিত হয়।

জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট নুরুল আলমের সঞ্চালনায় মিছিল পরবর্তী সমাবেশে সভাপতির বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের আমীর উপাধ্যক্ষ মাওলানা তোফায়েল আহমেদ খান।

সভাপতির বক্তব্যে তোফায়েল আহমেদ খান বলেন,  দেশবাসী আশা করেছিল, চরম জুলুম-নির্যাতনের শিকার এটিএম আজহারুল ইসলাম স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশে মুক্তিলাভ করবেন। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের ৬ মাস ১০ দিন অতিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও তাকে মুক্তি দেওয়া হয়নি। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলের বিচারিক কার্যক্রমসমূহ সারাবিশ্বে বিতর্কিত, প্রশ্নবিদ্ধ ও প্রত্যাখ্যাত।

তিনি বলেন, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার বিগত ২০১১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারের পর রিমান্ডে নিয়ে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে ন্যূনতম চিকিৎসা সেবাটুকুও দেয়া হয়নি।

উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২০১২ সালে তিনি জামিনে মুক্তি লাভ করার পর নিজ বাসায় অবস্থানকালে পুলিশ তাঁর বাড়ি ঘেরাও করে রাখে।

জেলা আমীর বলেন, আওয়ামী সরকার দলীয় লোকদের দ্বারা তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও সাজানো সাক্ষ্য প্রদান করে। একজন সাক্ষী আদালতে বলেছেন যে, তিনি ৬ কিলোমিটার দূর থেকে এবং অপর আরেক সাক্ষী বলেছেন যে, তিনি ৩ কিলোমিটার দূর থেকে ঘটনা দেখেছেন।

সাক্ষীদের এই বক্তব্য অবাস্তব ও হাস্যকর। আরেকজন সাক্ষী নিজেকে আজহারুল ইসলামের ক্লাসমেট দাবি করে আদালতে তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন যার জন্ম কয়েক বছর পরে।

আদালতে উপস্থাপিত ডকুমেন্ট অনুযায়ী আজহারুল ইসলাম ১৯৬৮ সালে কারমাইকেল কলেজ ত্যাগ করেন। আর কথিত সাক্ষী ১৯৭০ সালে কারমাইকেল কলেজে ভর্তি হন। অতএব, আজহারুল ইসলামকে ওই সাক্ষী তাঁর ক্লাসমেট হওয়ার যে দাবি করেছেন, তা সর্বৈব মিথ্যা। এ ধরনের মিথ্যা সাক্ষ্যের ভিত্তিতে এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।

ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে তাকে এখনো আটক রাখায় জাতি বিস্মিত ও হতবাক। দেশবাসী স্বৈরাচারের কবল থেকে পরিপূর্ণভাবে মুক্তি চায়। অবিলম্বে আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান বক্তারা।

তিনি বলেন, ৫ আগষ্টের পর বিএনপির অনেক নেতাকর্মীরা মুক্তি পেয়েছেন। ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার আসামি লুৎফুজ্জামান বাবর মুক্তি পেয়েছেন। কিন্তু এখনো জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম মুক্তি পাননি। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তার দ্রুত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি, অন্যথায় দেশব্যাপী আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর এড. মুহাম্মদ শামস উদ্দিন, বাংলাদেশ শ্রমিককল্যাণ ফেডারেশন সুনামগঞ্জ জেলা সভাপতি মোমতাজুল হাসান আবেদ, সদর উপজেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক মুহাম্মদ আলী, সুনামগঞ্জ পৌর জামায়াতের আমীর আব্দুস সাত্তার মোঃ মামুন, ছাত্রশিবির জেলা সভাপতি মেহেদি হাসান তুহিন।