ঢাকা ১২:২২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ছাতকে চরম অবহেলা, ৫ মাস আগের মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন শরীরে দিল নার্স, জীবন সংকটে রোগী। তাহিরপুরে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের পাশে ভিডিপি সদস্যরা আট দলীয় জোটের লিয়াজো কমিটির বৈঠক  নাশকতার মামলায় ধর্মপাশায় আওয়ামী লীগ নেতার গ্রেপ্তার শেখ কামাল পাশা স্মৃতি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫ অনুষ্ঠিত ছাতকে মিলনের পক্ষে সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা এ কে এম রিপনের গণসংযোগ ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলা জামায়াতের যৌথ রুকন (সদস্য) সমাবেশ অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বাস্তবায়ন ও প্রশিক্ষণ হিট ফাউন্ডেশন সিলেট মহানগরীর সভাপতি দিলশাদ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক মোঃমুস্তাফিজুর রহমান দুর্নীতি রুখতে পারলে পাঁচ বছরেই সুনামগঞ্জের উন্নয়ন সম্ভব – তোফায়েল আহমদ খান পুনরায় আমীর নির্বাচিত ডা. শফিকুর রহমান

দায়িত্ব পালন না করেই বেতন ভোগ করেন CHCP আশরাফ উদ্দিন

সোহেল মিয়া, দোয়ারাবাজার প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৯:৩৩:৪৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / 609
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দায়িত্ব পালন না করে সরকারি বেতন ভাতা ভোগ করার অভিযোগ উঠেছে দোয়ারাবাজার উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (CHCP) আশরাফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে।

 

জানা যায়,  প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে দ্রুত সময়ের মধ্যে জরুরি চিকিৎসা সেবা দিতে দোয়ারগাঁও কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে এই ক্লিনিক প্রায়ই বন্ধ থাকে। ফলে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বালিউড়া, দোয়ারগাঁও, লাস্তবেরগাঁও, সানিয়া, বিচঙ্গেরগাঁও, মুকিরগাঁও, খালপাড়, নেতরছৈই, কালাপশি, রগারপাড় ও বৃটিশ এলাকাসহ ১৫টির ও বেশি গ্রামের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষের।

অথচ মা-শিশু ছাড়াও সাধারণ রোগের পাশাপাশি ক্যান্সারের স্কিনিং করার কথা এসব ক্লিনিক থেকে। রয়েছে রোগী রেফার করার পদ্ধতি। বিনামূল্যে দেয়া হয় ২৭টি জরুরি ওষুধ। কিন্তু এর কোনটিই নেই দোয়ারগাঁও কমিউনিটি ক্লিনিকে।

জানা গেছে, স্বাস্থ্যসেবা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ তৃণমূলে পৌঁছে দিতে সরকার কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করে। চাহিদা অনুযায়ী বছরে তিন থেকে চার বার ওষুধ সরবরাহ করা হয়ে থাকে এ ক্লিনিকে। সরকার ক্লিনিকে টাকা খরচ করলেও পর্যাপ্ত সেবা পাচ্ছে না এলাকাবাসী। জেলা বা উপজেলা থেকে তদারকি না থাকায় সিএইচসিপি, এইচএ, এফডব্লিউএ দায়সারাভাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

দোয়ারগাঁও কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি আশরাফ উদ্দিন বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে দলীয় ক্ষমতার প্রভাবে নিজের ইচ্ছে মতো ক্লিনিক পরিচালনা করলেও এখনো রয়েছে তার এই ধারাবাহিকতা। তার এই বেপরোয়া বিষয়গুলো যেনো দেখর মতো কেউ নেই।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা নেই দোয়ারাগাঁও কমিউনিটি ক্লিনিকে। কমিউনিটি ক্লিনিকে দায়িত্বরত সিএইচসিপি আশরাফুল উদ্দিন প্রতিমাসে ৩-৪ বার ক্লিনিকে আসেন। কোন সপ্তাহে একদিনও আসেন না। আসলেও ঔষধ দিতে নারাজ সেবাগ্রহীতাদের। বেতন না পাওয়ার অজুহাতে ফিরিয়ে দেন সেবা গ্রহিতাদের।

এতে সেবা নিতে আসা রোগীদের ফিরে যেতে হয় খালি হাতে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে কমিউনিটি ক্লিনিকের এমন বেহাল অবস্থার অভিযোগ এলাকাবাসীর।

সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী শুক্রবার ছাড়া সপ্তাহে ছয় দিন কমিউনিটি ক্লিনিক খোলা থাকার কথা। যেখানে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার ছাড়াও পর্যায়ক্রমে তিন দিন করে, স্বাস্থ্য সহকারী এবং পরিবার পরিকল্পনা সহকারীর চিকিৎসা দেয়ার কথা। ওই হিসেবে প্রতিদিন ক্লিনিকে দু’জনের সেবা প্রদান করার কথা। কিন্তু রোগীদের অভিযোগ, সপ্তাহর ৬ দিনই বন্ধ থাকে ক্লিনিক। ফলে সাধারণ মানুষজন এ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

সরেজমিনে সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি)
১১টায় ক্লিনিকে গেলে মূল ফটকে তালা ঝুলতে দেখা যায়। এসময় স্থানীয় কয়েকজন পুরুষ ও মহিলাকে চিকিৎসা সেবা ছাড়াি চলে যেতে দেখা যায়।

তারা জানান সিএইচসিপি আশরাফ উদ্দিন প্রায়ই আসেন না। এতে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসা লোকজনকে  ফেরৎ যেতে হয়। মাঝে মধ্যে ক্লিনিক খোলা থাকলেও আশরাফ উদ্দিনকে পাওয়া যায়না।

 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে দোয়ারগাঁও কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি আশরাফ উদ্দিনের মোবাইল একাধিকবার কল করা হলেও রিসিভ করেন নি।

জানতে চাইলে দোয়ারগাঁও কমিউনিটি ক্লিনিকের
(CG কমিটির) সভাপতি ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদ জানান,সপ্তাহের প্রায়সময় ক্লিনিক বন্ধ পাওয়া যায়। আমি কোনদিন ক্লিনিক খোলা থাকতে দেখিনি।

সিএইচসিপি আশরাফ উদ্দিনকে একাধিকবার বললেও কোন পরিবর্তন পাওয়া যায় নি।

দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু সালেহীন খান বলেন, ‘আশরাফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের ফলে হয়তো বেতন পেতে একটু দেরি হচ্ছে, তাই বলে তিনি ক্লিনিক বন্ধ রাখতে পারেন না। এবিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস : আমার সুনামগঞ্জ | Amar Sunamganj

দায়িত্ব পালন না করেই বেতন ভোগ করেন CHCP আশরাফ উদ্দিন

আপডেট সময় : ০৯:৩৩:৪৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

দায়িত্ব পালন না করে সরকারি বেতন ভাতা ভোগ করার অভিযোগ উঠেছে দোয়ারাবাজার উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (CHCP) আশরাফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে।

 

জানা যায়,  প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে দ্রুত সময়ের মধ্যে জরুরি চিকিৎসা সেবা দিতে দোয়ারগাঁও কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে এই ক্লিনিক প্রায়ই বন্ধ থাকে। ফলে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বালিউড়া, দোয়ারগাঁও, লাস্তবেরগাঁও, সানিয়া, বিচঙ্গেরগাঁও, মুকিরগাঁও, খালপাড়, নেতরছৈই, কালাপশি, রগারপাড় ও বৃটিশ এলাকাসহ ১৫টির ও বেশি গ্রামের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষের।

অথচ মা-শিশু ছাড়াও সাধারণ রোগের পাশাপাশি ক্যান্সারের স্কিনিং করার কথা এসব ক্লিনিক থেকে। রয়েছে রোগী রেফার করার পদ্ধতি। বিনামূল্যে দেয়া হয় ২৭টি জরুরি ওষুধ। কিন্তু এর কোনটিই নেই দোয়ারগাঁও কমিউনিটি ক্লিনিকে।

জানা গেছে, স্বাস্থ্যসেবা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ তৃণমূলে পৌঁছে দিতে সরকার কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করে। চাহিদা অনুযায়ী বছরে তিন থেকে চার বার ওষুধ সরবরাহ করা হয়ে থাকে এ ক্লিনিকে। সরকার ক্লিনিকে টাকা খরচ করলেও পর্যাপ্ত সেবা পাচ্ছে না এলাকাবাসী। জেলা বা উপজেলা থেকে তদারকি না থাকায় সিএইচসিপি, এইচএ, এফডব্লিউএ দায়সারাভাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

দোয়ারগাঁও কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি আশরাফ উদ্দিন বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে দলীয় ক্ষমতার প্রভাবে নিজের ইচ্ছে মতো ক্লিনিক পরিচালনা করলেও এখনো রয়েছে তার এই ধারাবাহিকতা। তার এই বেপরোয়া বিষয়গুলো যেনো দেখর মতো কেউ নেই।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা নেই দোয়ারাগাঁও কমিউনিটি ক্লিনিকে। কমিউনিটি ক্লিনিকে দায়িত্বরত সিএইচসিপি আশরাফুল উদ্দিন প্রতিমাসে ৩-৪ বার ক্লিনিকে আসেন। কোন সপ্তাহে একদিনও আসেন না। আসলেও ঔষধ দিতে নারাজ সেবাগ্রহীতাদের। বেতন না পাওয়ার অজুহাতে ফিরিয়ে দেন সেবা গ্রহিতাদের।

এতে সেবা নিতে আসা রোগীদের ফিরে যেতে হয় খালি হাতে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে কমিউনিটি ক্লিনিকের এমন বেহাল অবস্থার অভিযোগ এলাকাবাসীর।

সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী শুক্রবার ছাড়া সপ্তাহে ছয় দিন কমিউনিটি ক্লিনিক খোলা থাকার কথা। যেখানে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার ছাড়াও পর্যায়ক্রমে তিন দিন করে, স্বাস্থ্য সহকারী এবং পরিবার পরিকল্পনা সহকারীর চিকিৎসা দেয়ার কথা। ওই হিসেবে প্রতিদিন ক্লিনিকে দু’জনের সেবা প্রদান করার কথা। কিন্তু রোগীদের অভিযোগ, সপ্তাহর ৬ দিনই বন্ধ থাকে ক্লিনিক। ফলে সাধারণ মানুষজন এ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

সরেজমিনে সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি)
১১টায় ক্লিনিকে গেলে মূল ফটকে তালা ঝুলতে দেখা যায়। এসময় স্থানীয় কয়েকজন পুরুষ ও মহিলাকে চিকিৎসা সেবা ছাড়াি চলে যেতে দেখা যায়।

তারা জানান সিএইচসিপি আশরাফ উদ্দিন প্রায়ই আসেন না। এতে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসা লোকজনকে  ফেরৎ যেতে হয়। মাঝে মধ্যে ক্লিনিক খোলা থাকলেও আশরাফ উদ্দিনকে পাওয়া যায়না।

 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে দোয়ারগাঁও কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি আশরাফ উদ্দিনের মোবাইল একাধিকবার কল করা হলেও রিসিভ করেন নি।

জানতে চাইলে দোয়ারগাঁও কমিউনিটি ক্লিনিকের
(CG কমিটির) সভাপতি ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদ জানান,সপ্তাহের প্রায়সময় ক্লিনিক বন্ধ পাওয়া যায়। আমি কোনদিন ক্লিনিক খোলা থাকতে দেখিনি।

সিএইচসিপি আশরাফ উদ্দিনকে একাধিকবার বললেও কোন পরিবর্তন পাওয়া যায় নি।

দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু সালেহীন খান বলেন, ‘আশরাফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের ফলে হয়তো বেতন পেতে একটু দেরি হচ্ছে, তাই বলে তিনি ক্লিনিক বন্ধ রাখতে পারেন না। এবিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।