সুনামগঞ্জ ০৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ট্রাইবেকারে জিতে থ্রি ব্রাদার্স স্পোর্টিং ক্লাব ফাইনালে শান্তিগঞ্জে যুবলীগ নেতা শহীদ মিয়া গ্রেফতার দোয়ারায় সুরমা ইউনিয়নে উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শন তাহিরপুরে ইভটিজিংয়ের শিকার এসএসসি পরীক্ষার্থী মাথা ও হাতে আঘাত পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছাতক সিমেন্ট কোম্পানির সিবিএ সভাপতি গ্রেফতার দিলসাদ কালাম হাজেরা বালিকা বিদ্যালয়ের ভূমিদাতা কুমুদ চন্দ্র তালুকদারের সংবর্ধনা সড়ক অবরোধ করে সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির বৈঠক আজ বুধবার লন্ডনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে ডা. শফিকুর রহমানের সাক্ষাৎ ইসরাইলিদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করলো মালদ্বীপ

দোয়ারাবাজারে প্রকাশ্যে চলছে ফসলি জমির মাটি বিক্রি

সোহেল মিয়া, দোয়ারাবাজার প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৫:২৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ৩০৭ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দোয়ারাবাজার উপজেলায় প্রশাসনের নাকের ডগায় ফসলি জমির মাটি বিক্রির হিড়িক পড়েছে। উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা প্রতিদিন এই এলাকার পাশ দিয়ে চলাচল করলেও চোখে পড়ছেনা কারই।

ভেকু মেশিনে কাটা হচ্ছে এসব মাটি। এই মাটির বেশিরভাগই যাচ্ছে ভিটা ভরাটের কাজে। মাটি পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রলি ও ট্রাক চলাচলের ফলে ধ্বংস হচ্ছে কাঁচা-পাকা সড়ক। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে উপজেলাবাসিদের। জমির ধরণ পরিবর্তনের ফলে ব্যহত হচ্ছে ফসল উৎপাদন।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার সদরের টেবলাই এলাকা থেকে শুরু করে নরসিংপুর ইউনিয়নের বিচঙ্গেরগাঁও পর্যন্ত মেইন সড়কের দু’পাশের প্রায় শতাধিক ফসলি মাঠ থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। আর এসব মাটি সড়কের পাশে বিল্ডিং নির্মাণের ভিটা ভরাটে ব্যবহার হচ্ছে।

অসাধু চক্রের প্ররোচনায় কৃষকরা তিন ফসলি জমির মাটি বিক্রি করছে। প্রতিবছর ভেকু দিয়ে জমির মাটি কেটে বিক্রি করায় ফসলি জমি গর্ত হয়ে যাচ্ছে, এতে ফসল উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে।

দোয়ারাবাজার সদর থেকে নরসিংপুর ও বাংলাবাজার ইউনিয়নে যাতায়াতের প্রধান সড়কের পাশে ফসলি জমি থেকে অবাধে এসব মাটি বিক্রির হিড়িক চললেও নিরব উপজেলা প্রশাসন। এই এলাকার পাশ দিয়ে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা প্রতিনিয়তো আসা-যাওয়া করলেও আমলে নিচ্ছেন না বিষয়টি।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, শুধু দোয়ারাবাজার ইউনিয়নের টেবলাই, মতির দোকান, নরসিংপুর ইউনিয়নের বিহঙ্গের গাঁও এলাকায় নয়, নরসিংপুর ইউনিয়নের দ্বীনেরটুক, সুনাইত্যা, বাংলাবাজার, সুরমা ও বোগলাবাজার ইউনিয়নেও একই অবস্থা দেখা গেছে।

কৃষি পণ্য উৎপাদনে এ উপজেলার সুনাম থাকলেও প্রতিবছরই শুষ্ক মৌসুম এলেই ফসলি জমি থেকে মাটি কাটার হিড়িক পড়ে যায়। ফসলি জমির উর্বর মাটি কেটে বিক্রি করার ফলে এক দিকে কমছে ফসলি জমি, অন্যদিকে ব্যাহত ফসল উৎপাদন। সেই সাথে মাটি বহনের ট্রাকের কারণে ধ্বংস করা হচ্ছে কাঁচা পাকা রাস্তা ঘাট। ফসলি জমির মাটি বিক্রি ও মাটি কেটে ফসলি জমি ধ্বংস করা নিষিদ্ধ থাকলেও তা মানছেন না প্রভাবশালীরা।
বিভিন্ন স্থানে এসব মাটি বিক্রি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নরসিংপুর ইউনিয়নের বিচঙ্গের গাঁও এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘যারা মাটি কেটে বিক্রি করছে তারা প্রভাবশালী। তাই তাদেরকে কেউ কিছু বলতে ভয় পায়। এতে পুরো রাস্তা ঘাট ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।’

দোয়ারাবাজার ইউনিয়নের টেবলাই এলাকার কয়েকজন চাষি জানান, ফসলি জমি থেকে প্রতি বছর মাটি বিক্রি করে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। কারোর নিষেধ মানে না। প্রভাব দেখিয়ে বিভিন্ন স্থান থেকে তারা মাটি কাটে। এতে ফসলি জমি কমছে, ব্যাহত হচ্ছে ফসল উৎপাদন। ট্রাকে মাটি বহন করার কারণে রাস্তাঘাট নষ্ট হচ্ছে। প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো সমাধান হচ্ছে না। এসব রাস্তা ঘাট ও ফসলি জমি রক্ষা করতে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

এবিষয়ে জানতে চাইলে দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নেহের নিগার তনু জানান, ফসলি বা যেকোনো আবাদী জমির উপরি ভাগের (টপ সয়েল) বা মাটি বিক্রি কিংবা মাটি কাটা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। টেবলাই এলাকায় মাটি কাটার বিষয়টি আমরা দেখবো।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

দোয়ারাবাজারে প্রকাশ্যে চলছে ফসলি জমির মাটি বিক্রি

আপডেট সময় : ০৫:২৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

দোয়ারাবাজার উপজেলায় প্রশাসনের নাকের ডগায় ফসলি জমির মাটি বিক্রির হিড়িক পড়েছে। উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা প্রতিদিন এই এলাকার পাশ দিয়ে চলাচল করলেও চোখে পড়ছেনা কারই।

ভেকু মেশিনে কাটা হচ্ছে এসব মাটি। এই মাটির বেশিরভাগই যাচ্ছে ভিটা ভরাটের কাজে। মাটি পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রলি ও ট্রাক চলাচলের ফলে ধ্বংস হচ্ছে কাঁচা-পাকা সড়ক। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে উপজেলাবাসিদের। জমির ধরণ পরিবর্তনের ফলে ব্যহত হচ্ছে ফসল উৎপাদন।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার সদরের টেবলাই এলাকা থেকে শুরু করে নরসিংপুর ইউনিয়নের বিচঙ্গেরগাঁও পর্যন্ত মেইন সড়কের দু’পাশের প্রায় শতাধিক ফসলি মাঠ থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। আর এসব মাটি সড়কের পাশে বিল্ডিং নির্মাণের ভিটা ভরাটে ব্যবহার হচ্ছে।

অসাধু চক্রের প্ররোচনায় কৃষকরা তিন ফসলি জমির মাটি বিক্রি করছে। প্রতিবছর ভেকু দিয়ে জমির মাটি কেটে বিক্রি করায় ফসলি জমি গর্ত হয়ে যাচ্ছে, এতে ফসল উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে।

দোয়ারাবাজার সদর থেকে নরসিংপুর ও বাংলাবাজার ইউনিয়নে যাতায়াতের প্রধান সড়কের পাশে ফসলি জমি থেকে অবাধে এসব মাটি বিক্রির হিড়িক চললেও নিরব উপজেলা প্রশাসন। এই এলাকার পাশ দিয়ে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা প্রতিনিয়তো আসা-যাওয়া করলেও আমলে নিচ্ছেন না বিষয়টি।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, শুধু দোয়ারাবাজার ইউনিয়নের টেবলাই, মতির দোকান, নরসিংপুর ইউনিয়নের বিহঙ্গের গাঁও এলাকায় নয়, নরসিংপুর ইউনিয়নের দ্বীনেরটুক, সুনাইত্যা, বাংলাবাজার, সুরমা ও বোগলাবাজার ইউনিয়নেও একই অবস্থা দেখা গেছে।

কৃষি পণ্য উৎপাদনে এ উপজেলার সুনাম থাকলেও প্রতিবছরই শুষ্ক মৌসুম এলেই ফসলি জমি থেকে মাটি কাটার হিড়িক পড়ে যায়। ফসলি জমির উর্বর মাটি কেটে বিক্রি করার ফলে এক দিকে কমছে ফসলি জমি, অন্যদিকে ব্যাহত ফসল উৎপাদন। সেই সাথে মাটি বহনের ট্রাকের কারণে ধ্বংস করা হচ্ছে কাঁচা পাকা রাস্তা ঘাট। ফসলি জমির মাটি বিক্রি ও মাটি কেটে ফসলি জমি ধ্বংস করা নিষিদ্ধ থাকলেও তা মানছেন না প্রভাবশালীরা।
বিভিন্ন স্থানে এসব মাটি বিক্রি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নরসিংপুর ইউনিয়নের বিচঙ্গের গাঁও এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘যারা মাটি কেটে বিক্রি করছে তারা প্রভাবশালী। তাই তাদেরকে কেউ কিছু বলতে ভয় পায়। এতে পুরো রাস্তা ঘাট ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।’

দোয়ারাবাজার ইউনিয়নের টেবলাই এলাকার কয়েকজন চাষি জানান, ফসলি জমি থেকে প্রতি বছর মাটি বিক্রি করে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। কারোর নিষেধ মানে না। প্রভাব দেখিয়ে বিভিন্ন স্থান থেকে তারা মাটি কাটে। এতে ফসলি জমি কমছে, ব্যাহত হচ্ছে ফসল উৎপাদন। ট্রাকে মাটি বহন করার কারণে রাস্তাঘাট নষ্ট হচ্ছে। প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো সমাধান হচ্ছে না। এসব রাস্তা ঘাট ও ফসলি জমি রক্ষা করতে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

এবিষয়ে জানতে চাইলে দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নেহের নিগার তনু জানান, ফসলি বা যেকোনো আবাদী জমির উপরি ভাগের (টপ সয়েল) বা মাটি বিক্রি কিংবা মাটি কাটা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। টেবলাই এলাকায় মাটি কাটার বিষয়টি আমরা দেখবো।