ঢাকা ০২:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সুনামগঞ্জ ১ আসনের জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত এমপির পথসভা জনসভায় পরিণত বিশ্বম্ভরপুরে তাহিয়া একাডেমির আয়োজনে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প সুনামগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন দৌড়: মাঠে সরব সম্ভাব্য প্রার্থীরা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে ইসলামী আন্দোলনের মানববন্ধন হাওরাঞ্চলে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে আমূল পরিবর্তন  করা হবে-   তোফায়েল আহমদ খান তাহিরপুরে ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশ এর প্রকল্প অবহিতকরণ সভা সম্পন্ন সুনামগঞ্জে নতুন সিম কেনার সময় অভিনব প্রতারণার ফাঁদ, সতর্ক থাকুন তাহিরপুরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানববন্ধন জামায়াত নির্বাচিত হলে ছাতক-দোয়ারায় মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করব:: দোয়ারাবাজারে মাও. সালাম মাদানি পিআর ছাড়া নির্বাচন হলে দেশ চাঁদাবাজের আড্ডাখানা হবে : পীর সাহেব চরমোনাই

নেতাদের_দ্বিচারিতা

নকিবুল ইসলাম সুমন
  • আপডেট সময় : ০১:৫৩:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫
  • / 227
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

২০১৯ সালে ডাকসু নির্বাচনে আগ মূহুর্তে ছাত্রলীগের প্যানেলে নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে অনেকেই দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছিল। আমিও তার ব্যতিক্রম ছিলাম না। যেহেতু আমি সাবেক চীফ হুইপের বাইরে খুব একটা কাউকে মেইন্টেন করতাম না সেহেতু তাকে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আমার ইচ্ছের কথা জানালাম। তিনি প্রথমে আমাকে বললেন তুমি সিভি নিয়ে আখতারুজ্জামান (সাবেক ভিপি ও জিএস, ডাকসু) ও নাসিম মামার সাথে দেখা করে আমার কথা বলো। (বলে রাখা ভালো ডাকসুর নির্বাচনের প্যানেল ঠিক করার যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাদের মধ্যে নাসিম ভাই, আখতারুজ্জামানও দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন।)

আখতারুজ্জামান সাহেবের সাথে দেখা করে সিভি দিতে পারলেও বাহাউদ্দীন নাসিম ভাইয়ের সাথে দেখা করে চীফ হুইপের কথা বলার পরে তেমন একটা গুরুত্ব দিলেন না। এর মধ্যে লিটন ভাই ৩ দিনের জন্যে চলে গেছেন থাইল্যান্ডে। তখন মুনির চৌধুরী (সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, মাদারীপুর) দাদাকে গিয়ে বিস্তারিত বললাম, তিনি শুনে নাসিম ভাইকে কল দিয়ে আমার কথা বললেন। মুনির দাদাকে তিনি কি বলেছেন জানি না তবে মুনির দাদা আমাকে বললো দুইটা দিন ওয়েট করো চীফ হুইপ আসুক।

এর মধ্যে আমি লিটন ভাইকে একটা মেসেজ দিয়ে রেখেছিলাম যে ৩/৪ দিনের মধ্যে প্যানেল হয়ত ঠিক হয়ে যাবে সম্ভব হলে আপনি একটু নাসিম ভাই, নানক ভাই ওনাদের কাউকে একটু বলে দিয়েন অন্যথায় ওনারা ওনাদের মাইম্যানের বাইরে কাউকে রাখবে বলে মনে হচ্ছে না।

লিটন ভাই দেশে এসে সাথে সাথে আমাকে কল দিয়ে বললেন নাসিম মামাকে বলে দিছি তুমি গিয়ে দেখা করো। তার ঠিক ১০ মিনিট পরে খায়রুল হাসান জুয়েল ভাই কল দিয়ে বললেন তোকে নাসিম ভাই খুঁজে তুই সিভি নিয়ে দ্রুত দেখা কর। তার ঠিক ৫/৭ মিনিট পরে নাসিম ভাই আমাকে কল দিয়ে জিজ্ঞেস করলো তোমার নাম সুমন? বললাম জ্বী ভাই। বললো দ্রুত একটা সিভি নিয়ে আসো আমার বাসায়।
ঠিক ১ টার সময় তার বাসায় গেলাম, গিয়ে দেখি মেহেদি ভাই (সাবেক সভাপতি, ঢাবি ছাত্রলীগ) বসা। তাকে দেখে মনের জোরটা একটু বেড়ে গেলো কারণ তার পিছনেও প্রায় ৪ বছর রাজনীতি করেছি।

নাসিম ভাইকে আমার সিভিটা দিলাম (উল্লেখ্য : সিভিতে আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদ প্রত্যাশি লিখা ছিল)। তিনি সিভিটা হাতে নিয়ে খুলে দেখে বললেন ও তুমি উপ-দপ্তর সম্পাদক ছিলা! তার মানে লিয়াকত সিকদারের লোক। একটু হতচকিত হয়ে বললাম ভাই বুঝি নাই। তিনি একটু রাগান্বিত কণ্ঠে বললেন এখন তো বুঝবা না, তোমার চেহেরার সাথেও লিয়াকত সিকদারের চেহেরায় মিল আছে। তখন আর বুঝতে বাকি নাই তিনি আমাকে তাদের অপছন্দের লোক লিয়াকত সিকদার ভাইয়ের ট্যাগ দিতে চাচ্ছেন।

তাকে বললাম ভাই আমি ক্যাম্পাসে বিগত ৯ বছর রাজনীতি করেছি, সূর্যসেন হলের ক্যান্ডিডেটও ছিলাম তার স্বীকৃতি স্বরুপ উপ-সম্পাদক পেয়েছি। আর আমার দুই বছরের জুনিয়ররাও ফুল সম্পাদক ছিলো। আমার সাথে যদি লিয়াকত সিকদারের ভালো সম্পর্ক থাকতো তাহলে আমি আরো বড় কোন পদ হোল্ড করতাম। তিনি তখন বললেন এইসব আমাকে বুঝাতে আইসো না দপ্তর, উপ-দপ্তর এসব পদ লিয়াকত সিকদার তার ঘরের লোক ছাড়া কাউকে দেয় না।

তার কথাবার্তা শুনে মনে হচ্ছিলো তিনি আগে থেকেই প্লান করে রেখেছিলেন আমাকে কোন একটা ট্যাগ দিবেন। তখন অবশ্য মনে মনে মেহেদি ভাইয়ের সাপোর্ট আশা করছিলাম কিন্তু তিনি এতোটাই নির্জীব ছিলেন একটা টু শব্দও করছিলেন না। বললাম ভাই আমি মেহেদি ভাইয়ের সাথেও প্রায় ৪ বছর রাজনীতি করেছি তাকেও জিজ্ঞেস করে দেখতে পারেন। তখনও মেহেদি ভাই চুপচাপ। তখন একরকম বাধ্য হয়ে বললাম ভাই, আমাকে লিয়াকত সিকদারের ট্যাগ দিচ্ছেন অথচ মেহেদি ভাইকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি বানাইছে লিয়াকত সিকদার, সে এখন আপনার লোক। মেহেদি ভাইকে দিয়েই লিয়াকত সিকদারকে একটা কল দেওয়ান দেখেন আমাকে ভালো করে চিনে কিনা। আর এই বিষয়টা এমনভাবে হাইলাইটস করতেছেন ভাই মনে হচ্ছে লিয়াকত সিকদার লিটন ভাইয়ের থেকে বড় নেতা। যেখানে লিটন ভাই কল দিয়ে আপনাকে বলেছে সেখানে আপনি লিয়াকত সিকদারের বিষয়টা বারে বারে টানতেছেন এটা খুবি দুঃখজনক।

এরপর তিনি প্রসঙ্গ চেঞ্জ করে বললেন তোমার সাবজেক্ট হচ্ছে ট্যুরিজম, আন্তর্জাতিক সম্পাদক দিয়ে তুমি কি করবা? উত্তরে বললাম ভাই ২০১৬ সালের দিকে ২৫টা দেশের বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির ভিসি এবং তাদের প্রতিনিধিদের নিয়ে আমাদের ডিপার্টমেন্ট কনফারেন্স আয়োজন করেছিলো সেখানে আমি স্যারদের সাথে কাজ করেছিলাম, আর ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ইন্ডাস্ট্রিটা গ্লোবালি চেইন আকারে কাজ করে৷ তিনি আমার উত্তরে খুব বেশি সন্তুষ্ট হলেন না। এরপর তিনি বললেন আর কোন সম্পাদক? বললাম ভাই ক্রিয়া অথবা সমাজসেবা। বললেন সমাজসেবা দেওয়া হয়ে গেছে। তখন বললাম ভাই আপনার যেটা ইচ্ছে দিয়েন তবে যেকোন একটা সম্পাদকই দিয়েন।

নিচে নামার পরে মেহেদি ভাই আমাকে খুব রাগারাগি করেছিলেন কেন আমি তাকে লিয়াকত সিকদারের লোক বললাম।

যাই হোক দুইদিন পরে যখন আবার দেখা করতে গেলাম তখন তিনি আমাকে জানালেন আমাকে ডাকসুতে রাখা সম্ভব না কিন্তু তিনি আমাকে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদ দিবেন। বুঝলাম এটাও একটা ট্রাপ। সাথে সাথে কল দিয়ে আমি লিটন ভাইকে জানালাম। তিনি একটু অবাক হয়ে বললেন কেনো নাছিম মামা তো আমাকে কথা দিয়েছিলো যে তোমাকে ডাকসুতে রাখবে। দাঁড়াও আমি কথা বলে দেখছি। এরপর আবার নাসিম ভাই আমাকে কল দিয়ে বললো এই ছেলে তুমি আবার লিটনকে কেন জানাইতে গেছো আমি তো তোমাকে বললাম তোমাকে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ভালো পদ দিবো।

ডাকসুতে জাতীয় ৪ নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো অথচ পরিতাপের বিষয় কেউই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রই ছিলেন না। আব্দুর রহমান ভাই তো ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল না মৈত্রী হলের ফার্স্ট ইয়ারের এক মেয়েকে হলের নমিনেশন দিয়ে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছিলো। তখন বন্ধু বুলবুল তো একদিন কল দিয়ে বলতেছিলো ভাই একটা কচি ছাগল পাওয়া গেছে *** করবেন নাকি! এটা শুনে তো হাসতে হাসতে শেষ। এই হলো আমাদের নেতাদের চরিত্র ও খাসলত।

বানরের রুটি ভাগের মত করে নেতাদের এসব কমিটি ভাগবাটোয়ারা ছাত্রলীগকে দুর্বল থেকে দুর্বলতর করে দিয়েছিলো।

এরপর পূর্ণাঙ্গ কমিটি হলো সেখানেও আমার নাম নাই৷ অবশ্য আমার মত ১৩/১৪ টা হলের প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারি, কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক প্রায় ২০ টা সম্পাদক, আর আমাদের মত উপ-সম্পাদক, সহ-সম্পাদক তো ভুরি ভুরি বাদ পরেছিলো। তবে এমন অনেকে ভাইস, সাংগঠনিক, সম্পাদক হয়েছিলো যারা কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পাওয়ার যোগ্যতা রাখে কিনা এটাও নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিলো। দুইজনতো পদ পেয়েছিলো যেটা ছিল তাদের জীবনের প্রথম পদ।

যার ফলস্বরূপ শুরু হলো বিতর্কমুক্ত ছাত্রলীগ গড়ার আন্দোলন টানা ৪২ দিন। এই আন্দোলনে অন্য অনেকের মত আমার একটা রোল ছিল যেকারণে প্রায়শ সিনিয়র নেতারা আমাকে ফোন করে হুমকি ধামকি দিতেন। একদিন নাছিম ভাই কল দিয়ে আমাকে বিভিন্ন ভাবে থ্রেড, ভয়ভীতি দেখানো শুরু করলেন, আমাকে ডিবি দিয়ে তুলে নিয়ে যাবেন, আমার বাড়ি কোথায় সব খোঁজ খবর তিনি নিয়েছেন ইত্যাদি ইত্যাদি। প্রতিত্তোরে বলছিলাম ভাই ছাত্রলীগের কর্মীদের ক্লাসিফিকেশন করলে নুরুল হক নুর ছাত্রলীগের ৩য় শ্রেনীর কর্মী, তাকেই যখন কিছু করতে পারেন নাই আর আমি নিজেকে প্রথম শ্রেনীর কর্মী ভাবি, আর আমার বাড়িও আপনার জেলায় মাদারীপুরে, আমি ২৪ ঘণ্টায় প্রায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে থাকি। সমস্যা নাই আমাকে তুলে নিয়ে যাইয়েন। আর আমার ফোনে অটো রেকর্ডার দেওয়া আপনি যে কল দিয়ে আমাকে থ্রেড করতেছেন সেটাও ভাই রেকর্ড হয়ে গেছে। আমি একটু পরে মিডিয়াতে এই রেকর্ড দিয়ে দিবো। যদিও এটা ছিল মিথ্যা কথা আদৌতে আমার ফোনে কোন রেকর্ডার ছিল না। এরপর যতদিন কথা বলতে গেছি ততদিন প্রায় জিজ্ঞেস করতো রেকর্ড করছি কিনা।

আন্দোলনের শুরুর দিন সারারাত গুড়িগুড়ি বৃষ্টির মধ্যে ভিজে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বসেছিলাম, আবার ঐদিনই শুরু হয়েছিল পবিত্র রমজান মাস। দুই চারজন হলে গিয়ে সেহেরি খাইতে পারলেও আমরা ম্যাক্সিমাম সেটা পারিনি। তাই ছোট ভাই জয় আর টিপুকে পাঠিয়েছিলাম কোথাও থেকে খাবার নিয়ে আসতে, একসাথে ৫০/৬০ জন মানুষের জন্যে কোথাও রেডিমেট খাবার পাচ্ছিলো না। পরে ওরা বনানী কোন একটা রেস্টুরেন্টে থেকে খাবার এনেছিল (সম্পূর্ণ খাবারের বিল জয় বহন করেছিলো)। কিন্তু খাবার নিয়ে আসতে আসতে সেহেরি পার হয়ে যায়, যেকারণে জয়ের গাড়িতে বসে ৪/৫ করে আলাদা আলাদা খাওয়া ছাড়া ভিন্ন কোন উপায় ছিল না। ঠিক এই সময়ের ছবি বা ভিডিও করে কেউ হয়ত নাছিম ভাই, নানক ভাইদের দিয়েছিলো। প্রথমে ওনারা ভাবছে এটা লিয়াকত সিকদারের গাড়ি, সে খাবার পাঠাইছে। পরে খোঁজ নিয়ে দেখে এটা গজারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যানের (জয়ের বাবা) গাড়ি। আংকেল খুবি ভদ্র মানুষ তিনি এসব কিছু জানতেন না। কিন্তু আংকেলকে কল দিয়ে নাছিম ভাই যা ইচ্ছে তাই ব্যবহার করেছে, এভেন তার রাজনীতি খেয়ে দিবে এই টাইপেরও হুমকি ধামকি দিয়েছেন। আংকেল খুবি কষ্ট পেয়ে জয়কে না করেছিলো আন্দোলনে আর না আসতে। কিন্তু এরপরও জয় আসতো তবে আগের মত আর গাড়ি নিয়ে আসেতো না, আসতো রিক্সো যোগে।

আন্দোলন চলাকালীন আরেকদিন নাছিম ভাই তার বাসায় ডেকেছিলেন, আমি, রাকিব হোসেন, আশরাফুল ইসলাম জয় গিয়েছিলাম কথা বলতে। সেদিন তিনি খুবি বাজে আচরণ করেছিলেন। তার প্রথম কথাটা ছিল ঠিক এইরকম হেমায়াতুল্লাহ আওরাঙ্গ, মহসিন মন্টুর উত্তরসূরী তোমরা, তাদের অর্থে আন্দলোন করতেছো এটা কি আমরা বুঝি না। প্রতিত্তোরে বলেছিলাম ভাই এদের কাউকে চিনি না শুধু নামই শুনেছি। আর যতদুর জানি আওরাঙ্গ সাহেব মারা গেছেন, মহসিন মন্টু ওনাকে তো চিনিই না তারা কিভাবে টাকা দিবে? তিনি উত্তরে বললেন এইগুলো তো বুঝবা না, তাদের টাকা আসে লিয়াকত সিকদারের কাছে আর সে দেয় তোমাদের। পুরো বলদ হবার মত অবস্থা। এরপর বললাম ভাই আপনি ভুল বুঝতেছেন আন্দোলনের টাকা কেউ দিচ্ছে না আপনি ক্রস চেক করে যদি প্রমাণ করতে পারেন আন্দোলনতো দুরের কথা আপনারা যা করতে বলবেন তাই করবো। শুধু শুধু ব্লেইম দিয়েন না। নেত্রী আপনাদের দায়িত্ব দিয়েছে আমাদের মধ্যে এই ডিভাইডেশান কইরেন না প্লিজ। অতীতে কাদের স্যার, নানক ভাই, লিয়াকত ভাইয়েরা ছাত্রলীগ দেখতো তাদের কাছে সবায় যাইতো পদ পজিশানের জন্যে, এভেন আজকে যারা শীর্ষ নেতা হইছে তারাও যাইতো। এখন নেত্রী আপনাদেরকে দায়িত্ব দিছে সবাই আপনাদের কাছেই আসবে। আপনারা যদি এভাবে আমাদের ডিভাইড করে দেন, মিসবিহেভ করেন তাহলে ভাই আমরা যাবো কোথায়? এরপর ওনি আমাদের আর কোন কথা না শুনেই একপ্রকার ঘাড়ধাক্কা দেবার মত করেই বের করে দিলেন।

এরপর আন্দোলন চলাকালীন সময়ে আমার বিরুদ্ধে লিটন ভাইয়ের কাছে ২/৩ বার বলেছেন যাতে লিটন ভাই আমার বিচার করেন অথবা আমাকে স্টপ করে দেন। কিন্তু লিটন ভাই সব ঘটনা শোনার পরে তিনি আমাকে একটা কথাই বলেছিলেন তোমাদের আন্দোলন যৌক্তিক, আমি মিডিয়াতে দেখেছি, তোমাদের বক্তব্যও শুনছি। আন্দোলন করো তবে নেত্রী এবং পার্টির যেন বদনাম না হয় সেটা মাথায় রাইখো।

শেখ হাসিনা ভরসা করে তার দলের সব থেকে পোড়খাওয়া লোকগুলোকেই দায়িত্ব দিয়েছেন কিন্তু সেই তারাই দায়িত্ব পেয়ে নিজের ইচ্ছেমতো পকেট কমিটি করেছেন, অযোগ্য তোষামোদিকারীদের স্থান দিয়েছেন, কেউ এইগুলো নিয়ে কথা বলতে গেলে যা তা ব্যবহার করেছেন।

তবে একটা বিষয় সত্য যে নাছিম ভাই যাদের পছন্দ করতেন তাদেরকে তিনি প্রোভাইড করতেন। তাকে সবাই স্ট্রেট ফরোয়ার্ড লোক হিসাবেই জানতো তবে আমাদের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার পরে তাকে আমার অনেকটা বিবেচকহীন মনে হয়েছে। তবে এটা সত্য তিনি রাখঢাক না রেখে মনের কথাগুলো অকপটে বলে ফেলতেন। এক্ষেত্রে জাহাঙ্গীর কবির নানক ভাইকে মনে হয়েছে পুরো উল্টো ধাঁচের লোক….(চলবে)

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, ঢাবি

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস : আমার সুনামগঞ্জ | Amar Sunamganj

নেতাদের_দ্বিচারিতা

আপডেট সময় : ০১:৫৩:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫

২০১৯ সালে ডাকসু নির্বাচনে আগ মূহুর্তে ছাত্রলীগের প্যানেলে নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে অনেকেই দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছিল। আমিও তার ব্যতিক্রম ছিলাম না। যেহেতু আমি সাবেক চীফ হুইপের বাইরে খুব একটা কাউকে মেইন্টেন করতাম না সেহেতু তাকে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আমার ইচ্ছের কথা জানালাম। তিনি প্রথমে আমাকে বললেন তুমি সিভি নিয়ে আখতারুজ্জামান (সাবেক ভিপি ও জিএস, ডাকসু) ও নাসিম মামার সাথে দেখা করে আমার কথা বলো। (বলে রাখা ভালো ডাকসুর নির্বাচনের প্যানেল ঠিক করার যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাদের মধ্যে নাসিম ভাই, আখতারুজ্জামানও দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন।)

আখতারুজ্জামান সাহেবের সাথে দেখা করে সিভি দিতে পারলেও বাহাউদ্দীন নাসিম ভাইয়ের সাথে দেখা করে চীফ হুইপের কথা বলার পরে তেমন একটা গুরুত্ব দিলেন না। এর মধ্যে লিটন ভাই ৩ দিনের জন্যে চলে গেছেন থাইল্যান্ডে। তখন মুনির চৌধুরী (সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, মাদারীপুর) দাদাকে গিয়ে বিস্তারিত বললাম, তিনি শুনে নাসিম ভাইকে কল দিয়ে আমার কথা বললেন। মুনির দাদাকে তিনি কি বলেছেন জানি না তবে মুনির দাদা আমাকে বললো দুইটা দিন ওয়েট করো চীফ হুইপ আসুক।

এর মধ্যে আমি লিটন ভাইকে একটা মেসেজ দিয়ে রেখেছিলাম যে ৩/৪ দিনের মধ্যে প্যানেল হয়ত ঠিক হয়ে যাবে সম্ভব হলে আপনি একটু নাসিম ভাই, নানক ভাই ওনাদের কাউকে একটু বলে দিয়েন অন্যথায় ওনারা ওনাদের মাইম্যানের বাইরে কাউকে রাখবে বলে মনে হচ্ছে না।

লিটন ভাই দেশে এসে সাথে সাথে আমাকে কল দিয়ে বললেন নাসিম মামাকে বলে দিছি তুমি গিয়ে দেখা করো। তার ঠিক ১০ মিনিট পরে খায়রুল হাসান জুয়েল ভাই কল দিয়ে বললেন তোকে নাসিম ভাই খুঁজে তুই সিভি নিয়ে দ্রুত দেখা কর। তার ঠিক ৫/৭ মিনিট পরে নাসিম ভাই আমাকে কল দিয়ে জিজ্ঞেস করলো তোমার নাম সুমন? বললাম জ্বী ভাই। বললো দ্রুত একটা সিভি নিয়ে আসো আমার বাসায়।
ঠিক ১ টার সময় তার বাসায় গেলাম, গিয়ে দেখি মেহেদি ভাই (সাবেক সভাপতি, ঢাবি ছাত্রলীগ) বসা। তাকে দেখে মনের জোরটা একটু বেড়ে গেলো কারণ তার পিছনেও প্রায় ৪ বছর রাজনীতি করেছি।

নাসিম ভাইকে আমার সিভিটা দিলাম (উল্লেখ্য : সিভিতে আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদ প্রত্যাশি লিখা ছিল)। তিনি সিভিটা হাতে নিয়ে খুলে দেখে বললেন ও তুমি উপ-দপ্তর সম্পাদক ছিলা! তার মানে লিয়াকত সিকদারের লোক। একটু হতচকিত হয়ে বললাম ভাই বুঝি নাই। তিনি একটু রাগান্বিত কণ্ঠে বললেন এখন তো বুঝবা না, তোমার চেহেরার সাথেও লিয়াকত সিকদারের চেহেরায় মিল আছে। তখন আর বুঝতে বাকি নাই তিনি আমাকে তাদের অপছন্দের লোক লিয়াকত সিকদার ভাইয়ের ট্যাগ দিতে চাচ্ছেন।

তাকে বললাম ভাই আমি ক্যাম্পাসে বিগত ৯ বছর রাজনীতি করেছি, সূর্যসেন হলের ক্যান্ডিডেটও ছিলাম তার স্বীকৃতি স্বরুপ উপ-সম্পাদক পেয়েছি। আর আমার দুই বছরের জুনিয়ররাও ফুল সম্পাদক ছিলো। আমার সাথে যদি লিয়াকত সিকদারের ভালো সম্পর্ক থাকতো তাহলে আমি আরো বড় কোন পদ হোল্ড করতাম। তিনি তখন বললেন এইসব আমাকে বুঝাতে আইসো না দপ্তর, উপ-দপ্তর এসব পদ লিয়াকত সিকদার তার ঘরের লোক ছাড়া কাউকে দেয় না।

তার কথাবার্তা শুনে মনে হচ্ছিলো তিনি আগে থেকেই প্লান করে রেখেছিলেন আমাকে কোন একটা ট্যাগ দিবেন। তখন অবশ্য মনে মনে মেহেদি ভাইয়ের সাপোর্ট আশা করছিলাম কিন্তু তিনি এতোটাই নির্জীব ছিলেন একটা টু শব্দও করছিলেন না। বললাম ভাই আমি মেহেদি ভাইয়ের সাথেও প্রায় ৪ বছর রাজনীতি করেছি তাকেও জিজ্ঞেস করে দেখতে পারেন। তখনও মেহেদি ভাই চুপচাপ। তখন একরকম বাধ্য হয়ে বললাম ভাই, আমাকে লিয়াকত সিকদারের ট্যাগ দিচ্ছেন অথচ মেহেদি ভাইকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি বানাইছে লিয়াকত সিকদার, সে এখন আপনার লোক। মেহেদি ভাইকে দিয়েই লিয়াকত সিকদারকে একটা কল দেওয়ান দেখেন আমাকে ভালো করে চিনে কিনা। আর এই বিষয়টা এমনভাবে হাইলাইটস করতেছেন ভাই মনে হচ্ছে লিয়াকত সিকদার লিটন ভাইয়ের থেকে বড় নেতা। যেখানে লিটন ভাই কল দিয়ে আপনাকে বলেছে সেখানে আপনি লিয়াকত সিকদারের বিষয়টা বারে বারে টানতেছেন এটা খুবি দুঃখজনক।

এরপর তিনি প্রসঙ্গ চেঞ্জ করে বললেন তোমার সাবজেক্ট হচ্ছে ট্যুরিজম, আন্তর্জাতিক সম্পাদক দিয়ে তুমি কি করবা? উত্তরে বললাম ভাই ২০১৬ সালের দিকে ২৫টা দেশের বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির ভিসি এবং তাদের প্রতিনিধিদের নিয়ে আমাদের ডিপার্টমেন্ট কনফারেন্স আয়োজন করেছিলো সেখানে আমি স্যারদের সাথে কাজ করেছিলাম, আর ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ইন্ডাস্ট্রিটা গ্লোবালি চেইন আকারে কাজ করে৷ তিনি আমার উত্তরে খুব বেশি সন্তুষ্ট হলেন না। এরপর তিনি বললেন আর কোন সম্পাদক? বললাম ভাই ক্রিয়া অথবা সমাজসেবা। বললেন সমাজসেবা দেওয়া হয়ে গেছে। তখন বললাম ভাই আপনার যেটা ইচ্ছে দিয়েন তবে যেকোন একটা সম্পাদকই দিয়েন।

নিচে নামার পরে মেহেদি ভাই আমাকে খুব রাগারাগি করেছিলেন কেন আমি তাকে লিয়াকত সিকদারের লোক বললাম।

যাই হোক দুইদিন পরে যখন আবার দেখা করতে গেলাম তখন তিনি আমাকে জানালেন আমাকে ডাকসুতে রাখা সম্ভব না কিন্তু তিনি আমাকে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদ দিবেন। বুঝলাম এটাও একটা ট্রাপ। সাথে সাথে কল দিয়ে আমি লিটন ভাইকে জানালাম। তিনি একটু অবাক হয়ে বললেন কেনো নাছিম মামা তো আমাকে কথা দিয়েছিলো যে তোমাকে ডাকসুতে রাখবে। দাঁড়াও আমি কথা বলে দেখছি। এরপর আবার নাসিম ভাই আমাকে কল দিয়ে বললো এই ছেলে তুমি আবার লিটনকে কেন জানাইতে গেছো আমি তো তোমাকে বললাম তোমাকে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ভালো পদ দিবো।

ডাকসুতে জাতীয় ৪ নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো অথচ পরিতাপের বিষয় কেউই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রই ছিলেন না। আব্দুর রহমান ভাই তো ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল না মৈত্রী হলের ফার্স্ট ইয়ারের এক মেয়েকে হলের নমিনেশন দিয়ে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছিলো। তখন বন্ধু বুলবুল তো একদিন কল দিয়ে বলতেছিলো ভাই একটা কচি ছাগল পাওয়া গেছে *** করবেন নাকি! এটা শুনে তো হাসতে হাসতে শেষ। এই হলো আমাদের নেতাদের চরিত্র ও খাসলত।

বানরের রুটি ভাগের মত করে নেতাদের এসব কমিটি ভাগবাটোয়ারা ছাত্রলীগকে দুর্বল থেকে দুর্বলতর করে দিয়েছিলো।

এরপর পূর্ণাঙ্গ কমিটি হলো সেখানেও আমার নাম নাই৷ অবশ্য আমার মত ১৩/১৪ টা হলের প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারি, কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক প্রায় ২০ টা সম্পাদক, আর আমাদের মত উপ-সম্পাদক, সহ-সম্পাদক তো ভুরি ভুরি বাদ পরেছিলো। তবে এমন অনেকে ভাইস, সাংগঠনিক, সম্পাদক হয়েছিলো যারা কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পাওয়ার যোগ্যতা রাখে কিনা এটাও নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিলো। দুইজনতো পদ পেয়েছিলো যেটা ছিল তাদের জীবনের প্রথম পদ।

যার ফলস্বরূপ শুরু হলো বিতর্কমুক্ত ছাত্রলীগ গড়ার আন্দোলন টানা ৪২ দিন। এই আন্দোলনে অন্য অনেকের মত আমার একটা রোল ছিল যেকারণে প্রায়শ সিনিয়র নেতারা আমাকে ফোন করে হুমকি ধামকি দিতেন। একদিন নাছিম ভাই কল দিয়ে আমাকে বিভিন্ন ভাবে থ্রেড, ভয়ভীতি দেখানো শুরু করলেন, আমাকে ডিবি দিয়ে তুলে নিয়ে যাবেন, আমার বাড়ি কোথায় সব খোঁজ খবর তিনি নিয়েছেন ইত্যাদি ইত্যাদি। প্রতিত্তোরে বলছিলাম ভাই ছাত্রলীগের কর্মীদের ক্লাসিফিকেশন করলে নুরুল হক নুর ছাত্রলীগের ৩য় শ্রেনীর কর্মী, তাকেই যখন কিছু করতে পারেন নাই আর আমি নিজেকে প্রথম শ্রেনীর কর্মী ভাবি, আর আমার বাড়িও আপনার জেলায় মাদারীপুরে, আমি ২৪ ঘণ্টায় প্রায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে থাকি। সমস্যা নাই আমাকে তুলে নিয়ে যাইয়েন। আর আমার ফোনে অটো রেকর্ডার দেওয়া আপনি যে কল দিয়ে আমাকে থ্রেড করতেছেন সেটাও ভাই রেকর্ড হয়ে গেছে। আমি একটু পরে মিডিয়াতে এই রেকর্ড দিয়ে দিবো। যদিও এটা ছিল মিথ্যা কথা আদৌতে আমার ফোনে কোন রেকর্ডার ছিল না। এরপর যতদিন কথা বলতে গেছি ততদিন প্রায় জিজ্ঞেস করতো রেকর্ড করছি কিনা।

আন্দোলনের শুরুর দিন সারারাত গুড়িগুড়ি বৃষ্টির মধ্যে ভিজে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বসেছিলাম, আবার ঐদিনই শুরু হয়েছিল পবিত্র রমজান মাস। দুই চারজন হলে গিয়ে সেহেরি খাইতে পারলেও আমরা ম্যাক্সিমাম সেটা পারিনি। তাই ছোট ভাই জয় আর টিপুকে পাঠিয়েছিলাম কোথাও থেকে খাবার নিয়ে আসতে, একসাথে ৫০/৬০ জন মানুষের জন্যে কোথাও রেডিমেট খাবার পাচ্ছিলো না। পরে ওরা বনানী কোন একটা রেস্টুরেন্টে থেকে খাবার এনেছিল (সম্পূর্ণ খাবারের বিল জয় বহন করেছিলো)। কিন্তু খাবার নিয়ে আসতে আসতে সেহেরি পার হয়ে যায়, যেকারণে জয়ের গাড়িতে বসে ৪/৫ করে আলাদা আলাদা খাওয়া ছাড়া ভিন্ন কোন উপায় ছিল না। ঠিক এই সময়ের ছবি বা ভিডিও করে কেউ হয়ত নাছিম ভাই, নানক ভাইদের দিয়েছিলো। প্রথমে ওনারা ভাবছে এটা লিয়াকত সিকদারের গাড়ি, সে খাবার পাঠাইছে। পরে খোঁজ নিয়ে দেখে এটা গজারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যানের (জয়ের বাবা) গাড়ি। আংকেল খুবি ভদ্র মানুষ তিনি এসব কিছু জানতেন না। কিন্তু আংকেলকে কল দিয়ে নাছিম ভাই যা ইচ্ছে তাই ব্যবহার করেছে, এভেন তার রাজনীতি খেয়ে দিবে এই টাইপেরও হুমকি ধামকি দিয়েছেন। আংকেল খুবি কষ্ট পেয়ে জয়কে না করেছিলো আন্দোলনে আর না আসতে। কিন্তু এরপরও জয় আসতো তবে আগের মত আর গাড়ি নিয়ে আসেতো না, আসতো রিক্সো যোগে।

আন্দোলন চলাকালীন আরেকদিন নাছিম ভাই তার বাসায় ডেকেছিলেন, আমি, রাকিব হোসেন, আশরাফুল ইসলাম জয় গিয়েছিলাম কথা বলতে। সেদিন তিনি খুবি বাজে আচরণ করেছিলেন। তার প্রথম কথাটা ছিল ঠিক এইরকম হেমায়াতুল্লাহ আওরাঙ্গ, মহসিন মন্টুর উত্তরসূরী তোমরা, তাদের অর্থে আন্দলোন করতেছো এটা কি আমরা বুঝি না। প্রতিত্তোরে বলেছিলাম ভাই এদের কাউকে চিনি না শুধু নামই শুনেছি। আর যতদুর জানি আওরাঙ্গ সাহেব মারা গেছেন, মহসিন মন্টু ওনাকে তো চিনিই না তারা কিভাবে টাকা দিবে? তিনি উত্তরে বললেন এইগুলো তো বুঝবা না, তাদের টাকা আসে লিয়াকত সিকদারের কাছে আর সে দেয় তোমাদের। পুরো বলদ হবার মত অবস্থা। এরপর বললাম ভাই আপনি ভুল বুঝতেছেন আন্দোলনের টাকা কেউ দিচ্ছে না আপনি ক্রস চেক করে যদি প্রমাণ করতে পারেন আন্দোলনতো দুরের কথা আপনারা যা করতে বলবেন তাই করবো। শুধু শুধু ব্লেইম দিয়েন না। নেত্রী আপনাদের দায়িত্ব দিয়েছে আমাদের মধ্যে এই ডিভাইডেশান কইরেন না প্লিজ। অতীতে কাদের স্যার, নানক ভাই, লিয়াকত ভাইয়েরা ছাত্রলীগ দেখতো তাদের কাছে সবায় যাইতো পদ পজিশানের জন্যে, এভেন আজকে যারা শীর্ষ নেতা হইছে তারাও যাইতো। এখন নেত্রী আপনাদেরকে দায়িত্ব দিছে সবাই আপনাদের কাছেই আসবে। আপনারা যদি এভাবে আমাদের ডিভাইড করে দেন, মিসবিহেভ করেন তাহলে ভাই আমরা যাবো কোথায়? এরপর ওনি আমাদের আর কোন কথা না শুনেই একপ্রকার ঘাড়ধাক্কা দেবার মত করেই বের করে দিলেন।

এরপর আন্দোলন চলাকালীন সময়ে আমার বিরুদ্ধে লিটন ভাইয়ের কাছে ২/৩ বার বলেছেন যাতে লিটন ভাই আমার বিচার করেন অথবা আমাকে স্টপ করে দেন। কিন্তু লিটন ভাই সব ঘটনা শোনার পরে তিনি আমাকে একটা কথাই বলেছিলেন তোমাদের আন্দোলন যৌক্তিক, আমি মিডিয়াতে দেখেছি, তোমাদের বক্তব্যও শুনছি। আন্দোলন করো তবে নেত্রী এবং পার্টির যেন বদনাম না হয় সেটা মাথায় রাইখো।

শেখ হাসিনা ভরসা করে তার দলের সব থেকে পোড়খাওয়া লোকগুলোকেই দায়িত্ব দিয়েছেন কিন্তু সেই তারাই দায়িত্ব পেয়ে নিজের ইচ্ছেমতো পকেট কমিটি করেছেন, অযোগ্য তোষামোদিকারীদের স্থান দিয়েছেন, কেউ এইগুলো নিয়ে কথা বলতে গেলে যা তা ব্যবহার করেছেন।

তবে একটা বিষয় সত্য যে নাছিম ভাই যাদের পছন্দ করতেন তাদেরকে তিনি প্রোভাইড করতেন। তাকে সবাই স্ট্রেট ফরোয়ার্ড লোক হিসাবেই জানতো তবে আমাদের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার পরে তাকে আমার অনেকটা বিবেচকহীন মনে হয়েছে। তবে এটা সত্য তিনি রাখঢাক না রেখে মনের কথাগুলো অকপটে বলে ফেলতেন। এক্ষেত্রে জাহাঙ্গীর কবির নানক ভাইকে মনে হয়েছে পুরো উল্টো ধাঁচের লোক….(চলবে)

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, ঢাবি