সুনামগঞ্জ ০৩:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫, ২৭ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

বিগত বছরের তুলনায় অনেক নিরাপত্তায় গঙ্গাস্নান পালিত, দাবি ভক্তবৃন্দের

যাদুকাটার তীরে হিন্দু ধর্মালম্বীদের শান্তিপুর্ণ পনতীর্থ বা গঙ্গাস্নান সম্পন্ন

এস এম মিজানুর রহমান :
  • আপডেট সময় : ০৬:০৫:০১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫ ৯১ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
  • তাহিরপুর সীমান্তবর্তী যাদুকাটা নদীর তীরে উৎসব মুখর পরিবেশে হিন্দু ধর্মালম্বীদের সর্ব বৃহৎ  পনতীর্থ বা গঙ্গাস্নান সমাপ্ত হয়েছ।

বাদাঘাট ইউনিয়ন রাজারগাঁও গ্রাম(পনাতীর্থ বা গঙ্গাস্নান)সংলগ্ন যাদুকাটা নদীতে (২৬)মার্চ রাত থেকে ২৭ মার্চ রাত ৯টার মধ্যে পণতীর্থ গঙ্গাস্নান মহাবারুণী মেলা রাজারগাও সংলগ্ন শ্রী শ্রী অদ্বৈত জন্মধামের সন্নিকটে প্রবাহিত যাদুকাটা নদীতে অনুষ্ঠিত হয়।

জানা যায়, কালের কড়াল গ্রাসে অদ্ধৈত বাড়ী ও তার নির্মিত আশ্রম যাদুকাটা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে! যা নব্যগ্রাম নামে খ্যাত ছিল। দেশ বিদেশ হতে বহু ভক্ত অনুসারীগণ পুণ্যার্থীরা এখানে আসেন পুণ্য স্থানের উদ্দেশ্য।

উল্লেখ্য যে, ১৫১৬ খ্রিস্টাব্দে এই পণতীর্থের সূচনা করেন শ্রীমান অদ্বৈত আচার্য্য। মানুষ তাঁকে গৌরআনা ঠাকুর বলে জানে!তাঁর জন্মস্থান তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের নবগ্রামে। নদী ভাঙনে নবগ্রাম আজ বিলীন! সে সময় নবগ্রামের অবস্থান ছিল লাউড় রাজ্যের লাউড়েরগড় এলাকায়। বর্তমানে যে মন্দির গড়ে উঠেছে যাদুকাটা নদীর তীরবর্তী লাউড়েরগড়ের পার্শ্ববর্তী রাজারগাঁও গ্রামে।

সার্বিক বিষয়ে আমার সুনামগঞ্জ ডটকমকে জানান শ্রী অদ্বৈত রায়

সিলেট,হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জসহ দেশ বিদেশের  লাখো লাখো ভক্তবৃন্ধের আগমনে গঙ্গাস্নান মিলন মেলায় পরিনত হয়।
আগমন ঘটে শিশু,নারী,পুরুষসহ অগনিত ভক্তগনের।

হবিগঞ্জ থেকে গঙ্গাস্নানে আসা বাদল রায় আমার সুনামগঞ্জ ডটকমকে জানান, বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার অনেক সু শৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণভাবে স্নান সম্পুর্ন করতে পারছি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও সার্বিক নিরাপত্তা ছিল দেখার মত।

সুদূর বি-বাড়িয়া থেকে স্ব পরিবারে আসা দিপালী প্রতিবেদককে জানান, আসার সময় অনেক ভয় কাজ করছিল সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে, কিন্তু সুনামগঞ্জ শহর থেকে যাদুকাটা পর্যন্ত আমরা নির্বিঘ্নে পূণ্য স্নান করতে পেরেছি এজন্য তাহিরপুরবাসী সহ সবার প্রতি কৃতজ্ঞ।

অদ্বৈত্য প্রভু জন্মধামের পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অদৈত্ব রায় আমার সুনামগঞ্জ ডটকমকে জানান,গাঙ্গা স্নানের মাধ্যমে হিন্দুধর্মালম্বীরা মা,বাবা,স্ত্রী-সন্তান নিয়ে তাদের সারা বছরের পাপ মোচনসহ পুণ্য লাভের জন্য আসেন।

প্রতি বছর চৈত্র মাসের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশীতে পুণ্যস্নানের জন্য এই স্থানে কয়েক লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটে। এখানে ভক্তরা স্নান ও তর্পণ করেন। এই পণতীর্থ প্রতি বছর একবারই হয়ে থাকে। এই দিন ও ক্ষণের জন্য ভক্তরা অধীর আগ্রহে থাকেন পুরো বছর।

সকলের সার্বিক সহযোগিতায় গাঙ্গা স্নান সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও উপজেলা প্রশাসন সহ তাহিরপুরের অনেক রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সার্বক্ষনিক আমাদের পাশে ছিলেন এবং সার্বিক খোজ খবর নিয়েছেন।

তিনি আরো জানান,বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ভক্তবৃন্দ ছিল অনেক বেশি এবং অত্যন্ত নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার সাথে সবাই স্নান করতে পেরেছে। এজন্য তিনি শ্রী শ্রী অদ্বৈত জন্মধাম কেন্দ্রীয় পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে সকলকে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন ।

তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ দেলোয়ার হোসেন জানান,পনাতীর্থ এলাকায় আসা-যাওয়ার পথে সকল প্রকার অনিয়ম রোধ ও আইনশৃংখলা বজায় রাখার জন্য  আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সব সময় তৎপর ছিল।

সর্বোচ্চ শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তায় তাদের পূণ্যস্নান সম্পন্ন করতে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের পাশে ছিল

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

বিগত বছরের তুলনায় অনেক নিরাপত্তায় গঙ্গাস্নান পালিত, দাবি ভক্তবৃন্দের

যাদুকাটার তীরে হিন্দু ধর্মালম্বীদের শান্তিপুর্ণ পনতীর্থ বা গঙ্গাস্নান সম্পন্ন

আপডেট সময় : ০৬:০৫:০১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫
  • তাহিরপুর সীমান্তবর্তী যাদুকাটা নদীর তীরে উৎসব মুখর পরিবেশে হিন্দু ধর্মালম্বীদের সর্ব বৃহৎ  পনতীর্থ বা গঙ্গাস্নান সমাপ্ত হয়েছ।

বাদাঘাট ইউনিয়ন রাজারগাঁও গ্রাম(পনাতীর্থ বা গঙ্গাস্নান)সংলগ্ন যাদুকাটা নদীতে (২৬)মার্চ রাত থেকে ২৭ মার্চ রাত ৯টার মধ্যে পণতীর্থ গঙ্গাস্নান মহাবারুণী মেলা রাজারগাও সংলগ্ন শ্রী শ্রী অদ্বৈত জন্মধামের সন্নিকটে প্রবাহিত যাদুকাটা নদীতে অনুষ্ঠিত হয়।

জানা যায়, কালের কড়াল গ্রাসে অদ্ধৈত বাড়ী ও তার নির্মিত আশ্রম যাদুকাটা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে! যা নব্যগ্রাম নামে খ্যাত ছিল। দেশ বিদেশ হতে বহু ভক্ত অনুসারীগণ পুণ্যার্থীরা এখানে আসেন পুণ্য স্থানের উদ্দেশ্য।

উল্লেখ্য যে, ১৫১৬ খ্রিস্টাব্দে এই পণতীর্থের সূচনা করেন শ্রীমান অদ্বৈত আচার্য্য। মানুষ তাঁকে গৌরআনা ঠাকুর বলে জানে!তাঁর জন্মস্থান তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের নবগ্রামে। নদী ভাঙনে নবগ্রাম আজ বিলীন! সে সময় নবগ্রামের অবস্থান ছিল লাউড় রাজ্যের লাউড়েরগড় এলাকায়। বর্তমানে যে মন্দির গড়ে উঠেছে যাদুকাটা নদীর তীরবর্তী লাউড়েরগড়ের পার্শ্ববর্তী রাজারগাঁও গ্রামে।

সার্বিক বিষয়ে আমার সুনামগঞ্জ ডটকমকে জানান শ্রী অদ্বৈত রায়

সিলেট,হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জসহ দেশ বিদেশের  লাখো লাখো ভক্তবৃন্ধের আগমনে গঙ্গাস্নান মিলন মেলায় পরিনত হয়।
আগমন ঘটে শিশু,নারী,পুরুষসহ অগনিত ভক্তগনের।

হবিগঞ্জ থেকে গঙ্গাস্নানে আসা বাদল রায় আমার সুনামগঞ্জ ডটকমকে জানান, বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার অনেক সু শৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণভাবে স্নান সম্পুর্ন করতে পারছি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও সার্বিক নিরাপত্তা ছিল দেখার মত।

সুদূর বি-বাড়িয়া থেকে স্ব পরিবারে আসা দিপালী প্রতিবেদককে জানান, আসার সময় অনেক ভয় কাজ করছিল সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে, কিন্তু সুনামগঞ্জ শহর থেকে যাদুকাটা পর্যন্ত আমরা নির্বিঘ্নে পূণ্য স্নান করতে পেরেছি এজন্য তাহিরপুরবাসী সহ সবার প্রতি কৃতজ্ঞ।

অদ্বৈত্য প্রভু জন্মধামের পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অদৈত্ব রায় আমার সুনামগঞ্জ ডটকমকে জানান,গাঙ্গা স্নানের মাধ্যমে হিন্দুধর্মালম্বীরা মা,বাবা,স্ত্রী-সন্তান নিয়ে তাদের সারা বছরের পাপ মোচনসহ পুণ্য লাভের জন্য আসেন।

প্রতি বছর চৈত্র মাসের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশীতে পুণ্যস্নানের জন্য এই স্থানে কয়েক লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটে। এখানে ভক্তরা স্নান ও তর্পণ করেন। এই পণতীর্থ প্রতি বছর একবারই হয়ে থাকে। এই দিন ও ক্ষণের জন্য ভক্তরা অধীর আগ্রহে থাকেন পুরো বছর।

সকলের সার্বিক সহযোগিতায় গাঙ্গা স্নান সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও উপজেলা প্রশাসন সহ তাহিরপুরের অনেক রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সার্বক্ষনিক আমাদের পাশে ছিলেন এবং সার্বিক খোজ খবর নিয়েছেন।

তিনি আরো জানান,বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ভক্তবৃন্দ ছিল অনেক বেশি এবং অত্যন্ত নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার সাথে সবাই স্নান করতে পেরেছে। এজন্য তিনি শ্রী শ্রী অদ্বৈত জন্মধাম কেন্দ্রীয় পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে সকলকে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন ।

তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ দেলোয়ার হোসেন জানান,পনাতীর্থ এলাকায় আসা-যাওয়ার পথে সকল প্রকার অনিয়ম রোধ ও আইনশৃংখলা বজায় রাখার জন্য  আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সব সময় তৎপর ছিল।

সর্বোচ্চ শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তায় তাদের পূণ্যস্নান সম্পন্ন করতে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের পাশে ছিল