সুনামগঞ্জ ১২:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ২৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারতে বিতর্কিত ওয়াকফ বিল পাস করায় প্রতিবাদ-বিক্ষোভ

আমার সুনামগঞ্জ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৯:৪৪:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ এপ্রিল ২০২৫ ৩৮ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় বিতর্কিত ওয়াকফ বিল পাস করায় প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশটির মুসলমানরা। বৃহস্পতিবার দেশটির রাজধানী দিল্লিসহ বিভিন্ন স্থানে তারা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।

ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় প্রায় ১৩ ঘণ্টা বিতর্কের পর ৫৬ ভোটের ব্যবধানে পাস হয় ওয়াকফ বিল। লোকসভার ২৮৮ জন এমপি বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছেন, বিপক্ষে দিয়েছেন ২৩২ জন এমপি।

ভারতীয় মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড এই বিলকে “বৈষম্যমূলক, সাম্প্রদায়িকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং মুসলিম নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন” বলে আখ্যা দিয়েছে।

সংগঠনটি জানায়, যদি পরিপূর্ণভাবে বিলটি পাস হয় তাহলে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করা হবে।

এদিকে ভারতের কংগ্রেস ও বিরোধী দলের নেতা রাহুল গান্ধী এক্স পোস্টে বলেন, নতুন এই বিলটি মুসলমানদের আইন ও সম্পত্তির অধিকার কেড়ে নেওয়ার একটি অস্ত্র।

বিলটি পাস হওয়ার পর লোকসভায় প্রতিবাদ করে বিলের কপি ছিঁড়ে ফেলেন অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমীনের সভাপতি আসাদুদ্দিন ওয়াইসি। তিনি বলেন, বিলটি পাস হলে প্রয়োজনে যুদ্ধ করা হবে।

বুধবার লোকসভায় বিলটি পেশ করেন সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরণ রিজিজু। তার আগে সরকারের অবস্থানের কথা ব্যাখ্যা করেন অমিত শাহ। এই ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল ১৯৯৫-এর ওয়াকফ সম্পত্তি সংক্রান্ত আইন সংশোধন করবে। ২০১৩তেও এই আইনের সংশোধন হয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর মন্ত্রিসভায় বিনা বিতর্কে সর্বসম্মতিতে সেই বিল পাস হয়েছিল।

এখন বিতর্ক এই বিলটির পিছু ছাড়ছে না। সংশোধিত বিল অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিল এবং ওয়াকফ বোর্ডে দুই জন মুসলমান নন এমন সদস্য থাকা বাধ্যতামূলক। এছাড়াও সম্পত্তি প্রদানের আরেকটি প্রাথমিক শর্ত হলো, অন্তত পাঁচ বছর ধরে ইসলাম ধর্মাবলম্বী হলে একমাত্র ওয়াকফকে সম্পত্তি দেয়া যাবে।

ভারতের ওয়াকফ বোর্ডের অধীনে ১৪ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের সম্পদ রয়েছে। এতোদিন এই সম্পদ খরচ করতে পারতো শুধু ওয়াকফ বোর্ডই। বিলটি পরিপূর্ণভাবে পাশ হলে জেলা প্রশাসক ও সমপর্যায়ের লোকেরাও তাতে হস্তক্ষেপ করতে পারবেন। তাছাড়া ওয়াকফ বোর্ডের কমিটিতে দুইজন হিন্দু থাকবে। এতো দিন শুধু মুসলমানরাই ওয়াকফ বোর্ড নিয়ন্ত্রণ করতো।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ভারতে বিতর্কিত ওয়াকফ বিল পাস করায় প্রতিবাদ-বিক্ষোভ

আপডেট সময় : ০৯:৪৪:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ এপ্রিল ২০২৫

ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় বিতর্কিত ওয়াকফ বিল পাস করায় প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশটির মুসলমানরা। বৃহস্পতিবার দেশটির রাজধানী দিল্লিসহ বিভিন্ন স্থানে তারা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।

ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় প্রায় ১৩ ঘণ্টা বিতর্কের পর ৫৬ ভোটের ব্যবধানে পাস হয় ওয়াকফ বিল। লোকসভার ২৮৮ জন এমপি বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছেন, বিপক্ষে দিয়েছেন ২৩২ জন এমপি।

ভারতীয় মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড এই বিলকে “বৈষম্যমূলক, সাম্প্রদায়িকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং মুসলিম নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন” বলে আখ্যা দিয়েছে।

সংগঠনটি জানায়, যদি পরিপূর্ণভাবে বিলটি পাস হয় তাহলে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করা হবে।

এদিকে ভারতের কংগ্রেস ও বিরোধী দলের নেতা রাহুল গান্ধী এক্স পোস্টে বলেন, নতুন এই বিলটি মুসলমানদের আইন ও সম্পত্তির অধিকার কেড়ে নেওয়ার একটি অস্ত্র।

বিলটি পাস হওয়ার পর লোকসভায় প্রতিবাদ করে বিলের কপি ছিঁড়ে ফেলেন অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমীনের সভাপতি আসাদুদ্দিন ওয়াইসি। তিনি বলেন, বিলটি পাস হলে প্রয়োজনে যুদ্ধ করা হবে।

বুধবার লোকসভায় বিলটি পেশ করেন সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরণ রিজিজু। তার আগে সরকারের অবস্থানের কথা ব্যাখ্যা করেন অমিত শাহ। এই ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল ১৯৯৫-এর ওয়াকফ সম্পত্তি সংক্রান্ত আইন সংশোধন করবে। ২০১৩তেও এই আইনের সংশোধন হয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর মন্ত্রিসভায় বিনা বিতর্কে সর্বসম্মতিতে সেই বিল পাস হয়েছিল।

এখন বিতর্ক এই বিলটির পিছু ছাড়ছে না। সংশোধিত বিল অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিল এবং ওয়াকফ বোর্ডে দুই জন মুসলমান নন এমন সদস্য থাকা বাধ্যতামূলক। এছাড়াও সম্পত্তি প্রদানের আরেকটি প্রাথমিক শর্ত হলো, অন্তত পাঁচ বছর ধরে ইসলাম ধর্মাবলম্বী হলে একমাত্র ওয়াকফকে সম্পত্তি দেয়া যাবে।

ভারতের ওয়াকফ বোর্ডের অধীনে ১৪ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের সম্পদ রয়েছে। এতোদিন এই সম্পদ খরচ করতে পারতো শুধু ওয়াকফ বোর্ডই। বিলটি পরিপূর্ণভাবে পাশ হলে জেলা প্রশাসক ও সমপর্যায়ের লোকেরাও তাতে হস্তক্ষেপ করতে পারবেন। তাছাড়া ওয়াকফ বোর্ডের কমিটিতে দুইজন হিন্দু থাকবে। এতো দিন শুধু মুসলমানরাই ওয়াকফ বোর্ড নিয়ন্ত্রণ করতো।