ঢাকা ০৩:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সকল ধর্মের মানুষের পূর্ণ অধিকার নিশ্চিত করা হবে – তোফায়েল আহমদ খান কোটি টাকার ওষুধ নষ্ট হওয়ার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবি ছাতকে ইউএনও ওসি’র সাথে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের নেতৃবৃন্দের সৌজন্য সাক্ষাৎ সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে আড়াই কোটি টাকার ওষুধ মেয়াদোত্তীর্ণ জগন্নাথপুর উপজেলা উন্নয়ন সংস্থা ইউকে’র উদ্যোগে সেলাই মেশিন বিতরণ উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি গঠন -সভাপতি তারা মিয়া, সম্পাদক ফজলুল হক ধর্মপাশায় কনে দেখতে গিয়ে নৌকাডুবি, উকিল ও শিশু কন্যার লাশ উদ্ধার দুর্নীতি ও অপশাসনের কারণে দেশ পিছিয়ে আছে — এডভোকেট মুহাম্মদ শামস উদ্দিন সিলেটের পাথর কুয়ারী লুটপাটে জামায়াত জড়িত নয়: প্রমাণের চ্যালেঞ্জ নেতৃবৃন্দের ছাতকে বিদেশি রিভলভার উদ্ধার

শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যা! দুই সন্তানের জননী সাথীর মর্মান্তিক পরিণতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ১২:৫৪:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ এপ্রিল ২০২৫
  • / 154
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গাজীপুর, ৫ এপ্রিল ২০২৫:

গাজীপুরের টঙ্গী রেলস্টেশন এলাকায় ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন দুই সন্তানের জননী শামীমা আক্তার সাথী (৩২)। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সাথী দীর্ঘদিন ধরে তার স্বামীর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছিলেন। ঘটনার পর তার মৃত্যুকে ‘আত্মহত্যা’ বলে দাবি করা হলেও পরিবারের দাবি—এটি আত্মহত্যা নয়, বরং নির্যাতনের ফলেই এ মর্মান্তিক পরিণতি ঘটেছে।

সাথীর ছোট ভাই জানান, “আমার মা চেয়েছিলেন বোনটা ভালো ঘরে যাক, সুখে থাকুক। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, নেশাগ্রস্ত, বেকার ও হিংস্র এক মানুষের হাতে তুলে দিয়েছিলো। বিয়ের পর থেকেই আমার বোন ছিলো নির্যাতনের শিকার। মা যখন বেঁচে ছিলেন, তখন অনেকবার আমরা বোনকে বাড়িতে নিয়ে এসেছিলাম, সংসার না করার সিদ্ধান্তও হয়েছিল। কিন্তু বোন সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সব নির্যাতন মুখ বুজে সহ্য করছিল।”

ঘটনার আগের দিন, পরিবারের দাবি অনুযায়ী, সাথীর স্বামী তাকে শুধু বাড়ি থেকে বের করে দেয়নি, বরং হুমকি দিয়েছিল—টাকা না আনলে তাকে হত্যা করা হবে। এরপর ৫ এপ্রিল ফজরের নামাজের পর বোরকা ও মোবাইল ফোন ছাড়াই সাথী বাসা থেকে বেরিয়ে যান। পরিবারের সদস্যরা দুপুর ১১টার দিকে জানতে পারেন তিনি নিখোঁজ। পরে দুপুর ৩টায় পরিবারের একজন সদস্য টঙ্গী রওনা দেন এবং রাত ১০টার দিকে টঙ্গী রেলওয়ে থানা থেকে জানতে পারেন, একজন নারী ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা গেছেন—নাম শামীমা আক্তার সাথী।

পরিবারের দাবি, “সাথী খুব ধার্মিক, নামাজি ও ছেলেদের ভীষণ ভালোবাসতো। সে কখনোই আত্মহত্যা করতে পারে না। আমরা বিশ্বাস করি, চরম নির্যাতনের শিকার হয়ে অথবা অন্য কোনো কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

মৃত্যুর ১০ মাসের মাথায় মাকে হারিয়ে এখন একমাত্র বোনকেও হারিয়ে শোকাহত পরিবার। তারা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, “আমরা বিচার চাই। আমাদের সাথীর জীবনের এ পরিণতি যেন আর কোনো মেয়ের না হয়।”

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস : আমার সুনামগঞ্জ | Amar Sunamganj

শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যা! দুই সন্তানের জননী সাথীর মর্মান্তিক পরিণতি

আপডেট সময় : ১২:৫৪:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ এপ্রিল ২০২৫

গাজীপুর, ৫ এপ্রিল ২০২৫:

গাজীপুরের টঙ্গী রেলস্টেশন এলাকায় ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন দুই সন্তানের জননী শামীমা আক্তার সাথী (৩২)। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সাথী দীর্ঘদিন ধরে তার স্বামীর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছিলেন। ঘটনার পর তার মৃত্যুকে ‘আত্মহত্যা’ বলে দাবি করা হলেও পরিবারের দাবি—এটি আত্মহত্যা নয়, বরং নির্যাতনের ফলেই এ মর্মান্তিক পরিণতি ঘটেছে।

সাথীর ছোট ভাই জানান, “আমার মা চেয়েছিলেন বোনটা ভালো ঘরে যাক, সুখে থাকুক। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, নেশাগ্রস্ত, বেকার ও হিংস্র এক মানুষের হাতে তুলে দিয়েছিলো। বিয়ের পর থেকেই আমার বোন ছিলো নির্যাতনের শিকার। মা যখন বেঁচে ছিলেন, তখন অনেকবার আমরা বোনকে বাড়িতে নিয়ে এসেছিলাম, সংসার না করার সিদ্ধান্তও হয়েছিল। কিন্তু বোন সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সব নির্যাতন মুখ বুজে সহ্য করছিল।”

ঘটনার আগের দিন, পরিবারের দাবি অনুযায়ী, সাথীর স্বামী তাকে শুধু বাড়ি থেকে বের করে দেয়নি, বরং হুমকি দিয়েছিল—টাকা না আনলে তাকে হত্যা করা হবে। এরপর ৫ এপ্রিল ফজরের নামাজের পর বোরকা ও মোবাইল ফোন ছাড়াই সাথী বাসা থেকে বেরিয়ে যান। পরিবারের সদস্যরা দুপুর ১১টার দিকে জানতে পারেন তিনি নিখোঁজ। পরে দুপুর ৩টায় পরিবারের একজন সদস্য টঙ্গী রওনা দেন এবং রাত ১০টার দিকে টঙ্গী রেলওয়ে থানা থেকে জানতে পারেন, একজন নারী ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা গেছেন—নাম শামীমা আক্তার সাথী।

পরিবারের দাবি, “সাথী খুব ধার্মিক, নামাজি ও ছেলেদের ভীষণ ভালোবাসতো। সে কখনোই আত্মহত্যা করতে পারে না। আমরা বিশ্বাস করি, চরম নির্যাতনের শিকার হয়ে অথবা অন্য কোনো কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

মৃত্যুর ১০ মাসের মাথায় মাকে হারিয়ে এখন একমাত্র বোনকেও হারিয়ে শোকাহত পরিবার। তারা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, “আমরা বিচার চাই। আমাদের সাথীর জীবনের এ পরিণতি যেন আর কোনো মেয়ের না হয়।”