মাধ্যমিকে জেলায় পরীক্ষার্থী ২৬ হাজার ৪০২

- আপডেট সময় : ০৮:৫১:২৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫ ৬০ বার পড়া হয়েছে
আজ বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) থেকে শুরু হচ্ছে যাচ্ছে ২০২৫ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা। এবারের এসএসসি পরীক্ষা হবে পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে, সব বিষয়ে পূর্ণ নম্বর ও সময়ে। এ বছর জেলায় ২৬ হাজার ৪০২ শিক্ষার্থীর্ সিলেট শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষায় অংশ নেবে।
জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, ৩৫টি কেন্দ্র ও ৩৮টি ভেন্যুতে এসএসসি পরীক্ষায় ২০ হাজার ৯৮২ জন, দাখিল পরীক্ষায় ১৩টি কেন্দ্রে ৪ হাজার ২২৫ জন, এসএসসি (ভোকেশনাল) ও ৯টি কেন্দ্রে দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় ১ হাজার ১৯৫ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে।
বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষার মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে এসএসসির তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হবে ১৩ মে। পরীক্ষা চলবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত। তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষে ১৫ মে থেকে ২২ মে পর্যন্ত এসএসসির ব্যবহারিক পরীক্ষা চলবে। দাখিল পরীক্ষা শুরু হবে কুরআন মাজিদ ও তাজভিদ পরীক্ষা দিয়ে। ১৩ মে পর্যন্ত দাখিলের তত্ত্বীয় পরীক্ষা চলবে। আর ১৪ থেকে ১৮ মের মধ্যে ব্যবহারিক পরীক্ষা হবে। এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনালের শিক্ষার্থীরা দেবেন বাংলা—২ বিষয়ের পরীক্ষা। ১৩ মে ইংরেজি—২ পরীক্ষা দিয়ে তাদের তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হবে। ১৩ থেকে ২২ মে এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনালের ব্যবহারিক পরীক্ষা এবং ২৩ মে থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত বাস্তব প্রশিক্ষণ চলবে।
জেলা শিক্ষা অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পরীক্ষা আয়োজনের সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। সুষ্ঠু, সুন্দর ও নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা আয়োজনে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
এদিকে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা নকল বা অসদুপায় অবলম্বন করলে এবং প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় বা গুজব ছড়ানোতে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করেছে শিক্ষা বোর্ডগুলোর মোর্চা আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি। এ ধরনের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ‘পাবলিক পরীক্ষাসমূহ (অপরাধ) আইন ১৯৮০’, ‘তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি আইন ২০০৬’ এবং ‘এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা পরিচালনা নীতিমালা ২০২৫’ অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কমিটি। সুষ্ঠু ও নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা আয়োজনে সব নাগরিকের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে কমিটির পক্ষ থেকে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পরীক্ষা চলার তিন ঘণ্টা পরীক্ষা কেন্দ্রের আশপাশে ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। পরীক্ষা চলার সময় কেন্দ্রের আশপাশে ২০০ গজের মধ্যে পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট নন এমন কোন ব্যক্তি চলাচল করতে পারবেন না। এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার সময় ১০ এপ্রিল থেকে ১৩ মে পর্যন্ত ৩৪ দিন সব ধরণের কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সুষ্ঠু, সুন্দর ও নকলমুক্ত পরিবেশে একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ সংক্রান্ত পরিপত্রও জারি করা হয়েছে। এগুলো হলো— পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে সব পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করে আসন গ্রহণ করতে হবে। কোনো পরীক্ষার্থী পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিটের আগে পরীক্ষা কেন্দ্রে এলে রেজিস্ট্রারে নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময় ও দেরি হওয়ার কারণ উল্লেখ করতে হবে। দেরিতে আসা পরীক্ষার্থীদের তালিকা প্রতিদিন কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডকে জানাবেন। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট পর কোন পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া বা পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া যাবে না। কেন্দ্র সচিব ছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্রে অন্য কেউ মোবাইল ফোন ও মোবাইল ফোনের সুবিধাসহ ঘড়ি, কলম বা অননুমোদিত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন না। কেন্দ্র সচিব ছবি তোলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাবিহীন একটি সাধারণ (ফিচার) ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। অননুমোদিত ফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীরা ‘প্রোগ্রামেবল’ ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবেন না। তবে ‘নন প্রোগ্রামেবল’ সায়েন্টিফেক ক্যাকুলেটর ব্যবহার করার সুযোগ থাকবে। মন্ত্রণালয় বলছে, প্রত্যেক কেন্দ্রের জন্য একজন করে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বা কর্মকর্তা (ট্যাগ অফিসার) নিয়োগ দিতে হবে। ট্রেজারি, থানা বা নিরাপত্তা হেফাজত থেকে কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব বা তার মনোনীত প্রতিনিধি ট্যাগ অফিসারসহ প্রশ্নপত্র প্রহণ করে পুলিশ প্রহরার কেন্দ্রে নিয়ে যাবেন।
এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বা কর্মকর্তারা (ট্যাগ অফিসার) উপস্থিত না থাকলে প্রশ্নপত্র ট্রেজারি, থানা বা নিরাপত্তা হেফাজত থেকে বের করা বা বহন করা যাবে না।
মন্ত্রণালয় বলেছে, নিরাপত্তা হেফাজত থেকে পরীক্ষার কেন্দ্রে বহুমুখী নির্বাচনী প্রশ্নসহ রচনামূলক ও সৃজনশীলের সব সেট প্রশ্নই কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। প্রশ্নের সেট কোড পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে জানানো হবে। সে অনুযায়ী নির্ধারিত সেট কোডে পরীক্ষা নিতে হবে। কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ট্যাগ অফিসার), কেন্দ্র সচিব এবং পুলিশ কর্মকর্তার উপস্থিতি ও স্বাক্ষরে নির্ধারিত সেট কোড নিশ্চিত হয়ে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলতে হবে।
পরীক্ষা চলাকালে এবং পরীক্ষা আগে ও পরে পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা ছাড়া অন্যদের প্রবেশ ‘সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ’ থাকবে। এ সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশকারী অননুমোদিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ‘আইনগত ব্যবস্থা’ নিতে বলেছে মন্ত্রণালয়।
অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষা দেরিতে শুরু করতে হলে ‘যত মিনিট পরে’ পরীক্ষা শুরু হবে পরীক্ষার্থীদের সে সময় থেকে যথারীতি প্রশ্নপত্রে উল্লিখিত নির্ধারিত সময় দিতে হবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস সংক্রান্ত গুজব বা এ কাজে তৎপর চক্রগুলোর কার্যক্রমের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের নজরদারি করবে।
পরীক্ষা কেন্দ্রের আশেপাশে সকল ফটোকপি মেশিন পরীক্ষার সময় বন্ধ রাখার নির্দেশনাও দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।