সুনামগঞ্জ ০৯:৩৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কোটা ও খুঁটি

সাদিকুল ইসলাম সাদিক
  • আপডেট সময় : ০৬:৩৭:১৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ৪৪ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আমাদের এই দেশে সব রকমের চাকরী পাওয়ার প্রতিযোগিতায় মেধার জোর ব্যতিরেকে আরও দুই রকমের জোর অবাধে অবলীলায় প্রচলিত আছে এবং নিঃসন্দেহে সেগুলো হলো- এক কোটার জোর, আরেক খুঁটির জোর।

যেভাবে মেধাকে অস্বীকার করে এবং যোগ্যতাকে অবহেলা করে শুধুমাত্র কোটার জোরে চাকরী পাওয়াটা যদি মন্দ হয়, সেভাবে খুঁটির জোরে চাকরি পাওয়াটা হচ্ছে মন্দতর।

এই উভয় মন্দ এবং মন্দতর প্রক্রিয়ার একটা চলছে সরবে, আরেকটা নীরবে। একটা রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত, আরেকটা সমাজ কর্তৃক ধিকৃত। একটা হচ্ছে রাষ্ট্রের বদান্যতার বদৌলতে, আরেকটা স্ব স্ব বাপদাদার ধনদৌলতে। একটার ভিত হচ্ছে রাষ্ট্রের অন্ধ আসক্তি, আরেকটার ভিত হচ্ছে লোকের মন্দ পেশিশক্তি। একটার পক্ষে আছে রাষ্ট্রীয় অযৌক্তিক দলিল, আরেকটার আছে গোপনীয় অনৈতিক দালাল। একটা হচ্ছে আইন দ্বারা সিদ্ধ পথে, আরেকটা হচ্ছে নিষিদ্ধ পথে।

সিদ্ধ পথেই হউক আর নিষিদ্ধ পথেই হউক- এ রকম কোনো পথই যে এ দেশের জন্য শুভও নয়, শোভনেরও নয়- তা আর বিন্দুমাত্র বলার অপেক্ষা রাখে না। এভাবে মেধাবীকে ডিঙিয়ে, যোগ্যকে ঠেঙিয়ে শুধুমাত্র কোটার প্রেরণায় কিংবা খুঁটির তাড়নায় অপেক্ষাকৃত কম মেধার, কম যোগ্যতার লোকদেরকে চাকরী দিলে তাদের দ্বারা এই দেশের যতটা না ইষ্ট হবে তার চেয়ে ঢের বেশী অনিষ্ট হবে এবং হচ্ছে। এদেরকে নির্বিচারে নির্বিবাদে দেশের বড়বড় পদ দিয়ে দেশের বড়বড় বিপদ বয়ে আনা হচ্ছে।

যে দেশে মেধাবীদের মূল্যায়ন নাই, যোগ্যদের যথাস্থান নাই সে দেশের সব রকম উন্নতির পথে চলাটা ত্বরান্বিত হয় না, বিলম্বিত হয়; সুখ-সমৃদ্ধির স্বপ্নটা বাস্তবায়িত হয় না, বিড়ম্বিত হয়। শোষণহীন সমাজ ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র বিনির্মাণে অযৌক্তিক কোটা-কে উড়িয়ে দেওয়া, অনৈতিক খুঁটি-কে গুড়িয়ে দেওয়া এখন সময়ের মহা দাবী হয়ে দাঁড়িয়েছে।

২০১৮ সালের লেখা…

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

কোটা ও খুঁটি

আপডেট সময় : ০৬:৩৭:১৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫

আমাদের এই দেশে সব রকমের চাকরী পাওয়ার প্রতিযোগিতায় মেধার জোর ব্যতিরেকে আরও দুই রকমের জোর অবাধে অবলীলায় প্রচলিত আছে এবং নিঃসন্দেহে সেগুলো হলো- এক কোটার জোর, আরেক খুঁটির জোর।

যেভাবে মেধাকে অস্বীকার করে এবং যোগ্যতাকে অবহেলা করে শুধুমাত্র কোটার জোরে চাকরী পাওয়াটা যদি মন্দ হয়, সেভাবে খুঁটির জোরে চাকরি পাওয়াটা হচ্ছে মন্দতর।

এই উভয় মন্দ এবং মন্দতর প্রক্রিয়ার একটা চলছে সরবে, আরেকটা নীরবে। একটা রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত, আরেকটা সমাজ কর্তৃক ধিকৃত। একটা হচ্ছে রাষ্ট্রের বদান্যতার বদৌলতে, আরেকটা স্ব স্ব বাপদাদার ধনদৌলতে। একটার ভিত হচ্ছে রাষ্ট্রের অন্ধ আসক্তি, আরেকটার ভিত হচ্ছে লোকের মন্দ পেশিশক্তি। একটার পক্ষে আছে রাষ্ট্রীয় অযৌক্তিক দলিল, আরেকটার আছে গোপনীয় অনৈতিক দালাল। একটা হচ্ছে আইন দ্বারা সিদ্ধ পথে, আরেকটা হচ্ছে নিষিদ্ধ পথে।

সিদ্ধ পথেই হউক আর নিষিদ্ধ পথেই হউক- এ রকম কোনো পথই যে এ দেশের জন্য শুভও নয়, শোভনেরও নয়- তা আর বিন্দুমাত্র বলার অপেক্ষা রাখে না। এভাবে মেধাবীকে ডিঙিয়ে, যোগ্যকে ঠেঙিয়ে শুধুমাত্র কোটার প্রেরণায় কিংবা খুঁটির তাড়নায় অপেক্ষাকৃত কম মেধার, কম যোগ্যতার লোকদেরকে চাকরী দিলে তাদের দ্বারা এই দেশের যতটা না ইষ্ট হবে তার চেয়ে ঢের বেশী অনিষ্ট হবে এবং হচ্ছে। এদেরকে নির্বিচারে নির্বিবাদে দেশের বড়বড় পদ দিয়ে দেশের বড়বড় বিপদ বয়ে আনা হচ্ছে।

যে দেশে মেধাবীদের মূল্যায়ন নাই, যোগ্যদের যথাস্থান নাই সে দেশের সব রকম উন্নতির পথে চলাটা ত্বরান্বিত হয় না, বিলম্বিত হয়; সুখ-সমৃদ্ধির স্বপ্নটা বাস্তবায়িত হয় না, বিড়ম্বিত হয়। শোষণহীন সমাজ ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র বিনির্মাণে অযৌক্তিক কোটা-কে উড়িয়ে দেওয়া, অনৈতিক খুঁটি-কে গুড়িয়ে দেওয়া এখন সময়ের মহা দাবী হয়ে দাঁড়িয়েছে।

২০১৮ সালের লেখা…