ঢাকা ০৬:৪৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

ফিলিস্তিনপন্থি ১৫০০ শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করলো আমেরিকা

আমার সুনামগঞ্জ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৬:৫৪:৪৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
  • / 62
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শত শত অধ্যয়নরত ও স্নাতক শেষ করা শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছেন আমেরিকার অভিবাসন কর্মকর্তারা। তাদের মধ্যে অনেককে আবার গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।

এসব ঘটনা ঘটেছে ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর।

ভিসা বাতিল হওয়া এবং গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীর অনেকেই ২০২৪ সালে আমেরিকাজুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজায় ইসরাইলি বর্বরতার বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনের পক্ষে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভে যোগ দেন। বাকিরা ফিলিস্তিনের পক্ষে পরোক্ষভাবে সমর্থন দিয়েছেন, বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ, এসব শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইহুদিবিদ্বেষ ও হামাসের পক্ষে প্রচার চালিয়েছে। যদিও এই দাবি শিক্ষার্থী, আইনজীবী ও অ্যাক্টিভিস্টরা প্রত্যাখ্যান করেছেন। গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে আমেরিকায় হওয়া অনেক বিক্ষোভের অগ্রভাগে ছিল ইহুদি কর্মী ও গোষ্ঠীগুলো।

কোনো কোনো শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে আইন লঙ্ঘনের ছোটখাটো ঘটনায়, যেমন টিকিট বা ট্র্যাফিক-সংক্রান্ত নিয়মকানুন লঙ্ঘনের দায়ে।

আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও গত মার্চের শেষে বলেছিলেন, প্রশাসন প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে। রুবিও এ সংখ্যার কথা বললেও প্রকৃত সংখ্যা তার দেওয়া পরিসংখ্যানের চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে।

এ বিষয়ে বিভিন্ন পক্ষ ভিন্ন ভিন্ন পরিসংখ্যান দিয়েছে। ভিসা বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীর সর্বোচ্চ সংখ্যার তথ্য দিয়েছে ‘আমেরিকান ইমিগ্রেশন ল ইয়ারস অ্যাসোসিয়েশন’।

সংস্থাটির হিসাবমতে, ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট পরিচালিত ‘স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর ইনফরমেশন সিস্টেমস (এসইভিআইএস)’ নামের তথ্যভাণ্ডার থেকে ৪ হাজার ৭০০-এর বেশি শিক্ষার্থীকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

এমনকি অধিকতর রক্ষণশীল হিসেবেও এ সংখ্যা এক হাজারের বেশি বলে উল্লেখ করা হয়। দ্য ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব ফরেন স্টুডেন্ট অ্যাডভাইজরসের (এনএএফএসএ) অনুমান, ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী আমেরিকা থেকে বের করে দেওয়ার হুমকির মুখে রয়েছেন এক হাজার ৪০০ শিক্ষার্থী।

আবার উচ্চশিক্ষা বিষয়ে আমেরিকাভিত্তিক প্রকাশনা ‘ইনসাইড হাইয়ার এড’-এর তথ্য অনুযায়ী ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত এক হাজার ৪৮৯ শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল হয়েছে।

ইনসাইড হাইয়ার এড বলছে, আমেরিকার ২৪০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থী ভিসা বাতিলের শিকার হয়েছেন।

এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে হার্ভার্ড ও স্ট্যানফোর্ডের মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যেমন রয়েছে, তেমন রয়েছে ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের মতো বৃহৎ সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। রয়েছে কিছু ছোট লিবারেল আর্টস কলেজও।

ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, তারা ক্যাম্পাসগুলো অধিকারকর্মীদের নিয়ন্ত্রণে যাওয়া থেকে রক্ষার চেষ্টা করছে।

গত ২৮ মার্চ মার্কো রুবিও বলেন, আমরা আমেরিকায় অধিকারকর্মী আমদানি করতে চাই না। তারা এখানে পড়তে আসে। আসে ক্লাসে যাওয়ার জন্য। আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তারা এখানে থাকে না। এসব আন্দোলন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কার্যক্রম বিঘ্নিত ও ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

অনেক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে তাদের থাকার বৈধ অনুমতি কোনো নেটিস ছাড়াই বাতিল করা হয়েছে।

ভুক্তভোগীদের মধ্যে রয়েছেন মাহমুদ খলিল, মোহসেন মাহদাওয়ি ও মোমোদু তায়ালের মতো শিক্ষার্থী। তারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ চলার সময় এর পক্ষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস : আমার সুনামগঞ্জ | Amar Sunamganj

ফিলিস্তিনপন্থি ১৫০০ শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করলো আমেরিকা

আপডেট সময় : ০৬:৫৪:৪৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

শত শত অধ্যয়নরত ও স্নাতক শেষ করা শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছেন আমেরিকার অভিবাসন কর্মকর্তারা। তাদের মধ্যে অনেককে আবার গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।

এসব ঘটনা ঘটেছে ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর।

ভিসা বাতিল হওয়া এবং গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীর অনেকেই ২০২৪ সালে আমেরিকাজুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজায় ইসরাইলি বর্বরতার বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনের পক্ষে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভে যোগ দেন। বাকিরা ফিলিস্তিনের পক্ষে পরোক্ষভাবে সমর্থন দিয়েছেন, বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ, এসব শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইহুদিবিদ্বেষ ও হামাসের পক্ষে প্রচার চালিয়েছে। যদিও এই দাবি শিক্ষার্থী, আইনজীবী ও অ্যাক্টিভিস্টরা প্রত্যাখ্যান করেছেন। গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে আমেরিকায় হওয়া অনেক বিক্ষোভের অগ্রভাগে ছিল ইহুদি কর্মী ও গোষ্ঠীগুলো।

কোনো কোনো শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে আইন লঙ্ঘনের ছোটখাটো ঘটনায়, যেমন টিকিট বা ট্র্যাফিক-সংক্রান্ত নিয়মকানুন লঙ্ঘনের দায়ে।

আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও গত মার্চের শেষে বলেছিলেন, প্রশাসন প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে। রুবিও এ সংখ্যার কথা বললেও প্রকৃত সংখ্যা তার দেওয়া পরিসংখ্যানের চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে।

এ বিষয়ে বিভিন্ন পক্ষ ভিন্ন ভিন্ন পরিসংখ্যান দিয়েছে। ভিসা বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীর সর্বোচ্চ সংখ্যার তথ্য দিয়েছে ‘আমেরিকান ইমিগ্রেশন ল ইয়ারস অ্যাসোসিয়েশন’।

সংস্থাটির হিসাবমতে, ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট পরিচালিত ‘স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর ইনফরমেশন সিস্টেমস (এসইভিআইএস)’ নামের তথ্যভাণ্ডার থেকে ৪ হাজার ৭০০-এর বেশি শিক্ষার্থীকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

এমনকি অধিকতর রক্ষণশীল হিসেবেও এ সংখ্যা এক হাজারের বেশি বলে উল্লেখ করা হয়। দ্য ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব ফরেন স্টুডেন্ট অ্যাডভাইজরসের (এনএএফএসএ) অনুমান, ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী আমেরিকা থেকে বের করে দেওয়ার হুমকির মুখে রয়েছেন এক হাজার ৪০০ শিক্ষার্থী।

আবার উচ্চশিক্ষা বিষয়ে আমেরিকাভিত্তিক প্রকাশনা ‘ইনসাইড হাইয়ার এড’-এর তথ্য অনুযায়ী ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত এক হাজার ৪৮৯ শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল হয়েছে।

ইনসাইড হাইয়ার এড বলছে, আমেরিকার ২৪০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থী ভিসা বাতিলের শিকার হয়েছেন।

এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে হার্ভার্ড ও স্ট্যানফোর্ডের মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যেমন রয়েছে, তেমন রয়েছে ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের মতো বৃহৎ সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। রয়েছে কিছু ছোট লিবারেল আর্টস কলেজও।

ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, তারা ক্যাম্পাসগুলো অধিকারকর্মীদের নিয়ন্ত্রণে যাওয়া থেকে রক্ষার চেষ্টা করছে।

গত ২৮ মার্চ মার্কো রুবিও বলেন, আমরা আমেরিকায় অধিকারকর্মী আমদানি করতে চাই না। তারা এখানে পড়তে আসে। আসে ক্লাসে যাওয়ার জন্য। আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তারা এখানে থাকে না। এসব আন্দোলন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কার্যক্রম বিঘ্নিত ও ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

অনেক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে তাদের থাকার বৈধ অনুমতি কোনো নেটিস ছাড়াই বাতিল করা হয়েছে।

ভুক্তভোগীদের মধ্যে রয়েছেন মাহমুদ খলিল, মোহসেন মাহদাওয়ি ও মোমোদু তায়ালের মতো শিক্ষার্থী। তারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ চলার সময় এর পক্ষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় ছিলেন।