তাহিরপুরে বিএনপি’র সভায় মনোনয়ন ঘিরে তীব্র বিতর্ক, কর্মসূচি স্থগিত

- আপডেট সময় : ১১:২০:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫ ১৬৪ বার পড়া হয়েছে
সুনামগঞ্জ-১ (তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা, মধ্যনগর) আসনের বিএনপি রাজনীতিতে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে প্রকাশ্য দ্বন্দ্বের চিত্র দেখা গেছে তাহিরপুর উপজেলার একটি কর্মীসভায়। শনিবার সন্ধ্যায় বালিজুরি ইউনিয়নের আনোয়ারপুর বাজারে আয়োজিত ইউনিয়ন বিএনপির কর্মীসভায় এক বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, যা পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। ঘটনার পরপরই ইউনিয়ন পর্যায়ের ধারাবাহিক কর্মসূচি তাৎক্ষণিকভাবে স্থগিত ঘোষণা করা হয়।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক বাদল মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক আনিসুল হক। বক্তব্যে তিনি ‘ওয়ান-ইলেভেন’ এর সময় বিএনপির রাজনীতি ও তৎকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করতে গিয়ে সাবেক এমপি নজির হোসেনকে ইঙ্গিত করে কিছু মন্তব্য করেন, যা উপস্থিত নেতা-কর্মীদের একাংশের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়। বিশেষ করে নজির হোসেনের সহধর্মিণী সালমা নজির মঞ্চে উপস্থিত থাকাকালে তাঁকে ইঙ্গিত করে “টেলিফোনের ভয় দেখিয়ে কমিটিতে ঢুকবেন” মন্তব্যটি বিতর্ক সৃষ্টি করে।
আনিসুল হকের বক্তব্যের সময় সভার ভেতরে অসন্তোষের সৃষ্টি হলে কিছু নেতা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। পরে মঞ্চে বসা সালমা নজির আবেগঘন কণ্ঠে বলেন, “নজির হোসেন এই এলাকার বিএনপির রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশে ছিলেন। তাঁকে নিয়ে এমন ইঙ্গিতমূলক ও মিথ্যা মন্তব্য আমরা কল্পনাও করতে পারি না।”
ঘটনার পর উপজেলা বিএনপির একটি জরুরি সভা বসে এবং ইউনিয়ন পর্যায়ের ধারাবাহিক কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করা হয়। পরদিন রোববার সকাল থেকেই বিষয়টি তাহিরপুরসহ পুরো সুনামগঞ্জ-১ আসনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় এবং ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
দুপুরের পর আনিসুল হক তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্টে লেখেন, “শনিবার বালিজুরি ইউনিয়ন বিএনপির সভায় অসাবধান বসত অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু বক্তব্য রেখেছি, যা শোভন নয়। আমি বক্তব্যটি প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। এজন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।” তাঁর এই স্ট্যাটাসেও দলের কর্মীদের মাঝে মতভেদ দেখা যায়।
এদিকে, কর্মীসভায় অনুপস্থিত ছিলেন আলোচিত মনোনয়নপ্রত্যাশী কামরুজ্জামান কামরুল, যাঁকে প্রধান বক্তা হিসেবে সভায় থাকার কথা ছিল।
দলের অভ্যন্তরীণ বিশ্লেষণে মনে করা হচ্ছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে অসন্তোষ ও প্রতিযোগিতা প্রকাশ পাচ্ছে। তবে অনেক নেতা মনে করেন, এই ধরনের ঘটনা পরবর্তীতে সমঝোতার মাধ্যমে সামাল দেওয়া সম্ভব।
সালমা নজির শেষমেশ জানান, “আনিসুল হক আমার স্বামীর একসময় ঘনিষ্ঠ ছিলেন। হয়তো আবেগের বসে কিছু বলেছেন। বিষয়টি আমরা জনগণের বিবেকের কাছে ছেড়ে দিলাম।”