হাওরে ‘নীল কমল’ হাউসবোটের ধাক্কায় ছিঁড়ল ১১ হাজার ভোল্টের তার, অন্ধকারে ৫ গ্রাম!

- আপডেট সময় : ১২:৪৫:২৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
- / 228
তাহিরপুর উপজেলায় পর্যটকবাহী ‘নীল কমল’ নামের এক নতুন তিনতলা হাউসবোটের বেপরোয়া চালনার কারণে নদীর ওপর থাকা ১১ হাজার ভোল্টের বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে পড়ে গেছে। এর ফলে টাঙ্গুয়ার হাওরপাড়ের পাঁচটি গ্রাম রাতারাতি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
বুধবার (১১ জুন) বিকেলে তাহিরপুরের ছিলানী তাহিরপুর গ্রামের পাটলাই নদীর ওপর দিয়ে চলার সময় বিশাল আকৃতির হাউসবোটটি অসচেতনভাবে বৈদ্যুতিক মেইন লাইনে ধাক্কা দেয়।
এ সময় তারে ভয়ানক স্পার্ক বা আগুনের ফুলকি দেখা দেয় এবং দুইটি বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে পড়ে। এতে ছিলানী তাহিরপুর, জয়পুর, গোলাবাড়ি, ইসলামপুর নতুন হাঁটি ও জয়পুর নতুন বাড়ি গ্রামের শত শত পরিবার হঠাৎ অন্ধকারে ডুবে যায়।
স্থানীয়রা জানান, সাধারণত হাওরে একতলা হাউসবোট চলাচল করে। কিন্তু সদ্য চালু হওয়া এই তিনতলা বিশিষ্ট হাউসবোটটি কোনো ধরনের সাবধানতা ছাড়াই নদীতে চালানো হয়। এ ঘটনায় বোটের কেউই প্রথমে দায় স্বীকার না করলেও পরে দুইজন কর্মীকে স্থানীয়রা আটক করে রাখেন।
স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সাফাকুল ইসলাম জানান, “দায়িত্বহীনভাবে চালানো হাউসবোটের ধাক্কায় বিদ্যুতের লাইন ভয়ংকরভাবে ছিঁড়ে গেছে। পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে জানানো মাত্র তারা দ্রুত এসে কাজ শুরু করেছে, কিন্তু এত বড় ক্ষতি সারাতে সময় লাগবে। আপাতত একটি গ্রামে বিকল্প লাইনে বিদ্যুৎ দেওয়া যাবে, বাকি গ্রামগুলোকে অপেক্ষা করতে হবে।”
বোটটির ব্যবস্থাপক আল মামুন বলেন, “বোটটি আজই হাওরে চালু করা হয়েছে। নতুন সারং নেওয়া হলেও সে বিদ্যুতের লাইনের বিষয়টি বুঝতে পারেনি। তবে বোট এখন নিলাদ্রী লেকে চলে গেছে, আমরা এখানেই আছি।”
তাহিরপুর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সহকারী ম্যানেজার আলাউল হক সরকার বলেন, “হাউসবোটের ধাক্কায় ১১ হাজার ভোল্টের প্রধান লাইন ছিঁড়ে গেছে। আমাদের টিম কাজ করছে, তবে ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপক হওয়ায় সব গ্রামে বিদ্যুৎ ফেরাতে সময় লাগবে।”
এ ঘটনা হাওরের পরিবেশ ও পর্যটন ব্যবস্থাপনায় নজিরবিহীন অব্যবস্থাপনার দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলেছেন, এমন বিশাল বোট কীভাবে পূর্ব অনুমতি ও নিরাপত্তা ছাড়া চলাচল করতে পারে? প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবেই আজ পাঁচটি গ্রাম অন্ধকারে।