সুনামগঞ্জ পিটিআইয়ের সামনে সড়ক দুর্ঘটনা
শিক্ষক রাজিব চৌধুরী’র মৃত্যু, শোকে কাতর স্বজন ও প্রশিক্ষণার্থীরা

- আপডেট সময় : ১২:২৭:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪ ৯১ বার পড়া হয়েছে
ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সার ধাক্কায় গুরুতর আহত সুনামগঞ্জ পিটিআইয়ের প্রশিক্ষণার্থী রাজিব চৌধুরী (৩৪) মারা গেছেন।
শুক্রবার রাত দুইটায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এর আগে বুধবার রাত সাড়ে আটটায় সুনামগঞ্জ পিটিআইয়ের সামনের সড়ক পারাপারের সময় বেপরোয়া একটি অটোরিক্সা তাকে ধাক্কা দেয়।
শনিবার দুপুরে রাজিবের মরদেহ তার শাল্লার বাড়ি নিয়ামতপুরে পৌঁছালে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা ঘটে। রাজিবের মৃত্যুতে সুনামগঞ্জ পিটিআইয়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। সহকর্মীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
শাল্লার নিয়ামতপুর গ্রামের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য অমল চৌধুরী ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা রিনা তালুকদারের দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে রাজিব চৌধুরী দ্বিতীয়। সুনামগঞ্জ পিটিআইয়ের এই বছরের ডিপিএড প্রশিক্ষণার্থী (বিটিপিটি ব্যাচ-৩’এর প্রশিক্ষণার্থী ছিল) সে। সহজ-সরল ও সামাজিক ছিলেন শিক্ষক রাজিব চৌধুরী। তার মৃত্যুতে সুনামগঞ্জ পিটিআইয়েও শোকের ছায়া নেমে আসে। অন্যান্য প্রশিক্ষণার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানা যোগাযোগ মাধ্যমে প্রয়াত রাজিবের ছবি পোস্ট করে শনিবার সকাল থেকেই নিজেদের শোকানুভুতি প্রকাশ করছেন।
শনিবার দুপুর একটায় রাজিবের মরদেহ তার গ্রাম শাল্লার নিয়ামতপুরে পৌঁছালে শোকে কাতর মা রিনা তালুকদারসহ স্বজনদের আহাজারিতে গ্রামে শোকের পরিবেশ তৈরি হয়।
সুনামগঞ্জ পিটিআইয়ের প্রশিক্ষণার্থী রিংকন চন্দ্র দাস জানান, শনিবার দুপুরে রাজিবের মরদেহ বাড়িতে পৌঁছালে হৃদয় বিদারক পরিবেশ তৈরি হয়। একমাত্র পুত্র সন্তান হারানোর শোক সইতে পারছিলেন না রিনা তালুকদার। বাবা অমল চৌধুরীর একই অবস্থা ছিল। স্বজনদের কান্নায় পুরো গ্রামের মানুষের মধ্যে শোকের পরিস্থিতি তৈরি হয়। শনিবার বিকালেই রাজিবের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় বলে জানান রিংকন।
সুনামগঞ্জ পিটিআইয়ের সুপার দীপংকর মোহন্ত বললেন, ২৫০ জন শিশু শিক্ষার্থী রয়েছে সুনামগঞ্জ পিটিআই ক্যাম্পাসে। ১১৩ জন শিক্ষক প্রশিক্ষণার্থীসহ অন্যান্য স্টাফরাও আছেন। আমরা বার বার দাবি জানিয়ে আসছি। সামনের সড়কে ডিভাইডার প্রদানের জন্য। সংশ্লিষ্টরা আমলে নিচ্ছেন না। তাছাড়া পৌরসভার সড়কবাতিও নেই পিটিআইয়ের সামনের সড়কে। শহরের সড়কে চলা অটোগুলোরও বাতি থাকে না। এই অবস্থায় প্রশিক্ষণার্থী রাজিব চৌধুরী বুধবার সড়ক পার হবার সময় অটোর ধাক্কায় মারাত্মকভাবে আহত হন। তাকে প্রথমে সুনামগঞ্জ, পরে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুইদিন রেখে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। ওখানেই গেল রাত দুইটায় মারা যান রাজিব।
এই ঘটনায় প্রশিক্ষণার্থীরা ক্ষুব্ধ। তারা বলেছেন, রোড ডিভাইডার ও সড়কে বাতি না থাকলে এ ধরণের ঘটনা আরও ঘটবে।