ঢাকা ০৪:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভালো থাকবেন বাবা

সংগৃহিত
  • আপডেট সময় : ০৯:৪৪:২৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ মার্চ ২০২৫
  • / 80
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পাবনা থেকে মেয়েকে নিয়ে এসেছেন রাজশাহীতে, স্বপ্ন পূরণের এক নতুন দিগন্তের পথে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা, কেন্দ্র রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। মেয়ের পরীক্ষা চলছে বিজ্ঞান অনুষদের ড. কুদরাত-এ-খুদা ভবনে। আর ঠিক সেই ভবনের পেছনেই ময়লার পাশে নিঃশব্দে শুয়ে আছেন বাবা।

দূর থেকে দেখে মনে হলো, হয়তো ক্লান্তিতে একটু বিশ্রাম নিচ্ছেন। কাছে গিয়ে কথা বললাম। জানতে চাইলাম, কোনো সমস্যা হয়েছে কি না। ক্লান্ত, অবসন্ন কণ্ঠে বললেন—”হার্টের একটু সমস্যা আছে, শরীরটা খারাপ লাগছিল, তাই শুয়ে পড়েছি। তবে এখন ভালো লাগছে।”

পেশায় তিনি একজন মাইক্রোবাস চালক, মাসে পাঁচ হাজার টাকা বেতন, তার সঙ্গে ভাড়ার ওপর ২০% কমিশন। সংসার চলে টানাটানির মধ্যে, কিন্তু তার স্বপ্নের পরিধি বিশাল।

দুই ছেলে, এক মেয়ে। এই মেয়েটিই আজ ভর্তি পরীক্ষায় বসেছে, বড় হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে। মেজো ছেলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে, ছোট ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে। সীমিত আয়ের সংসার, কিন্তু সন্তানদের ভবিষ্যৎ যেন কোনো বাধায় না থামে এটাই একমাত্র লক্ষ্য এই বাবার।

নিজে শুয়ে আছেন ধুলোমাখা পথের এক কোণে, কিন্তু বুকের ভেতর লালন করছেন বিশাল এক স্বপ্ন। সন্তানদের জন্য নিজের সবটুকু নিঃশেষ করতে রাজি, কেবল তারা যেন এগিয়ে যেতে পারে।

এই ছবিটা শুধু একজন বাবার নয়, হাজারো বাবার গল্প। যারা নিজেরা নীরবে ত্যাগ স্বীকার করেন, যাতে তাদের সন্তানেরা একদিন উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আলোয় আলোকিত হতে পারে।আমরা বাবাদের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ।

ভালো থাকবেন বাবা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস : আমার সুনামগঞ্জ | Amar Sunamganj

ভালো থাকবেন বাবা

আপডেট সময় : ০৯:৪৪:২৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ মার্চ ২০২৫

পাবনা থেকে মেয়েকে নিয়ে এসেছেন রাজশাহীতে, স্বপ্ন পূরণের এক নতুন দিগন্তের পথে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা, কেন্দ্র রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। মেয়ের পরীক্ষা চলছে বিজ্ঞান অনুষদের ড. কুদরাত-এ-খুদা ভবনে। আর ঠিক সেই ভবনের পেছনেই ময়লার পাশে নিঃশব্দে শুয়ে আছেন বাবা।

দূর থেকে দেখে মনে হলো, হয়তো ক্লান্তিতে একটু বিশ্রাম নিচ্ছেন। কাছে গিয়ে কথা বললাম। জানতে চাইলাম, কোনো সমস্যা হয়েছে কি না। ক্লান্ত, অবসন্ন কণ্ঠে বললেন—”হার্টের একটু সমস্যা আছে, শরীরটা খারাপ লাগছিল, তাই শুয়ে পড়েছি। তবে এখন ভালো লাগছে।”

পেশায় তিনি একজন মাইক্রোবাস চালক, মাসে পাঁচ হাজার টাকা বেতন, তার সঙ্গে ভাড়ার ওপর ২০% কমিশন। সংসার চলে টানাটানির মধ্যে, কিন্তু তার স্বপ্নের পরিধি বিশাল।

দুই ছেলে, এক মেয়ে। এই মেয়েটিই আজ ভর্তি পরীক্ষায় বসেছে, বড় হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে। মেজো ছেলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে, ছোট ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে। সীমিত আয়ের সংসার, কিন্তু সন্তানদের ভবিষ্যৎ যেন কোনো বাধায় না থামে এটাই একমাত্র লক্ষ্য এই বাবার।

নিজে শুয়ে আছেন ধুলোমাখা পথের এক কোণে, কিন্তু বুকের ভেতর লালন করছেন বিশাল এক স্বপ্ন। সন্তানদের জন্য নিজের সবটুকু নিঃশেষ করতে রাজি, কেবল তারা যেন এগিয়ে যেতে পারে।

এই ছবিটা শুধু একজন বাবার নয়, হাজারো বাবার গল্প। যারা নিজেরা নীরবে ত্যাগ স্বীকার করেন, যাতে তাদের সন্তানেরা একদিন উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আলোয় আলোকিত হতে পারে।আমরা বাবাদের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ।

ভালো থাকবেন বাবা।