৩ উপদেষ্টার সংবাদ সম্মেলন
৯০ দিনে হবে ধর্ষণের বিচার, তদন্ত ১৫ দিনে

- আপডেট সময় : ০৬:১৮:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫ ২০ বার পড়া হয়েছে
ধর্ষণের আইন সংশোধনসহ বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। নতুন আইনে ৯০ দিনে হবে ধর্ষণের বিচার ও তদন্ত হবে ১৫ দিনে।
রোববার সচিবালয়ে তিন উপদেষ্টা জানান, প্রস্তাবিত সংশোধনীতে ৯০ দিনে ধর্ষণের বিচার ও ১৫ দিনের মামলা তদন্তের বিধান যুক্ত করা হবে। ধর্ষক, নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী ও চুরি-ডাকাতির সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে বলেও জানান তারা।
দুপুরে সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন- আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। এর আগে দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে বৈঠকে সব উপদেষ্টা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, ধর্ষণ এবং নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনাগুলোর দ্রুতি বিচার নিষ্পত্তি করতে সরকার বিদ্যমান আইন সংশোধন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত ও ৯০ দিনের মধ্যে বিচার নিষ্পত্তি করার বিধান করা হবে। ধর্ষণের মামলায় আসামির জামিনের সুযোগ থাকছে না বলেও জানান তিনি। বিদ্যমান আইনে ৩০ দিনে তদন্ত ও ১৮০ দিনে বিচার নিষ্পত্তির বিধান রয়েছে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, বিদ্যমান আইনে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বদলি হলে নতুন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ আছে। এতে নতুন কর্মকর্তা এসে আবার শুরু থেকে তদন্ত করার ফলে দেরি হতো। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে একজন কর্মকর্তাই তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দিয়ে যাবেন। এতে তদন্ত দ্রুত হবে। এছাড়াও নির্দিষ্ট সময়ে বিচার নিষ্পত্তি না হলে আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেতেন। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে এ বিধান থাকছে না বলেও জানান তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ধর্ষণকারী, নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী ও চুরি-ডাকাতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। ইতোমধ্যেই মাগুরার শিশু ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ধর্ষক ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী সে যে ধর্মেরই হোক রেহাই পাবে না। তাকে আইনের আওতায় আসতেই হবে। দেশে নারী নির্যাতনের ঘটনা কোনোভাবেই সরকার বরদাস্ত করবে না। নারীরা ঘরে ও ঘরের বাইরে স্বাধীনভাবে কাজ করবেন। তাদের কাজে বাধা দেওয়ার অধিকার কারো নেই।
গত শুক্রবার জাতীয় মসজিদ বাইতুল মোকাররমে হিযবুত তাহরীরের মিছিলের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এটি নিষিদ্ধ সংগঠন। এ ধরনের নিষিদ্ধঘোষিত কোনো সংগঠনকেই কোনো কার্যক্রম চালাতে দেওয়া হবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, গুজব প্রতিরোধে সরকারের বিভিন্ন সংস্থাকে ভূমিকা রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কোথাও কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে তাদের তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তার করতে করতে বলা হয়েছে। অপরাধী যেই হোক তাকে গ্রেপ্তারে একদিনও দেরি করা হবে না।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেছি। সেখানে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়েছে। কেউ মব সৃষ্টি করলে কিংবা থানা বা সরকারি কোনো স্থাপনা ঘেরাও করার চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সর্বাত্মকভাবে কাজ করছে। দেশবাসীর সহযোগিতায় পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। তারপরেও কিছুকিছু গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এ বিষয়েও সরকার সজাগ আছে বলে জানান তিনি।