কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছাত্র ইউনিয়নের বিক্ষোভ সমাবেশ

- আপডেট সময় : ১০:২৪:২৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫ ৪৭ বার পড়া হয়েছে
হত্যা, ধর্ষণ, নিপীড়নের বিচার এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণসহ সাত দফা দাবিতে পূর্বঘোষিত গণমিছিল কর্মসূচি বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির আশঙ্কায় গণমিছিল স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয় এ সংগঠগুলোর নেতারা।
শনিবার বেলা পৌনে ১২টায় টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক বিক্ষোভ সমাবেশে গণমিছিল কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করেন ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা।
এবিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের গণমিছিল ও সমাবেশকে কেন্দ্র করে একটি গোষ্ঠী বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। গোয়েন্দা সংস্থা থেকে আমাদেরকে বারবার সংক্ষেপে শেষ করার জন্য সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়েছে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় পূর্বঘোষিত শহীদ মিনার থেকে টিএসসি গণমিছিল কর্মসূচি স্থগিত করা হলো।
এর আগে গণমিছিলে অংশ নিতে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট (একাংশ), উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ- বিসিএল, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম, বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতি, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি) প্রমুখ রাজনৈতিক,সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন অংশগ্রহণ করেন বলে জানান আয়োজকরা।
বক্তব্য প্রদানকালে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রায়হান উদ্দিন বলেন, সারাদেশে অব্যাহত ধর্ষণ, নারী নিপীড়ন, হত্যাকাণ্ড বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ, আছিয়াসহ সকল হত্যা, ধর্ষণ, নিপীড়নের বিচার এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণের দাবিতে আজ আমরা দাঁড়িয়েছি।
আছিয়ার ধর্মষণের মতো ঘটনা বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত ঘটছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বরগুনায় কিশোরী ধর্ষণ, বিচার চাওয়ায় কিশোরীর বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। সরকার ধর্ষকদের বিচার করতে না পারলেও, ধর্ষণের প্রতিবাদে আন্দোলনকারী উপর খড়গহস্ত হয়েছে। পুলিশ দিয়ে হামলা করে পরবর্তী সময়ে তাদের নামেই মামলা দায়ের করা হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্রমাগত অভ্যুত্থানের চেতনা থেকে বিচ্যুত হচ্ছে। সকল নাগরিকের জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ বিনির্মানে আমরা এ সংগ্রাম অব্যাহত রাখব।
সভাপতির বক্তব্যে ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা বলেন, শুধু গত সাত মাসেরই নই, আমরা আওয়ামী লীগের সময়েরও খুন ধর্ষণ, নিপীড়নের বিচার দাবি করছি। সাগর-রুনি, তনু, মুনিয়া,আফসানা কোনো হত্যাকাণ্ডেরই এখনো বিচার হয়নি। সরকারের কাজ ছিল অভ্যুত্থান্র আহতদের সুচিকিৎসা ব্যবস্থা করা। কিন্তু সরকার নতুন দল নিয়ে ব্যস্ত। তারা এখন পর্যন্ত গণহত্যাকারীদের বিচার করার কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
তিনি বলেন, এসবের বিরুদ্ধে নামলে একটি স্বার্থান্বেষী মহল আমাদেরকে নানাভাবে ট্যাগ দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু আমরা দমে যাব না। দাবি না মানলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব। প্রয়োজন হলে দেশের এবং রাজধানীর প্রত্যেকটা স্থানে আন্দোলন গড়ে তুলব।
এসময় সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ বলেন, দেশে নারীদের মানুষ হিসেবে গন্য করা হয় না। নারীরা কী করবে, কীভাবে চলবে তা পুরুষরা ঠিক করে দেয়। আমাদের নারী নিপীড়নের শিকার হলেও সরকার বিচার করে না। নুসরাত, তনু, মুনিয়া হত্যার বিচার এখনো হয়নি। যে উদ্দেশ্যে নারীরা আন্দোলনে নেমেছে সে উদ্দেশ্য এখনো সাধন হয়নি। এভাবে চলতে থাকলে নারীরা আবারও রাস্তায় নেমে আসবে।
বিক্ষোভ সমাবেশে আছিয়াসহ সকল হত্যা, ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিচার দাবিসহ সাত দফা দাবি পেশ করা হয়। বাকি দাবিগুলো হলো- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অপসারণ করা; জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার করা; মসজিদ, মন্দির, মাজারে হামলাকারী মব সন্ত্রাসীদের বিচার করা; চট্টগ্রাম কোর্ট প্রাঙ্গণে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ এবং যৌথ বাহিনী দ্বারা শ্রমিক হত্যার বিচার করা; সাগর-রুনি, তনু, আফসানা, মুনিয়াসহ পতিত স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ আমলে সংঘটিত সকল হত্যার বিচার করা এবং হিন্দু ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের ঘরবাড়িতে হামলা ও লুটপাটের বিচার করা।
দৈনিক আমার দেশ