ঢাকা ০১:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ছাতকে ইউএনও ওসি’র সাথে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের নেতৃবৃন্দের সৌজন্য সাক্ষাৎ সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে আড়াই কোটি টাকার ওষুধ মেয়াদোত্তীর্ণ জগন্নাথপুর উপজেলা উন্নয়ন সংস্থা ইউকে’র উদ্যোগে সেলাই মেশিন বিতরণ উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি গঠন -সভাপতি তারা মিয়া, সম্পাদক ফজলুল হক ধর্মপাশায় কনে দেখতে গিয়ে নৌকাডুবি, উকিল ও শিশু কন্যার লাশ উদ্ধার দুর্নীতি ও অপশাসনের কারণে দেশ পিছিয়ে আছে — এডভোকেট মুহাম্মদ শামস উদ্দিন সিলেটের পাথর কুয়ারী লুটপাটে জামায়াত জড়িত নয়: প্রমাণের চ্যালেঞ্জ নেতৃবৃন্দের ছাতকে বিদেশি রিভলভার উদ্ধার সিলেটের নতুন জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নিলেন মো. সারোয়ার আলম তাহিরপুরে ডা. মির্জা রিয়াদ হাসানের স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

উন্নয়নের গল্প মুখে, বাস্তবে ধ্বংস:

সড়ক যেন চাষের জমি: আওয়ামী আমলে অবহেলিত লামাকাটা-বাগলী পথ”

এস এম মিজান :
  • আপডেট সময় : ০২:৫৫:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
  • / 514
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সুনামগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের লামাকাটা-বাগলী সড়কটি বর্তমানে ভয়াবহ বেহাল দশায় পতিত।

পাহাড়ি এই জনপদের অন্যতম অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ যাতায়াত করলেও বছরের পর বছর এটি অবহেলার শিকার হয়ে আছে।

বর্ষা মৌসুমে তো বটেই, সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তার কাদা ও পানিতে পরিণত হয় চলাচলের অনুপযোগী। বিশেষ করে লামাকাটা অংশটি এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত যে, সেখানে মোটরসাইকেলসহ কোনো যানবাহন চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ছবিতে দেখা যায়, একাধিক বাইকচালক রাস্তায় কাদায় আটকে পড়ে নিজ হাতে বাইক ঠেলছেন।

এই সড়কটি শুধু লামাকাটা বা বাগলী নয়, বরং এর মাধ্যমে লালঘাট, বাগলী, বড়ছড়া ও আশেপাশের পাহাড়ি গ্রামগুলোর মানুষ তাহিরপুর উপজেলা সদর ও সুনামগঞ্জ শহরে যাতায়াত করে থাকেন।

সড়কটি দিয়ে সীমান্ত শুল্ক স্টেশনগুলোতেও পণ্য পরিবহন হয়। কিন্তু অবাক করা বিষয় হলো, এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটির উন্নয়নে নেই কোনো কার্যকর পরিকল্পনা।

এখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে রাস্তাটি হচ্ছে হবে বলে জনগণকে আশ্বাস দেওয়া হইছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, জেলার সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয় এই এলাকা থেকে কারন এখানে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ শুল্ক স্টেশন রয়েছে। এখান থেকে সরকার রাজস্ব পাচ্ছে কিন্তু বিগত আওয়ামী সরকার মুখে উন্নয়নের কথা বললেও বাস্তবে কোন উন্নয়ন করেনি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এই সড়কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশে একটি সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল সাত বছর আগে। কিন্তু এখনো সেটি সম্পূর্ণ হয়নি। ফলে বর্ষার সময় পুরো সড়ক পানির নিচে চলে যায়, কাদায় আটকে পড়ে যানবাহন, স্কুলগামী শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে রোগী পরিবহনও হয়ে পড়ে দুঃসাধ্য।

এখানকার বাসিন্দা আজিজুর রহমান জানান, তারা বহুবার স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানিয়েও কোনো সাড়া পাননি। ফলে এলাকাবাসীর ভোগান্তি দিন দিন বাড়ছে।

স্থানীয় এক স্কুল শিক্ষক বলেন, “এই রাস্তায় প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া হয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। বর্ষা এলেই মনে হয় আমরা একঘরে হয়ে যাই। জরুরি প্রয়োজনে উপজেলা সদর বা হাসপাতালে যেতে পারি না।”

এই পরিস্থিতিতে উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নসহ তাহিরপুরের সংশ্লিষ্ট পাহাড়ি অঞ্চলের জনগণ প্রশাসনের কাছে দ্রুত রাস্তাটির সংস্কার ও অবশিষ্ট সেতু নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার দাবি জানাচ্ছেন।

শুধু যোগাযোগ সুবিধাই নয়, এই রাস্তাটি যথাযথভাবে নির্মিত হলে সীমান্ত বাণিজ্য, কৃষিপণ্য পরিবহন এবং শিক্ষার্থীদের যাতায়াতেও অভাবনীয় উন্নয়ন ঘটবে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও সরকারের প্রতি স্থানীয় জনগণের জোর দাবি দীর্ঘদিনের এই অবহেলার অবসান ঘটিয়ে রাস্তাটির দ্রুত উন্নয়ন নিশ্চিত করা হোক।

এ ব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী মু জাহিদুল ইসলাম জানান বর্তমানে সড়কটি কাজ চলমান রয়েছে। আগামী বছরের জুনের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা। আশা করি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই কাজটি সম্পন্ন হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস : আমার সুনামগঞ্জ | Amar Sunamganj

উন্নয়নের গল্প মুখে, বাস্তবে ধ্বংস:

সড়ক যেন চাষের জমি: আওয়ামী আমলে অবহেলিত লামাকাটা-বাগলী পথ”

আপডেট সময় : ০২:৫৫:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

সুনামগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের লামাকাটা-বাগলী সড়কটি বর্তমানে ভয়াবহ বেহাল দশায় পতিত।

পাহাড়ি এই জনপদের অন্যতম অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ যাতায়াত করলেও বছরের পর বছর এটি অবহেলার শিকার হয়ে আছে।

বর্ষা মৌসুমে তো বটেই, সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তার কাদা ও পানিতে পরিণত হয় চলাচলের অনুপযোগী। বিশেষ করে লামাকাটা অংশটি এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত যে, সেখানে মোটরসাইকেলসহ কোনো যানবাহন চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ছবিতে দেখা যায়, একাধিক বাইকচালক রাস্তায় কাদায় আটকে পড়ে নিজ হাতে বাইক ঠেলছেন।

এই সড়কটি শুধু লামাকাটা বা বাগলী নয়, বরং এর মাধ্যমে লালঘাট, বাগলী, বড়ছড়া ও আশেপাশের পাহাড়ি গ্রামগুলোর মানুষ তাহিরপুর উপজেলা সদর ও সুনামগঞ্জ শহরে যাতায়াত করে থাকেন।

সড়কটি দিয়ে সীমান্ত শুল্ক স্টেশনগুলোতেও পণ্য পরিবহন হয়। কিন্তু অবাক করা বিষয় হলো, এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটির উন্নয়নে নেই কোনো কার্যকর পরিকল্পনা।

এখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে রাস্তাটি হচ্ছে হবে বলে জনগণকে আশ্বাস দেওয়া হইছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, জেলার সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয় এই এলাকা থেকে কারন এখানে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ শুল্ক স্টেশন রয়েছে। এখান থেকে সরকার রাজস্ব পাচ্ছে কিন্তু বিগত আওয়ামী সরকার মুখে উন্নয়নের কথা বললেও বাস্তবে কোন উন্নয়ন করেনি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এই সড়কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশে একটি সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল সাত বছর আগে। কিন্তু এখনো সেটি সম্পূর্ণ হয়নি। ফলে বর্ষার সময় পুরো সড়ক পানির নিচে চলে যায়, কাদায় আটকে পড়ে যানবাহন, স্কুলগামী শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে রোগী পরিবহনও হয়ে পড়ে দুঃসাধ্য।

এখানকার বাসিন্দা আজিজুর রহমান জানান, তারা বহুবার স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানিয়েও কোনো সাড়া পাননি। ফলে এলাকাবাসীর ভোগান্তি দিন দিন বাড়ছে।

স্থানীয় এক স্কুল শিক্ষক বলেন, “এই রাস্তায় প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া হয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। বর্ষা এলেই মনে হয় আমরা একঘরে হয়ে যাই। জরুরি প্রয়োজনে উপজেলা সদর বা হাসপাতালে যেতে পারি না।”

এই পরিস্থিতিতে উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নসহ তাহিরপুরের সংশ্লিষ্ট পাহাড়ি অঞ্চলের জনগণ প্রশাসনের কাছে দ্রুত রাস্তাটির সংস্কার ও অবশিষ্ট সেতু নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার দাবি জানাচ্ছেন।

শুধু যোগাযোগ সুবিধাই নয়, এই রাস্তাটি যথাযথভাবে নির্মিত হলে সীমান্ত বাণিজ্য, কৃষিপণ্য পরিবহন এবং শিক্ষার্থীদের যাতায়াতেও অভাবনীয় উন্নয়ন ঘটবে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও সরকারের প্রতি স্থানীয় জনগণের জোর দাবি দীর্ঘদিনের এই অবহেলার অবসান ঘটিয়ে রাস্তাটির দ্রুত উন্নয়ন নিশ্চিত করা হোক।

এ ব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী মু জাহিদুল ইসলাম জানান বর্তমানে সড়কটি কাজ চলমান রয়েছে। আগামী বছরের জুনের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা। আশা করি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই কাজটি সম্পন্ন হবে।