যমুনার সন্ধ্যায় সংকটের সমাধান?

- আপডেট সময় : ০২:১৫:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫ ৮০ বার পড়া হয়েছে
রাজনীতির উত্তাপ যখন তপ্ত লোহার মতো, গুজব-গুঞ্জনের কুয়াশায় পথ হারাতে বসেছে জাতি, তখনই আজ (শনিবার, ২৪ মে) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বসছে একটি বহুল প্রতীক্ষিত বৈঠক।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠকে বসছেন বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী নেতারা।
রাজনৈতিক অঙ্গনে তৈরি হয়েছে চরম কৌতূহল ও উচ্চ প্রত্যাশা। কারণ, গত বছরের গণআন্দোলনের ঢেউয়ে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট যাত্রা শুরু করে এই অন্তর্বর্তী সরকার। সেই সরকারই আজকে দাঁড়িয়ে আছে সিদ্ধান্তের সন্ধিক্ষণে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, সন্ধ্যা ৭টায় বৈঠকে বসবেন বিএনপির প্রতিনিধি দল, নেতৃত্ব দেবেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। রাত ৮টায় জামায়াতের পক্ষ থেকে অংশ নেবেন আমির ডা. শফিকুর রহমান।
এই বৈঠককে ঘিরে উঁকি দিচ্ছে একাধিক অনিশ্চয়তা। গত কয়েকদিন ধরে দেশের রাজনীতিতে ছড়িয়ে পড়েছে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের বক্তব্য, প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের গুঞ্জন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা বার্তা ও উচ্চাভিলাষী গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রমূলক তৎপরতা।
জামায়াত ইতিমধ্যেই সর্বদলীয় সংলাপের প্রস্তাব দিয়েছে। দলটির আমির শফিকুর রহমান সাফ জানিয়ে দিয়েছেন—“প্রধান উপদেষ্টা আমাদের প্রতিপক্ষ নন, তিনি অভিভাবক। এমন নির্বাচন চাই, যেখানে জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হবে।” অপরদিকে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ অভিযোগ করেছেন, সরকারপ্রধানের সঙ্গে দেখা করতেই তারা ব্যর্থ হচ্ছেন।
অন্যদিকে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের বক্তব্যে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। তিনি ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছেন। করিডোর ইস্যুতেও তার বক্তব্য আলোচনায় নতুন মাত্রা এনেছে।
আরো জল্পনার জন্ম দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের গুঞ্জন। জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যমুনা ভবনে সাক্ষাতে গেলে ইউনূস বলেন—“আমি তো এভাবে কাজ করতে পারবো না… আন্দোলনের মাধ্যমে তোমরা আমাকে এনেছিলে। এখন যদি আমাকে জিম্মি করা হয়, তাহলে দায়িত্ব পালন অসম্ভব।”
তবে পরে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী তৈয়্যবের এক ফেসবুক পোস্টে জানানো হয়, ড. ইউনূস পদত্যাগ করছেন না। এই আশ্বাসমূলক বার্তাটি দ্রুতই সরিয়ে নেওয়ায় গুজব যেন নতুন করে ডানা মেলেছে।
এই মুহূর্তে গোটা দেশের চোখ যমুনার দিকে। আজ রাতের বৈঠক শুধু রাজনৈতিক টানাপোড়েন নয়, বরং ভবিষ্যতের একটি সুনির্দিষ্ট দিকরেখা তৈরির সম্ভাবনাও বহন করছে। আজ রাতেই আসতে পারে একটি ‘রোডম্যাপ’—নির্বাচন ও সংস্কারের দিকনির্দেশনা, কিংবা শুরু হতে পারে আরেক দফা অনিশ্চয়তার কাহিনি।