ঢাকা ১১:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জন্মদিনেই না ফেরার দেশে টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী খুশি

আব্দুল্লাহ নাঈম:
  • আপডেট সময় : ০৪:৩০:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫
  • / 76
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জন্মদিনে পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করার কথা ছিল আফসানা জাহান খুশির। কিন্তু সেই বিশেষ দিনটি পরিণত হলো এক বেদনাবিধুর বিদায়ে।

বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুরে সুনামগঞ্জ–সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কে বাস ও সিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ হারান শান্তিগঞ্জ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের এই শিক্ষার্থী।

দুর্ঘটনাটি ঘটে দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটের দিকে, বাহাদুরপুর এলাকায়। খুশি ছিলেন সুনামগঞ্জগামী একটি সিএনজিতে, বিপরীত দিক থেকে আসা একটি দ্রুতগামী বাসের সঙ্গে সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

আফসানা জাহান খুশি ছিলেন সুনামগঞ্জ পৌর শহরের আরপিননগর এলাকার বাসিন্দা, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য দেলোয়ার হোসেনের কনিষ্ঠ কন্যা। শান্তিগঞ্জ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের ইয়ার্ন ম্যানুফ্যাকচারিং বিভাগের ছাত্রী ছিলেন তিনি।

পরিবারের সদস্যরা জানান, খুশি ছিলেন পরিবারের সবার আদরের। বড় বোন বিবাহিত হওয়ায় মা-বাবার চোখের মণি ছিল সে। জন্মদিনের আনন্দ বন্ধুদের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে বুধবার সকালে না খেয়েই বেরিয়ে পড়ে ইন্সটিটিউটের উদ্দেশ্যে। অথচ খুশির বাবা সেদিন তাকে বাইরে যেতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু পরিকল্পনা করা ছিল—বান্ধবীদের নিয়ে বিশেষ খাওয়াদাওয়া হবে। সেই উদ্দেশ্যেই যাওয়া, কিন্তু ফেরা হয়নি আর।

দুর্ঘটনার পর খুশির মরদেহ এতটাই বিকৃত হয়ে গিয়েছিল যে, বাবাও প্রথমে চিনে উঠতে পারেননি মেয়েকে। পরে আত্মীয়স্বজনের সহায়তায় শনাক্ত করা হয় মরদেহ।

সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল প্রাঙ্গণে হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখা যায়। খুশির বাবা দেলোয়ার হোসেন কান্নাভেজা কণ্ঠে বলেন,
“আজ তার জন্মদিন আছিল। বান্ধবিরা যাইবার জন্য কইছে, বান্ধবিরে খাওয়াইতো আছিল। এমন খাওয়ানি খাওয়াইলো… আমার মেয়ে আর ফেরত আইলো না।”
তিনি আরও বলেন, “আমার মেয়ের স্বপ্ন আছিল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার অইবার।”

কথা বলতে বলতে কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে আসছিল তার। আশপাশে থাকা মানুষজনও চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস : আমার সুনামগঞ্জ | Amar Sunamganj

জন্মদিনেই না ফেরার দেশে টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী খুশি

আপডেট সময় : ০৪:৩০:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫

জন্মদিনে পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করার কথা ছিল আফসানা জাহান খুশির। কিন্তু সেই বিশেষ দিনটি পরিণত হলো এক বেদনাবিধুর বিদায়ে।

বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুরে সুনামগঞ্জ–সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কে বাস ও সিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ হারান শান্তিগঞ্জ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের এই শিক্ষার্থী।

দুর্ঘটনাটি ঘটে দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটের দিকে, বাহাদুরপুর এলাকায়। খুশি ছিলেন সুনামগঞ্জগামী একটি সিএনজিতে, বিপরীত দিক থেকে আসা একটি দ্রুতগামী বাসের সঙ্গে সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

আফসানা জাহান খুশি ছিলেন সুনামগঞ্জ পৌর শহরের আরপিননগর এলাকার বাসিন্দা, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য দেলোয়ার হোসেনের কনিষ্ঠ কন্যা। শান্তিগঞ্জ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের ইয়ার্ন ম্যানুফ্যাকচারিং বিভাগের ছাত্রী ছিলেন তিনি।

পরিবারের সদস্যরা জানান, খুশি ছিলেন পরিবারের সবার আদরের। বড় বোন বিবাহিত হওয়ায় মা-বাবার চোখের মণি ছিল সে। জন্মদিনের আনন্দ বন্ধুদের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে বুধবার সকালে না খেয়েই বেরিয়ে পড়ে ইন্সটিটিউটের উদ্দেশ্যে। অথচ খুশির বাবা সেদিন তাকে বাইরে যেতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু পরিকল্পনা করা ছিল—বান্ধবীদের নিয়ে বিশেষ খাওয়াদাওয়া হবে। সেই উদ্দেশ্যেই যাওয়া, কিন্তু ফেরা হয়নি আর।

দুর্ঘটনার পর খুশির মরদেহ এতটাই বিকৃত হয়ে গিয়েছিল যে, বাবাও প্রথমে চিনে উঠতে পারেননি মেয়েকে। পরে আত্মীয়স্বজনের সহায়তায় শনাক্ত করা হয় মরদেহ।

সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল প্রাঙ্গণে হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখা যায়। খুশির বাবা দেলোয়ার হোসেন কান্নাভেজা কণ্ঠে বলেন,
“আজ তার জন্মদিন আছিল। বান্ধবিরা যাইবার জন্য কইছে, বান্ধবিরে খাওয়াইতো আছিল। এমন খাওয়ানি খাওয়াইলো… আমার মেয়ে আর ফেরত আইলো না।”
তিনি আরও বলেন, “আমার মেয়ের স্বপ্ন আছিল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার অইবার।”

কথা বলতে বলতে কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে আসছিল তার। আশপাশে থাকা মানুষজনও চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি।