ঈদ সামনে রেখে সুনামগঞ্জের হাটে ব্যাপক প্রস্তুতি

- আপডেট সময় : ১২:৪২:৪৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫
- / 82
সুনামগঞ্জ জেলায় আসন্ন ঈদুল আজহাকে ঘিরে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। জেলার ১২টি উপজেলায় বসেছে মোট ৭০টি হাট, এর মধ্যে ২৮টি স্থায়ী এবং ৪২টি অস্থায়ী। তবে হাটগুলোতে বিক্রেতা থাকলেও, ক্রেতার উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম।
জেলার বৃহৎ পশুর হাট জাউয়া , চিনাকান্দি, বাদাঘাট , শান্তিগঞ্জ ও মহেশখলা বাজারে দেশি-বিদেশি গরুতে জমজমাট দৃশ্য, কিন্তু দাম যাচাই করেই ফিরছেন অধিকাংশ আগত। বিক্রেতারা বলছেন, “গরু তো অনেক এনেছি, কিন্তু বিক্রি তেমন হচ্ছে না। ঈদের এক-দুদিন আগে শেষ মুহূর্তের বাজারে ভরসা করছি।”
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্যমতে, কোরবানির জন্য জেলার পশুর চাহিদা ৪৩ হাজার ৪২৪টি হলেও প্রস্তুত রয়েছে ৫৪ হাজার ৮৫৪টি পশু। ফলে অতিরিক্ত প্রায় ১১ হাজার পশু হাটে উঠেছে। এদের মধ্যে রয়েছে ২৪,৮২০টি ষাঁড়, ৪,৩৫১টি বলদ, ৮,০১৬টি গাভী, ৩৮৭টি মহিষ, ১১,৩৬৩টি ছাগল, ৫,০৫৭টি ভেড়া ও ৮৬০টি অন্যান্য গবাদিপশু।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, “এ বছর জেলার অভ্যন্তরীণ উৎপাদনেই পশুর চাহিদা পূরণ হচ্ছে। বাইরের কোনো জেলার ওপর নির্ভর করতে হয়নি। আমরা প্রতিটি হাটে মেডিকেল টিম দিয়ে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ দ্রুত সেবা নিশ্চিত করছি।”
সুনামগঞ্জে প্রতিটি উপজেলায় স্থাপন করা হয়েছে একটি করে কন্ট্রোল রুম এবং মোট ২৩টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম কাজ করছে মাঠ পর্যায়ে। জগন্নাথপুরে সবচেয়ে বেশি ১২টি অস্থায়ী হাট বসেছে। দোয়ারাবাজারে ৮টি স্থায়ী হাট, ছাতকে ৬টি অস্থায়ী এবং বিশ্বম্ভরপুর ও ধর্মপাশায় রয়েছে ৪টি করে অস্থায়ী হাট।
অন্যদিকে, হাটে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় মাঠে কাজ করছে জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। চাঁদাবাজি রোধে হাটগুলোতে নিয়মিত টহল ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি ও ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতের পাশাপাশি সচেতন নাগরিকদের অংশগ্রহণেও গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে।
শহরের বালুর মাঠের হাটে গিয়ে দেখা যায়, বৈরী আবহাওয়াতেও গরু নিয়ে হাজির হয়েছেন বিক্রেতারা। বিক্রি কম হলেও তারা আশাবাদী, “শেষ সময়ে ক্রেতা ভিড় করলেই ঘুরে দাঁড়াবে হাট।”
সবমিলিয়ে, কোরবানির পশুর জোগানে কোনো ঘাটতি নেই সুনামগঞ্জে। বরং উদ্বৃত্ত পশুতে ভরপুর হাটগুলো এখন অপেক্ষায়—ঈদের শেষ প্রান্তে জমজমাট বেচাকেনার।