সুনামগঞ্জ ১০:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
দুর্যোগ মোকালোয় রেড ক্রিসেন্ট‘র সচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত রেনেসাঁ ইসলামিক সোসাইটির উদ্যোগে ফ্রি ব্লাডগ্রুপ নির্নয় তাহিরপুরে আগুনে পুড়ে ছাই বসতঘর, ১৩ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি  পুরান বারুংকা মডেল মাদরাসায় ফ্রি চক্ষু শিবির অনুষ্ঠিত তাহিরপুর ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি’র হামদ নাত ক্বিরাত প্রতিযোগিতার পুরষ্কার বিতরণ সম্পন্ন সততা ও দক্ষতা ব্যবসার মূল পূঁজি : মোঃ শহিদুল ইসলাম ছাতকে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা আবু বক্কর সিদ্দীক গ্রেফতার দোয়ারাবাজারের ইউএনও নেহের নিগার তনু’র প্রত্যাহারের দাবিতে বিভাগীয় কমিশনারের বরাবর আবেদন কাঠইর ইউনিয়নে জামায়াতের গণসংযোগ শান্তিগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ালেন শিল্পপতি মইনুল ইসলাম

সুনামগঞ্জ পৌরসভা ও সদর উপজেলা জামায়াতের সমাবেশে মোঃ ফখরুল ইসলাম

শেখ হাসিনার নির্দেশেই ২৮ অক্টোবরের নৃশংস হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছিল

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৯:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ১২০ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরী আমীর মোঃ ফখরুল ইসলাম বলেছেন, দেড়যুগ পরে উন্মুক্ত পরিবেশে সুনামগঞ্জে জামায়াতের জনশক্তি সমাবেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরে শেখ হাসিনার নির্দেশে ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকান্ডের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ এদেশে তাদের স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থার সূত্রপাত করেছিল। পর্যায়ক্রমে সারা দেশে জামায়াতসহ বিরোধী দলের সকল কার্যক্রমে অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পতনের মাধ্যমে দেশের মানুষ আবার স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে। পল্টনহত্যাকান্ড, বিডিআর হত্যাকান্ড, শাপলাচত্বর হত্যাকান্ডসহ স্বৈরাচার সরকারের হাতে নিহত সকল শহীদদের আমরা আমরা গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।

তিনি শুক্রবার সকালে সুনামগঞ্জ পৌরসভা ও সদর উপজেলা জামায়াত আয়োজিত ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর সংঘটিত নৃশংস পল্টন হত্যাকান্ড ও ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবে গণহত্যাকারীদের বিচারের দাবীতে সকাল ১০ ঘটিকায় সুনামগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়াজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথি বলেন, ২৮ অক্টোবর জামায়াতের পূর্ব নির্ধারিত শান্তিপূর্ণ সমাবেশে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ রক্তের হুলিখেলায় মেতে উঠেছিল। রক্তের নেশায় উন্মুত্ত সন্ত্রাসীরা সেদিন জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের হায়েনার মতো, জানোয়ারের মতো ঝাপিয়ে পড়েছিল। সাপের মতো পিটিয়ে পিটিয়ে নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করেছিল। দেশ-বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সরাসরি গুলিবৃষ্টি চালিয়েছিল। লাশের উপর দাঁড়িয়ে নৃত্য করেছিল। লাঠি দিয়ে খুচিয়ে খুচিয়ে লাশের মুখ বিকৃত করেছিল। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় যার জ¦লন্ত প্রমাণ রয়েছে। বিশ্ব বিবেক, মানবতা সেদিন বিস্মিত হয়েছিল। সেদিন বাংলাদেশ যে পথ হারা হয়েছিল ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের মাধ্যমে প্রিয় জন্মভুমি সেই পথের দিশা পেয়েছে।

তিনি বলেন, ১৮ বছর এদেশের মানুষ স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারে নাই। স্বাধীনতার চর্চা করতে পারে নাই। ধর্মীয় অধিকার ভোগ করতে পারে নাই। ঘরের ভেতর লুকিয়ে থেকেও নিজের জান ও মালের এতোটুকু নিরাপত্তাবোধ করতে পারে নি। তারা এতো অপরাধ করেছিল যে, ওবায়দুল কাদের বলতেন আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হারালে ২ লক্ষাধিক মানুষ প্রাণ হারাবে। কিন্তু এদেশের শান্তিপ্রিয় মানুষ আওয়ামী লীগের মতো হিং¯্রতার পরিচয় দেয়নি। জামায়াতে ইসলামী একটি শান্তিপ্রিয় সংগঠন। আওয়ামী লীগের সকল অপপ্রচারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা এদেশের মানুষের জানা মালের নিরাপত্তাবিধান ও শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

সুনামগঞ্জ পৌর জামায়াতের আমীর এডভোকেট মোঃ নূরুল আলমের সভাপতিত্বে এবং পৌর ও সদর উপজেলা সেক্রেটারী আব্দুস সাত্তার মোঃ মামুন সুলেমান চৌধুরীর যৌথ পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও সুনামগঞ্জ জেলা আমীর উপাধ্যক্ষ মাওলানা তোফায়েল আহমদ খান, নায়েবে আমীর মুহাম্মদ শামসউদদীন এডভোকেট, অধ্যাপক মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ, সেক্রেটারী মোমতাজুল হাসান আবেদ, জেলা শিবির সভাপতি মনিরুজ্জামান পিয়াস।

প্রধান অতিথি মোঃ ফখরুল ইসলাম বলেন, আমরা বিশ^াস করি যারা গুম-খুন করেছে, দুর্নীতি করেছে। তারা তাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ব করবে। সেই পাপের বিচার হবে। মিথ্যা ও কাল্পনিক নাটক সাজিয়ে, ক্যাঙ্গারু কোর্টের মাধ্যমে, বিদেশ থেকে রায় লিখে এনে আমাদের নিরপরাধ, সৎ দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নেতৃবৃন্দকে হত্যা করেছে। সেই হত্যার মধ্যদিয়ে এদেশ থেকে বিবেকবান মানুষকে নির্মূল করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু এটা তাদের ভুল প্রমাণিত হয়েছে। ফাঁসিতে ঝুলিয়ে, জেলের প্রকোষ্ঠে রেখে ১১ জন শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে হত্যা করেছে। তারা ভেবেছিল এর মাধ্যমে জামায়াতকে শেষ করে দিবে। কিন্তু তারা জানে না, জামায়াত নেতাদেরকে গুম, খুন করা যায় কিন্তু জামায়াত যে আদর্শ লালন করে সেই আদর্শকে খুন করা যায় না।

সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের দায়িত্বশীল এডভোকেট মোঃ রেজাউল করিম, এডভোকেট মোঃ হেলাল উদ্দিন, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বদরুল কাদির শিহাব, জামায়াত নেতা মাওলানা আব্দুল হাকিম, জেলা আইবিডাবিøউএফ-এর সভাপতি মোঃ ফরিদ মিয়া প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

সুনামগঞ্জ পৌরসভা ও সদর উপজেলা জামায়াতের সমাবেশে মোঃ ফখরুল ইসলাম

শেখ হাসিনার নির্দেশেই ২৮ অক্টোবরের নৃশংস হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছিল

আপডেট সময় : ০৯:৫৯:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরী আমীর মোঃ ফখরুল ইসলাম বলেছেন, দেড়যুগ পরে উন্মুক্ত পরিবেশে সুনামগঞ্জে জামায়াতের জনশক্তি সমাবেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরে শেখ হাসিনার নির্দেশে ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকান্ডের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ এদেশে তাদের স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থার সূত্রপাত করেছিল। পর্যায়ক্রমে সারা দেশে জামায়াতসহ বিরোধী দলের সকল কার্যক্রমে অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পতনের মাধ্যমে দেশের মানুষ আবার স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে। পল্টনহত্যাকান্ড, বিডিআর হত্যাকান্ড, শাপলাচত্বর হত্যাকান্ডসহ স্বৈরাচার সরকারের হাতে নিহত সকল শহীদদের আমরা আমরা গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।

তিনি শুক্রবার সকালে সুনামগঞ্জ পৌরসভা ও সদর উপজেলা জামায়াত আয়োজিত ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর সংঘটিত নৃশংস পল্টন হত্যাকান্ড ও ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবে গণহত্যাকারীদের বিচারের দাবীতে সকাল ১০ ঘটিকায় সুনামগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়াজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথি বলেন, ২৮ অক্টোবর জামায়াতের পূর্ব নির্ধারিত শান্তিপূর্ণ সমাবেশে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ রক্তের হুলিখেলায় মেতে উঠেছিল। রক্তের নেশায় উন্মুত্ত সন্ত্রাসীরা সেদিন জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের হায়েনার মতো, জানোয়ারের মতো ঝাপিয়ে পড়েছিল। সাপের মতো পিটিয়ে পিটিয়ে নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করেছিল। দেশ-বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সরাসরি গুলিবৃষ্টি চালিয়েছিল। লাশের উপর দাঁড়িয়ে নৃত্য করেছিল। লাঠি দিয়ে খুচিয়ে খুচিয়ে লাশের মুখ বিকৃত করেছিল। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় যার জ¦লন্ত প্রমাণ রয়েছে। বিশ্ব বিবেক, মানবতা সেদিন বিস্মিত হয়েছিল। সেদিন বাংলাদেশ যে পথ হারা হয়েছিল ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের মাধ্যমে প্রিয় জন্মভুমি সেই পথের দিশা পেয়েছে।

তিনি বলেন, ১৮ বছর এদেশের মানুষ স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারে নাই। স্বাধীনতার চর্চা করতে পারে নাই। ধর্মীয় অধিকার ভোগ করতে পারে নাই। ঘরের ভেতর লুকিয়ে থেকেও নিজের জান ও মালের এতোটুকু নিরাপত্তাবোধ করতে পারে নি। তারা এতো অপরাধ করেছিল যে, ওবায়দুল কাদের বলতেন আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হারালে ২ লক্ষাধিক মানুষ প্রাণ হারাবে। কিন্তু এদেশের শান্তিপ্রিয় মানুষ আওয়ামী লীগের মতো হিং¯্রতার পরিচয় দেয়নি। জামায়াতে ইসলামী একটি শান্তিপ্রিয় সংগঠন। আওয়ামী লীগের সকল অপপ্রচারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা এদেশের মানুষের জানা মালের নিরাপত্তাবিধান ও শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

সুনামগঞ্জ পৌর জামায়াতের আমীর এডভোকেট মোঃ নূরুল আলমের সভাপতিত্বে এবং পৌর ও সদর উপজেলা সেক্রেটারী আব্দুস সাত্তার মোঃ মামুন সুলেমান চৌধুরীর যৌথ পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও সুনামগঞ্জ জেলা আমীর উপাধ্যক্ষ মাওলানা তোফায়েল আহমদ খান, নায়েবে আমীর মুহাম্মদ শামসউদদীন এডভোকেট, অধ্যাপক মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ, সেক্রেটারী মোমতাজুল হাসান আবেদ, জেলা শিবির সভাপতি মনিরুজ্জামান পিয়াস।

প্রধান অতিথি মোঃ ফখরুল ইসলাম বলেন, আমরা বিশ^াস করি যারা গুম-খুন করেছে, দুর্নীতি করেছে। তারা তাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ব করবে। সেই পাপের বিচার হবে। মিথ্যা ও কাল্পনিক নাটক সাজিয়ে, ক্যাঙ্গারু কোর্টের মাধ্যমে, বিদেশ থেকে রায় লিখে এনে আমাদের নিরপরাধ, সৎ দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নেতৃবৃন্দকে হত্যা করেছে। সেই হত্যার মধ্যদিয়ে এদেশ থেকে বিবেকবান মানুষকে নির্মূল করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু এটা তাদের ভুল প্রমাণিত হয়েছে। ফাঁসিতে ঝুলিয়ে, জেলের প্রকোষ্ঠে রেখে ১১ জন শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে হত্যা করেছে। তারা ভেবেছিল এর মাধ্যমে জামায়াতকে শেষ করে দিবে। কিন্তু তারা জানে না, জামায়াত নেতাদেরকে গুম, খুন করা যায় কিন্তু জামায়াত যে আদর্শ লালন করে সেই আদর্শকে খুন করা যায় না।

সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের দায়িত্বশীল এডভোকেট মোঃ রেজাউল করিম, এডভোকেট মোঃ হেলাল উদ্দিন, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বদরুল কাদির শিহাব, জামায়াত নেতা মাওলানা আব্দুল হাকিম, জেলা আইবিডাবিøউএফ-এর সভাপতি মোঃ ফরিদ মিয়া প্রমুখ।