ছাতকে আওয়ামীলীগ নেতা মমিনের যন্ত্রণায় অতীষ্ঠ এলাকাবাসী!

- আপডেট সময় : ০১:৩৪:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯৮ বার পড়া হয়েছে
ছাতক উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ (একাংশের) সাধারণ সম্পাদক বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র হত্যা ও হামলার ঘটনায় একাধিক মামলার আসামি আব্দুল মমিনের বিরুদ্ধে স্থানীয় কৃষকদের জায়গা দখল, ভুয়া রেজিষ্ট্রি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাধে লোহার খাচা নির্মান করে অবৈধভাবে মাছ চাষসহ নানা প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে।
গণ অভ্যুত্থ্যানের মাধ্যমে আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হলেও এখনো কিভাবে আওয়ামীলীগ নেতারা একাধিক মামলার (মামলা নং ১১/১১৮) মোগলাবাজার থানা, ও প্রতারণা মামলা নং ১৩৪/২৩ ছাতক থানায় ছাড়াও শাহপরান থানায় আরেকটি মামলার আসামী হওয়া স্বত্তেও কিভাবে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা সমালোচনা চলছে সর্বত্র।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষতায় থাকাকালে স্থানীয় গোদাবাড়ি গ্রামের জনৈক জালাল আহমদ বজ্রপাতে নিহত হলেও আওয়ামীলীগ নেতা মমিন উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মোশাররফ হোসেন ও যুবদল নেতা রফিক মিয়া, আজিজুল হক, যুবদল নেতা ফাহাদ সহ অনেককেই হত্যা মামলার আসামী করে হয়রানি করে। পরে তারা আদালত কর্তৃক খালাস পান।
এছাড়াও স্থানীয় কৃষকদের জমি দখল, অবৈধ বাধ নির্মানকরে মাছচাষ, ভুয়া রেজিষ্ট্রি করে জোর পূর্বক দখল সহ হুমকি, হামলা, মামলায় মানিপুর, গোদাবাড়ি, দক্ষিণ গোদাবাড়ি ও রাজার গাও সহ স্থানীয় আশেপাশের গ্রামের মানুষ জন অতীষ্ঠ তার এসব কর্মকান্ডে।
এলাকার নিরীহ কৃষকরা জানান, দীর্ঘদিন যাবত স্থানীয় কালভার্টের গোড়ায় মাছ চাষের নামে প্রভাব খাটিয়ে মমিন লোহার নেটপাটা দিয়ে পানি আটকে রেখেছে । স্থানীয় কৃষকেরা প্রতিবাদ করলে নানা প্রকার হুমকি দিচ্ছে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ ক্ষুদ্ধ প্রায় অর্ধশতাধিক কৃষক-কৃষানী।
অভিযোগ উঠেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র হত্যা ও হামলার ঘটনায় একাধিক মামলার আসামি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মমিন ব্যক্তি মালিকানাধীন অসহায় সাধারণ কৃষক ভূমিতে তাদের কৃষি উৎপাদনসহ নানা প্রতিবন্ধকতা প্রায় একযোগ যাবত অবৈধ ভাবে মাছচাষ করে আসছে।
ভুক্তভোগী কৃষকরা স্থানীয় মুরুব্বিসহ প্রশাসনের কাছে বিচার প্রার্থী হলে অসহায় কৃষকদের নানা ভাবে হয়রানি করা হচ্ছে ।
আওয়ামীলীগ নেতা মমিনের দখলে মরতে বসেছে প্রবাহমান খাল। ফলে পরিবেশ বিপর্যয়, জলাবদ্ধতা, কৃষিকাজ ব্যাহত হচ্ছে। প্রবাহমান খালের অস্তিত্ব প্রায় বিলীন। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে।
ভোগান্তির শিকার কৃষকরা জানান, স্থানীয় প্রভাবশালী আব্দুল মমিন কালভার্টে লোহার নেটপাটা দিয়ে পানি চলাচল বন্ধ করে মাছের ঘের তৈরি করেছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েও কোন লাভ হয় না, বরং ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
সম্প্রতি সেনাবাহিনীর ছাতক উপজেলা দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ দায়ের করলে সেনাবাহিনী স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে এই সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব দেন। কিন্তু স্থানীয় চেয়ারম্যান বিষয়টি সমাধান করতে পারেননি।
স্থানী কৃষক আল আমিন জানান, গত আট বছর ধরে কালভার্ট দখল করে রেখেছে। আমরা প্রশাসনের কাছে কালভার্ট দুটির অবমুক্ত করার দাবি জানাই।
স্থানীয় জনগণ জানান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র হত্যা মামলার আসামীরা কিভাবে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়। আওয়ামী সরকারের পতন হলেও তারা মামলার আসামী হওয়া সত্যেও তারা এখনো প্রভাব চালিয়ে যাচ্ছে কিভাবে বলে প্রশ্ন রাখেন তারা। তারা জানান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে একাধিক মামলার আসামি দলিল লেখক আব্দুল মমিন প্রকাশ্যে ছাতক বাজার স। এলাকায় ঘুরে বেড়ায়। প্রকাশ্যে মানুষকে হুমকি, জায়গা দখল সহ অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে কিভাবে প্রশ্ন রাখেন তারা।
ছাতক উপজেলা নির্বাহী অফিসার তরিকুল ইসলাম বলেন, প্রবাহমান খাল অবৈধ দখল আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ব্যাপারে সরেজমিনে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালিয়ে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ছাতকের সমন্বয়ক মাহবুব জোবায়ের বলেন, ফ্যসিবাদের কোন দোসরদের অবৈধ প্রভাব মেনে নেওয়া হবেনা। প্রয়োজনে ছাত্র জনতা ধরে আইনের হাতে সোপর্দ করবে। তিনি প্রশাসনের উদ্দ্যেশ্যে বলেন, হাজার হাজার শহীদের রক্তের উপর দাড়িয়ে কোন ফ্যসিবাদকে প্রশয় দেওয়া ছাত্র জনতা মেনে নিবেনা। অবশ্যই ফ্যসিবাদের দোসর মামলার আসদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে নোয়ারাই ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের (একাংশের) সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মমিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।