সুনামগঞ্জ ০৩:৩২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
জগন্নাথপুরে আওয়ামীলীগ নেতা সাজ্জাদ খান গ্রেফতার সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের যৌক্তিক সমাধানের জন্য শিবিরের স্মারকলিপি সুমেক শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার নিন্দা ও যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান শিবিরের নরসিংপুর সমাজ কল্যাণ সংস্থার ২০২৫ সেশনের কমিটি গঠন অধ্যক্ষ আলী নূরের সহধর্মিণীর মৃত্যু : বিভিন্ন মহলের শোক সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে সুজনের মানববন্ধন মধ্যনগরের বৌলাই নদীতে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার বিশ্বম্ভরপুরে গ্রাম উন্নয়ন ‘খাস কমিটি’র দুর্নীতি, প্রতিবাদে মানববন্ধন তাহিরপুর সীমান্তে পৌনে ৭ লক্ষ টাকার ভারতীয় ফুসকা জব্দ জগন্নাথপুর সাচায়ানী নন্দিরগাও গ্রামে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৮

দুই বছরের ব্যবধানে দুই বোনের আত্মহত্যা, শোকে স্তব্ধ মা

আব্দুল্লাহ নাঈম,সুনামগঞ্জ :
  • আপডেট সময় : ১০:০৪:৪৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ১০৪ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘর এলাকায় একই পরিবারের ওপর নেমে এসেছে ভয়াবহ শোকের ছায়া।

মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে দুই মেয়েকে হারিয়ে নির্বাক হয়ে পড়েছেন মা মুক্তা মোর্শেদা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিজ ঘরে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তাহসিন মেহজাবিন (২১)।

তিনি এইচএসসি পাস করে ডিগ্রিতে ভর্তি হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
মেহজাবিনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে শত শত মানুষ তাদের বাসায় ভিড় করেন। এলাকাবাসী বিস্মিত—কেন এমন মর্মান্তিক পরিণতি বেছে নিলেন তিনি?

তার মামাতো ভাই জোহায়েব নুর হামিম জানান, তিনি কর্মস্থলে ছিলেন। হঠাৎ বাসা থেকে ফোন আসে—মেহজাবিন আত্মহত্যা করেছে। পরিবারের সদস্যরা তাকে দ্রুত নিচে নামালেও, সব শেষ হয়ে যায়।

এর আগে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে সুনামগঞ্জের মল্লিকপুর এলাকায় সেতু থেকে সুরমা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণ হারান মেহজাবিনের ছোট বোন, স্কুলছাত্রী জেসমিন আক্তার তাজিন। দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাজিন বান্ধবীদের সঙ্গে সেতুতে ঘুরতে গিয়ে রেলিংয়ে ওঠেন। এক বান্ধবী তার হাত ধরে রেখেছিল, কিন্তু হঠাৎ হাত ছেড়ে দিলে নদীতে পড়ে যান তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এটি আত্মহত্যা ছিল, তবে পরিবারের দাবি ছিল এটি দুর্ঘটনা।

এভাবে দুই মেয়েকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা মুক্তা মোর্শেদা। কান্নার শক্তিও যেন হারিয়ে ফেলেছেন তিনি।
মেহজাবিন ও তাজিনের বাবা রায়হানুর রহমান রায়ানের সঙ্গে মুক্তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয় ১৯ বছর আগে।

পরবর্তীতে দুজনই নতুন সংসার শুরু করেন। মুক্তা সুনামগঞ্জ কালেক্টরেটে অফিস সহায়ক হিসেবে কাজ করতেন, কিন্তু এক দুর্ঘটনায় পা ভেঙে যাওয়ার পর তিনি শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন।
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ সদর থানার ওসি মো. আবুল কালাম বলেন, “পরিবার থেকে আত্মহত্যার বিষয়টি জানানো হয়েছে। তদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে।”
এখনো কেউ বুঝে উঠতে পারছেন না, মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে এক পরিবারের দুই বোন কেন আত্মহত্যার পথ বেছে নিল? স্তব্ধ পুরো সুনামগঞ্জ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

দুই বছরের ব্যবধানে দুই বোনের আত্মহত্যা, শোকে স্তব্ধ মা

আপডেট সময় : ১০:০৪:৪৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

 

সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘর এলাকায় একই পরিবারের ওপর নেমে এসেছে ভয়াবহ শোকের ছায়া।

মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে দুই মেয়েকে হারিয়ে নির্বাক হয়ে পড়েছেন মা মুক্তা মোর্শেদা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিজ ঘরে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তাহসিন মেহজাবিন (২১)।

তিনি এইচএসসি পাস করে ডিগ্রিতে ভর্তি হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
মেহজাবিনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে শত শত মানুষ তাদের বাসায় ভিড় করেন। এলাকাবাসী বিস্মিত—কেন এমন মর্মান্তিক পরিণতি বেছে নিলেন তিনি?

তার মামাতো ভাই জোহায়েব নুর হামিম জানান, তিনি কর্মস্থলে ছিলেন। হঠাৎ বাসা থেকে ফোন আসে—মেহজাবিন আত্মহত্যা করেছে। পরিবারের সদস্যরা তাকে দ্রুত নিচে নামালেও, সব শেষ হয়ে যায়।

এর আগে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে সুনামগঞ্জের মল্লিকপুর এলাকায় সেতু থেকে সুরমা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণ হারান মেহজাবিনের ছোট বোন, স্কুলছাত্রী জেসমিন আক্তার তাজিন। দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাজিন বান্ধবীদের সঙ্গে সেতুতে ঘুরতে গিয়ে রেলিংয়ে ওঠেন। এক বান্ধবী তার হাত ধরে রেখেছিল, কিন্তু হঠাৎ হাত ছেড়ে দিলে নদীতে পড়ে যান তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এটি আত্মহত্যা ছিল, তবে পরিবারের দাবি ছিল এটি দুর্ঘটনা।

এভাবে দুই মেয়েকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা মুক্তা মোর্শেদা। কান্নার শক্তিও যেন হারিয়ে ফেলেছেন তিনি।
মেহজাবিন ও তাজিনের বাবা রায়হানুর রহমান রায়ানের সঙ্গে মুক্তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয় ১৯ বছর আগে।

পরবর্তীতে দুজনই নতুন সংসার শুরু করেন। মুক্তা সুনামগঞ্জ কালেক্টরেটে অফিস সহায়ক হিসেবে কাজ করতেন, কিন্তু এক দুর্ঘটনায় পা ভেঙে যাওয়ার পর তিনি শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন।
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ সদর থানার ওসি মো. আবুল কালাম বলেন, “পরিবার থেকে আত্মহত্যার বিষয়টি জানানো হয়েছে। তদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে।”
এখনো কেউ বুঝে উঠতে পারছেন না, মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে এক পরিবারের দুই বোন কেন আত্মহত্যার পথ বেছে নিল? স্তব্ধ পুরো সুনামগঞ্জ।