ঢাকা ০৬:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে জামায়াতের সমাবেশে হামলা-গুলি

আমার সুনামগঞ্জ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৬:৪২:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫
  • / 78
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে জামায়াতে ইসলামীর একটি সমাবেশে ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে হামলা হয়েছে। এ সময় এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণও করা হয়। এতে দু’জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার উপজেলার জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় এস এম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে এ ঘটনা ঘটেছে।

জানা গেছে, অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতার নাম কামরুল হাসান রেদোয়ান। তিনি সলিমপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক। তার সঙ্গে জামায়াতের সমাবেশে হামলায় অংশ নেয় আরো ২০-৩০ সন্ত্রাসী। তাদের হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন মোহাম্মদ আলী ও আবদুস সালাম নামে দুই জামায়াত নেতা। তারাসহ গুরুতর আহত পাঁচ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

উপজেলা জামাতের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি কুতুবউদ্দিন শিবলী ও ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, বুধবার এস এম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামায়াত কর্মী শহিদুল ইসলামকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ছাত্রদল নেতা কামরুলের নেতৃত্বে কোপানো হয়। তারা তাকে হত্যার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। সেই ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার স্কুলের মাঠে প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান চলাকালে অতর্কিত হামলা চলে।

এ সময় কামরুল ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা এলোপাতাড়ি গুলি ছোঁড়ে এবং বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মারধর করে। এতে সমাবেশটি পন্ড হয়ে যায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা চট্টগ্রাম উত্তর জেলা জামাতের সাংগঠনিক সম্পাদক ও আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের এমপি প্রার্থী আনোয়ার সিদ্দিক চৌধুরীসহ ৭-৮ জনকে অবরুদ্ধ করে রাখে। পুলিশ ডেকে এনে তাদের উদ্ধার করা হয়।

কয়েকটি সূত্র জানায়, ছাত্রদল নেতা কামরুল এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে মাসদুয়েক আগে ইউনিয়ন তাঁতী দলের সভাপতি মীর আরমান হোসেনকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে মামলা রয়েছে। এ মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলেও তাকে ধরেনি পুলিশ। এ ছাড়া কামরুলের গুরু হলেন ইউনিয়ন যুবদলের সেক্রেটারি রোকন উদ্দিন মেম্বার।

ইউপি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার পরিকল্পনা আছে এই রোকন উদ্দিনের। এ জন্য তিনি তার প্রতিন্দ্বন্দ্বী সন্দেহে স্থানীয় সব জনপ্রিয় নেতাকে লক্ষ্যবস্তু বানান এবং তাদের ঘায়েল করেন। যেভাবেই হোক তাদের দমিয়ে দেন। তিনি ছলিমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মহিউদ্দিনেও প্রতিন্দ্বন্দ্বী মনে করতেন। এ জন্য তাকে মাসছয়েক আগে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। এরপর বিএনপি নেতা মহিউদ্দিন রাজনীতিতে নীরব হয়ে গেছেন।

স্থানীয়রা আরো জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের শোষণামলে সলিমপুর এলাকায় মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি জামায়াত। তবে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালানোর পর ধীরে ধীরে এখানে জনপ্রিয় হতে থাকে এই সংগঠন। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা। তারা যেকোনো মূল্যে জামায়াতের উত্থান ঠেকাতে চায়। আর স্থানীয় স্থানীয় জামায়াত কর্মী শহিদুল বেশ জনপ্রিয় হওয়ায় তাকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেন রোকন উদ্দিন মেম্বার। এজন্য তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে ছাত্রদল নেতা কামরুলের ফোন নম্বরে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার সঙ্গে এবং হামলার ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে যুবদল নেতা রোকন উদ্দিন বলেন, ‘কামরুলের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। এ ছাড়া হামলার সঙ্গেও আমার সম্পৃক্ততা নেই।’

সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফখরুল ইসলাম বলেন, জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় সন্ত্রাসীদের হাতে অবরুদ্ধ জামায়াত নেতাদের পুলিশের মাধ্যমে উদ্ধার করা হয়েছে।

দৈনিক আমার দেশ

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস : আমার সুনামগঞ্জ | Amar Sunamganj

ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে জামায়াতের সমাবেশে হামলা-গুলি

আপডেট সময় : ০৬:৪২:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে জামায়াতে ইসলামীর একটি সমাবেশে ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে হামলা হয়েছে। এ সময় এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণও করা হয়। এতে দু’জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার উপজেলার জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় এস এম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে এ ঘটনা ঘটেছে।

জানা গেছে, অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতার নাম কামরুল হাসান রেদোয়ান। তিনি সলিমপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক। তার সঙ্গে জামায়াতের সমাবেশে হামলায় অংশ নেয় আরো ২০-৩০ সন্ত্রাসী। তাদের হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন মোহাম্মদ আলী ও আবদুস সালাম নামে দুই জামায়াত নেতা। তারাসহ গুরুতর আহত পাঁচ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

উপজেলা জামাতের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি কুতুবউদ্দিন শিবলী ও ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, বুধবার এস এম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামায়াত কর্মী শহিদুল ইসলামকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ছাত্রদল নেতা কামরুলের নেতৃত্বে কোপানো হয়। তারা তাকে হত্যার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। সেই ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার স্কুলের মাঠে প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান চলাকালে অতর্কিত হামলা চলে।

এ সময় কামরুল ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা এলোপাতাড়ি গুলি ছোঁড়ে এবং বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মারধর করে। এতে সমাবেশটি পন্ড হয়ে যায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা চট্টগ্রাম উত্তর জেলা জামাতের সাংগঠনিক সম্পাদক ও আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের এমপি প্রার্থী আনোয়ার সিদ্দিক চৌধুরীসহ ৭-৮ জনকে অবরুদ্ধ করে রাখে। পুলিশ ডেকে এনে তাদের উদ্ধার করা হয়।

কয়েকটি সূত্র জানায়, ছাত্রদল নেতা কামরুল এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে মাসদুয়েক আগে ইউনিয়ন তাঁতী দলের সভাপতি মীর আরমান হোসেনকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে মামলা রয়েছে। এ মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলেও তাকে ধরেনি পুলিশ। এ ছাড়া কামরুলের গুরু হলেন ইউনিয়ন যুবদলের সেক্রেটারি রোকন উদ্দিন মেম্বার।

ইউপি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার পরিকল্পনা আছে এই রোকন উদ্দিনের। এ জন্য তিনি তার প্রতিন্দ্বন্দ্বী সন্দেহে স্থানীয় সব জনপ্রিয় নেতাকে লক্ষ্যবস্তু বানান এবং তাদের ঘায়েল করেন। যেভাবেই হোক তাদের দমিয়ে দেন। তিনি ছলিমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মহিউদ্দিনেও প্রতিন্দ্বন্দ্বী মনে করতেন। এ জন্য তাকে মাসছয়েক আগে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। এরপর বিএনপি নেতা মহিউদ্দিন রাজনীতিতে নীরব হয়ে গেছেন।

স্থানীয়রা আরো জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের শোষণামলে সলিমপুর এলাকায় মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি জামায়াত। তবে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালানোর পর ধীরে ধীরে এখানে জনপ্রিয় হতে থাকে এই সংগঠন। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা। তারা যেকোনো মূল্যে জামায়াতের উত্থান ঠেকাতে চায়। আর স্থানীয় স্থানীয় জামায়াত কর্মী শহিদুল বেশ জনপ্রিয় হওয়ায় তাকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেন রোকন উদ্দিন মেম্বার। এজন্য তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে ছাত্রদল নেতা কামরুলের ফোন নম্বরে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার সঙ্গে এবং হামলার ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে যুবদল নেতা রোকন উদ্দিন বলেন, ‘কামরুলের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। এ ছাড়া হামলার সঙ্গেও আমার সম্পৃক্ততা নেই।’

সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফখরুল ইসলাম বলেন, জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় সন্ত্রাসীদের হাতে অবরুদ্ধ জামায়াত নেতাদের পুলিশের মাধ্যমে উদ্ধার করা হয়েছে।

দৈনিক আমার দেশ