বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সিরিজ জয়

- আপডেট সময় : ০১:৪২:৪৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ মার্চ ২০২২ ২৪০ বার পড়া হয়েছে
আমার সুনামগঞ্জ ডেস্ক:
তাসকিনের ফাইফারের পর তামিমের ঝড়ো ব্যাটিং। স্বাগতিকদের কোনো সুযোগই দিলেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে বিধ্বস্ত করলো ড্যাশিং ওপেনার তামিম। এতে প্রথমবারের মত দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে সিরিজ জিতলো টাইগাররা। ৯ উইকেটের বিশাল জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। এটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের ২০০তম জয়।
দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠে ২০ বছরের চেষ্টার পর চলতি সফরেই প্রথম জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ। প্রথম ওয়ানডেতে ৩১৪ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে ৩৮ রানে জয় পায় তামিম ইকবালের দল। বুধবার শেষ ম্যাচে ‘অঘোষিত ফাইনালে’ স্বাগতিকদের ১৫৪ রানে গুঁড়িয়ে দিয়ে ১৪১ বল হাতে রেখে ৯ উইকেটের জয়ে সিরিজ জয়ের ইতিহাস গড়ে টাইগাররা। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথম হলেও দলটির বিরুদ্ধে টাইগারদের এটি দ্বিতীয় ওয়ানডে সিরিজ জয়।
দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ইতিহাস গড়ার লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করে বাংলাদেশ। শুরু থেকেই রাবাদা, এনগিডিদের দেখেশুনেই খেলতে থাকেন তামিম-লিটন। প্রোটিয়া বোলারদের সামনে আজ বিধ্বংসী রূপ ধারণ করেছেন তামিম। ইনিংসের ১০ম ওভারের চতুর্থ বলে রাবাদাকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলের অর্ধশতক পূর্ণ করেন তামিম ইকবাল। রাবাদার ওই ওভারে চারটি বাউন্ডারি হাঁকান টাইগার অধিনায়ক।
ইনিংসের ১৫তম ওভারের প্রথম বলে এক রান নিয়ে পূর্ণ করেন অর্ধশতক। ক্যারিয়ারে এটি তামিমের ৫২তম ফিফটি। আর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এটি টাইগার অধিনায়কের তৃতীয় ফিফটি। তামিম ইকবালের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ১২৭ রানের রেকর্ড জুটি গড়ে আউট হন লিটন। অর্ধশতক থেকে ২ রান দূরেই থামলেন লিটন। কেশব মহারাজকে ড্রাইভ করতে গিয়েছিলেন, তবে ঠিকঠাক তুলতে পারেননি। শর্ট কাভারে বাভুমার হাতে ধরা পড়েছেন তিনি। ৫৭ বলের ইনিংসে লিটন মেরেছেন আটটি চার। ১২৭ রানে প্রথম উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ।
লিটন ফিরলেও দলকে জয় এনে দিয়েই মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক তামিম ইকবাল এবং সাকিব আল হাসান। ১৪১ বল এবং ৯ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে নোঙর করে টাইগাররা। তামিম ৮৭ আর সাকিব ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন। প্রোটিয়াদের হয়ে একমাত্র উইকেটটি নেন কেশব মহারাজ।
৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন তাসকিন আহমেদ। পুরো সিরিজে ৮ উইকেট নিয়ে ম্যান অব দ্য সিরিজও হন তিনি।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে আগ্রাসী শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্যাট হাতে শুরুটা ভালই করে দুই ওপেনার। তবে বেশিক্ষণ এই জুটি টিকতে দেননি বাংলাদেশি স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। তার বলে ব্যক্তিগত ১২ রানে আউট হন কুইন্টন ডি কক। এরপর কাইল ভেরেইনেকে সাজঘরে ফেরান তাসকিন। আউট হওয়ার পূর্বে ৯ রান করেন প্রোটিয়া উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান।
নিজের দ্বিতীয় উইকেট হিসেবে প্রোটিয়া ওপেনার জানেমান মালানকে আউট করেন তাসকিন। মালান ব্যাট হাতে তুলেন ৩৯ রান। আর সাকিবের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ার আগে ২ রান করেন বাভুমা।
এরপরও স্বাগতিকদের স্বস্তি দেয়নি টাইগাররা। রাসি ফন ডার ডুসেনকে ৪ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরান শরিফুল ইসলাম। তাসকিন তার তৃতীয় উইকেট তুলে নেন প্রিটোরিয়াসকে ফিরিয়ে। ২০ রান করে আউট হন এ অলরাউন্ডার।
সেঞ্চুরিয়নে আজ আগুন ঝরিয়েছেন তাসকিন। স্বাগতিকদের কাঁপিয়ে একে একে তুলে নিয়েছেন প্রোটিয়াদের পাঁচ উইকেট। ১৬ রান করা ডেভিড মিলারকেও আউট করেন তাসকিন। আর ৪ রান করা কাগিসো রাবাদাকে আউট করে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো ইনিংসে ৫ উইকেট নেন এ পেসার। এর আগে ভারতের বিপক্ষে নিজের অভিষেক ম্যাচে পাঁচ উইকেট পেয়েছিলেন তাসকিন।
শেষ দিকে কেশভ মহারাজ ২৮ রান করেন। তবুও ৩৭ ওভারে ১৫৪ রানে অলআউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশের হয়ে তাসকিনের ফাইফার ছাড়াও দুটি উইকেট নেন সাকিব আল হাসান, এছাড়া একটি করে উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম এবং মেহেদি হাসান মিরাজ।
ইতিহাস গড়ার লক্ষ্যে অপরিবর্তিত একাদশ নিয়েই মাঠে নেমেছে টাইগাররা। এ নিয়ে টানা ৬ ম্যাচে একই একাদশ খেলছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকা পেসার ওয়েইন পারনেলের বদলে আজ খেলছেন ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস।
সূত্র : সমকাল